Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা যা করছি সবই পরিকল্পিতভাবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যা করছি সব পরিকল্পিতভাবে করছি। আমাদের সরকার সবসময় গবেষণায় জোর দিচ্ছে। বিষয়ভিত্তিক গবেষণায় আমরা জোর দিয়েছি।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পর করোনার ধাক্কা, এরপর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আমাদের দেশের অগ্রযাত্রা ব্যহত হয়েছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে। করোনার সময় আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।

স্বাধীনতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সরকারপ্রধান বলেন, করোনার সময় আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। রমজানে এক কোটি পরিবারকে কমমূল্যে পণ্য দিচ্ছি। আমরা ভর্তুকি দিয়ে রমজানের পণ্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমরা মানুষের কষ্ট যখন দেখি, তখন তা কীভাবে লাঘব করব সেই কাজ আমরা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত ছিল। সে কারণেই দেশে এত উন্নয়ন হচ্ছে। আর ক্ষমতাকে আমারা জনগণের সেবা করার সুযোগ হিসেবে দেখি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২০০৮ সালে সরকার গঠন করে ২০০৯ সালে যখন পরিকল্পনা করলাম ২০২১ পর্যন্ত। সেই লক্ষ্য আমরা অর্জন করেছি। এখন ২০২১ থেকে ২০৪১ এর পরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও প্রযুক্তি-জ্ঞান সম্পন্ন জনগোষ্ঠী গড়ে তুলে আমরা সবকিছুতে স্মার্ট একটি দেশ গড়ে তুলব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে শুধু হত্যা আর খুন ছিল। মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এমন একটা সময় মানুষের জীবনে এসেছিল। যে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলতেই ভয় পেত। কারণ, এটা বললে তারা সরকারি-বেসরকারি সকল ক্ষেত্রেই অবহেলার শিকার হতো। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অনেক সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। যে নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। পঁচাত্তরের ২৩ নভেম্বর সেই চার জাতীয় নেতাকেও কারাগারে হত্যা করা হয়। হত্যা, খুন এগুলোই ছিল বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে। গণতন্ত্রের পরিবর্তে মার্শাল-ল। দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। মুষ্টিমেয় লোককে সুবিধা দিয়ে ও তাদের ওপর নির্ভর করেই দেশ পরিচালনা করা হয়। জনগণের কোনো অধিকারই ছিল না, এটাই ছিল বাস্তবতা।

ছবি: ফোকাস বাংলা

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছর আমারা দুই বোন দেশে আসতে পারিনি, রিফিউজি হিসেবে থাকতে হয়েছিল। নিজেদের নাম-পরিচয়টাও আমরা দিতে পারতাম না। ছয় বছর পর আমি দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাই। বাংলাদেশের মাঠে-ঘাটে, হাটে আমি বিচরণ করি, মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখি। কারণ বড় সন্তান হিসেবে বাবার পাশে থেকে কি না কীভাবে দেশটাকে গড়তে চাইতেন, সে গল্প অনেক শুনতাম। কাজেই সেই চিন্তা-ভাবনা মাথায় নিয়েই আমি কাজ শুরু করি। এরপর যখন সরকার গঠন করি তখন জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই আমরা কাজ করি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। জাতির পিতা অতি অল্প সময়ের মধ্যে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছিলেন। আর সেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা উত্তরণে সক্ষম হয়েছি যখন ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করি।

সরকার প্রধান বলেন, রমজানে এক কোটি পরিবারকে কমমূল্যে পণ্য দিচ্ছি। আমরা ভর্তুকি দিয়ে রমজানের পণ্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমরা মানুষের কষ্ট যখন দেখি তখন তা কীভাবে লাঘব করব সেই চেষ্টা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করার কথা যখন বলেছি তখন অনেকে বলেছিলেন দেশের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব না। কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করেছি। আমরা বলেছিলাম নিজেদের টাকায় সেতু করব। বঙ্গবন্ধু তার বক্তব্যে বলেছিলেন কেউ দাবাইয়া রাখতে পারবে না। আমরা পদ্মা সেতু করে দেখিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশ পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে নয়জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেন।

১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর সরকার স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়ে আসছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের ৫ লাখ টাকা, আঠারো ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

আমরা যা করছি সবই পরিকল্পিতভাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০১:৫৫:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যা করছি সব পরিকল্পিতভাবে করছি। আমাদের সরকার সবসময় গবেষণায় জোর দিচ্ছে। বিষয়ভিত্তিক গবেষণায় আমরা জোর দিয়েছি।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পর করোনার ধাক্কা, এরপর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আমাদের দেশের অগ্রযাত্রা ব্যহত হয়েছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে। করোনার সময় আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।

স্বাধীনতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সরকারপ্রধান বলেন, করোনার সময় আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। রমজানে এক কোটি পরিবারকে কমমূল্যে পণ্য দিচ্ছি। আমরা ভর্তুকি দিয়ে রমজানের পণ্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমরা মানুষের কষ্ট যখন দেখি, তখন তা কীভাবে লাঘব করব সেই কাজ আমরা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত ছিল। সে কারণেই দেশে এত উন্নয়ন হচ্ছে। আর ক্ষমতাকে আমারা জনগণের সেবা করার সুযোগ হিসেবে দেখি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২০০৮ সালে সরকার গঠন করে ২০০৯ সালে যখন পরিকল্পনা করলাম ২০২১ পর্যন্ত। সেই লক্ষ্য আমরা অর্জন করেছি। এখন ২০২১ থেকে ২০৪১ এর পরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও প্রযুক্তি-জ্ঞান সম্পন্ন জনগোষ্ঠী গড়ে তুলে আমরা সবকিছুতে স্মার্ট একটি দেশ গড়ে তুলব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে শুধু হত্যা আর খুন ছিল। মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এমন একটা সময় মানুষের জীবনে এসেছিল। যে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলতেই ভয় পেত। কারণ, এটা বললে তারা সরকারি-বেসরকারি সকল ক্ষেত্রেই অবহেলার শিকার হতো। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অনেক সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। যে নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। পঁচাত্তরের ২৩ নভেম্বর সেই চার জাতীয় নেতাকেও কারাগারে হত্যা করা হয়। হত্যা, খুন এগুলোই ছিল বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে। গণতন্ত্রের পরিবর্তে মার্শাল-ল। দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। মুষ্টিমেয় লোককে সুবিধা দিয়ে ও তাদের ওপর নির্ভর করেই দেশ পরিচালনা করা হয়। জনগণের কোনো অধিকারই ছিল না, এটাই ছিল বাস্তবতা।

ছবি: ফোকাস বাংলা

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছর আমারা দুই বোন দেশে আসতে পারিনি, রিফিউজি হিসেবে থাকতে হয়েছিল। নিজেদের নাম-পরিচয়টাও আমরা দিতে পারতাম না। ছয় বছর পর আমি দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাই। বাংলাদেশের মাঠে-ঘাটে, হাটে আমি বিচরণ করি, মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখি। কারণ বড় সন্তান হিসেবে বাবার পাশে থেকে কি না কীভাবে দেশটাকে গড়তে চাইতেন, সে গল্প অনেক শুনতাম। কাজেই সেই চিন্তা-ভাবনা মাথায় নিয়েই আমি কাজ শুরু করি। এরপর যখন সরকার গঠন করি তখন জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই আমরা কাজ করি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। জাতির পিতা অতি অল্প সময়ের মধ্যে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছিলেন। আর সেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা উত্তরণে সক্ষম হয়েছি যখন ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করি।

সরকার প্রধান বলেন, রমজানে এক কোটি পরিবারকে কমমূল্যে পণ্য দিচ্ছি। আমরা ভর্তুকি দিয়ে রমজানের পণ্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমরা মানুষের কষ্ট যখন দেখি তখন তা কীভাবে লাঘব করব সেই চেষ্টা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করার কথা যখন বলেছি তখন অনেকে বলেছিলেন দেশের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব না। কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করেছি। আমরা বলেছিলাম নিজেদের টাকায় সেতু করব। বঙ্গবন্ধু তার বক্তব্যে বলেছিলেন কেউ দাবাইয়া রাখতে পারবে না। আমরা পদ্মা সেতু করে দেখিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশ পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে নয়জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেন।

১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর সরকার স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়ে আসছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের ৫ লাখ টাকা, আঠারো ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।