নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামীতে বাজেটের জন্য আর ঋণ নেওয়া লাগবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামীতে এমনভাবে বাজেট প্রণয়ন করব, যাতে কোনো ধরনের ঋণ নেওয়া না লাগে। বাজেট হবে এমন যেন ঋণের প্রয়োজন না হয়, আগামীতে আর ঋণ নেব না।
তিনি বলেন, আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যবসায়ীরা খুশী হবেন। এবারের বাজেট নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আপনারা ঠকবেন না। আমরা ধীরে ধীরে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যেখানে সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ২০৪১ সালের স্বপ্নের সিঁড়িতে আছি। আসন্ন বাজেট হবে জনবান্ধব, এ বাজেটটি হবে জনগণের সুবিধার্থে।
মুস্তফা কামাল বলেন, সারা বিশ্ব একটা খারাপ অবস্থার মধ্যে, তারমধ্যেও আমরা আশা-প্রত্যাশা ধরে রেখেছি। এই বছর সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। এর আগের বছর ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সারা বিশ্বে আজ অর্থনীতির মন্দা অবস্থা বিরাজমান। তার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এ দেশের বেসরকারি খাত। বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১ থেকে ৩৫তম স্থানে এসেছে। এর অংশীদার সবাই। উন্নয়নশীল দেশ ভারত, মালয়েশিয়ার কাতারে আজ আমরাও। সবাইকে নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
বাংলাদেশের অগ্রগতিতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ আজ প্রশংসা করছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, এবারের বাজেটে সবাই খুশী হবে। উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধির প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পন করেছে। বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। সেইসঙ্গে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জাতীয় অর্থনীতি একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ালেও করোনা পরবর্তী বিরূপ পরিবেশ এবং চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতির উন্নয়নের গতিধারাকে এগিয়ে নিতে হচ্ছে। এজন্য দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সহায়ক পরিবেশকে আরও সুদৃঢ় ও জোরদার করা জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী বাজেটকে ঘিরে জনগণের ব্যাপক প্রত্যাশা থাকবে। সামগ্রিক বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে একটি জনমুখী ব্যবসা-বান্ধব বাজেট প্রণীত হবে বলে আমরা আশা করি।
সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেন।
এনবিআর এবং বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।