নিজস্ব প্রতিবেদক :
অন্যান্য খেলার পাশাপাশি দেশীয় খেলাকেও সমান সুযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ ও ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধু ফুটবল বলে নয়, আমাদের দেশীয় অনেক খেলা আছে সেসব খেলাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। এতে আমাদের কোমলমতিদের মেধা বিকাশের সুযোগ হবে। কারণ খেলাধুলার মধ্য দিয়েই আমাদের ছেলে-মেয়েদের আরও মেধা বিকাশের সুযোগ হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যখনই সরকার এসেছি, তখনই চেষ্টা করেছি ছেলে মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি আরও বেশি অনুরাগী করে তুলতে। কেননা খেলাধুলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তির বিকাশ ঘটায়। ডিসিপ্লিন শিখায়, আনুগত্যের শিক্ষা দেয়। সেই সঙ্গে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। এ খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা এই খেলাধুলার মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সারাবিশ্বের কাছে দেশকে পরিচিত করতে পারি। আমি সত্যিই খুব আনন্দিত যে, আমাদের ছেলেরা তো বটেই, মেয়েরাও দেশের বাইরে গিয়ে পারদর্শিতা দেখাতে পারছে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে যখন আমরা এই প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করলাম ছেলেদের এবং মেয়েদের। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে গিয়েও আমাদের ছেলে-মেয়েরা চমৎকার পারদর্শিতা দেখাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা সাফ ওমেন-২০২২ এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ অর্জন করেছে। এটা আমাদের মেয়েরাই এই অর্জন এনে দিয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, সব ধরনের খেলাধুলার বিকাশে সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছে। যাতে করে প্রত্যেকটি উপজেলাতেই খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাই, আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা শরীর চর্চা ওর সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলবে। সবাই শিক্ষা দীক্ষা খেলাধুলা সবদিক থেকে আরও বেশি উন্নত হবে, সারা বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে আমাদের আজকের এই সোনার ছেলে মেয়েরা। সকলের প্রতি আমার অভিনন্দন ও আশীর্বাদ রইল।
খেলাধুলা ও শরীরচর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই সরকারে এসেছি তখনই চেষ্টা করেছি খেলাধুলার প্রতি আমাদের ছেলেমেয়েদের আরও বেশি অনুরাগী করতে। কারণ খেলাধুলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তি দেয়। দেশপ্রেম শেখায়, আনুগত্য শেখায় এবং একই সঙ্গে দেশেপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে।
খেলাধুলা প্রসারে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ছেলেমেয়েরা সারাবছর যেন খেলাধুলা করতে পারে সে জন্য সরকার সব উপজেলায় একটি করে মিনিস্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। এছাড়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম টেপুরগাড়ি বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যকার ফাইনাল খেলার দ্বিতীয়ার্ধ উপভোগ করেন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন পাটগ্রাম টেপুরগাড়ি বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
অপর ম্যাচে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে রংপুরের মিঠাপুকুর তালিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় জামালপুরের মাদারগঞ্জ চরগোলাবারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রধানমন্ত্রী দুই টুর্নামেন্টের বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।