Dhaka রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীন মৈত্রী সেতুর সড়ক বাতি অকেজো, সন্ধ্যা নামলেই ঘটছে অপরাধ

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

মাদারীপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক সড়কের আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মিত সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর সড়কবাতি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ পথ দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহন চালকদের। এদিকে অভিযোগ রয়েছে, সব বাতি অকেজো থাকায় সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারের মধ্যে সেতুর ওপর, এমনকি নিচেও মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। ফলে পথচারীরা অনেক সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মাণ করা হয় এ সেতু। ৬৯৪ মিটারের সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২৯৪ কোটি টাকা। সেতুটি নির্মাণ শেষে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে উদ্বোধন করা হয়। চলাচলের সুবিধার জন্য সেতুটির উপরে শতাধিক খুঁটি বসিয়ে সৌর বাতি লাগানো হয়। এক বছরের মাথায় বাতিগুলো সব নষ্ট হয়ে যায়। এরপর সৌর বাতি বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে বাতিগুলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হয়। এর কয়েক মাস যেতে ফের বাতিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এভাবেই বছরের পর বছর সেতুর বাতিগুলো অকেজো হয়ে আছে।

এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে গত প্রায় এক বছর ধরে সড়ক বিভাগ সেতুটির টোল আদায় করছে। সড়ক দিয়ে ঢাকা, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার জন্য কয়েক হাজার চলাচলকারী যানবাহন থেকে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করার পরও সেতুটির বাতি নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যা হলে সেতুটির ওপর প্রায় দুর্ঘটনাসহ চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া সেতুর ওপরে ও নিচে নেশার আড্ডাও বসে। তাই দ্রুত বাতিগুলো ঠিক করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রাসহ এ পথ দিয়ে যাতায়াতকারীরা।

অটোবাইক চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণের পর সড়কটি শহরবাসীর জন্য দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠে। অনেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এখানে ঘুরতে আসতো। কিন্তু এখানে বাতি না থাকার কারণে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ভয়ে এখন আর আগের মতো কেউ এখানে আসে না।

মাইক্রোবাস চালক ফেরদৌস ব্যাপারী বলেন, সেতুতে সড়ক বাতি না থাকায় অনেক সময় ছোট-খাটো দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই এ সেতুতে সড়ক বাতি জরুরি বলে আমি মনে করি।

পথচারী জালাল উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ি ব্রিজের কাছেই। সন্ধ্যার পর এখান দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। কারণ এখানে প্রায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোর পাঠশালার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান সাইফ বলেন, লাখ লাখ টাকা টোল আদায়ের পরও কেন এখানে বাতি জ্বলবে না, তাই আমি মনে করি এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। বাতিগুলো থাকলে একদিকে যেমন সেতুর সৌন্দর্য বাড়ে অন্যদিকে এখান থেকে চুরি, ছিনতাই ও নেশা কমে যেতো। তাই এখানে দ্রুত বাতিগুলো ঠিক করার দাবি জানাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান বলেন, ‘ঠিকাদার নিয়োগ না থাকায় বাতিগুলো অকেজো হয়ে আছে। তাড়াতাড়ি ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। তখন বাতিগুলো ঠিক করা হবে। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

লক্ষ্মীপুরে কবরস্থানে মিলল ৬টি নতুন আগ্নেয়াস্ত্র

চীন মৈত্রী সেতুর সড়ক বাতি অকেজো, সন্ধ্যা নামলেই ঘটছে অপরাধ

প্রকাশের সময় : ০১:১৪:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

মাদারীপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক সড়কের আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মিত সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর সড়কবাতি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ পথ দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহন চালকদের। এদিকে অভিযোগ রয়েছে, সব বাতি অকেজো থাকায় সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারের মধ্যে সেতুর ওপর, এমনকি নিচেও মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। ফলে পথচারীরা অনেক সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মাণ করা হয় এ সেতু। ৬৯৪ মিটারের সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২৯৪ কোটি টাকা। সেতুটি নির্মাণ শেষে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে উদ্বোধন করা হয়। চলাচলের সুবিধার জন্য সেতুটির উপরে শতাধিক খুঁটি বসিয়ে সৌর বাতি লাগানো হয়। এক বছরের মাথায় বাতিগুলো সব নষ্ট হয়ে যায়। এরপর সৌর বাতি বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে বাতিগুলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হয়। এর কয়েক মাস যেতে ফের বাতিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এভাবেই বছরের পর বছর সেতুর বাতিগুলো অকেজো হয়ে আছে।

এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে গত প্রায় এক বছর ধরে সড়ক বিভাগ সেতুটির টোল আদায় করছে। সড়ক দিয়ে ঢাকা, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার জন্য কয়েক হাজার চলাচলকারী যানবাহন থেকে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করার পরও সেতুটির বাতি নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যা হলে সেতুটির ওপর প্রায় দুর্ঘটনাসহ চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া সেতুর ওপরে ও নিচে নেশার আড্ডাও বসে। তাই দ্রুত বাতিগুলো ঠিক করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রাসহ এ পথ দিয়ে যাতায়াতকারীরা।

অটোবাইক চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণের পর সড়কটি শহরবাসীর জন্য দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠে। অনেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এখানে ঘুরতে আসতো। কিন্তু এখানে বাতি না থাকার কারণে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ভয়ে এখন আর আগের মতো কেউ এখানে আসে না।

মাইক্রোবাস চালক ফেরদৌস ব্যাপারী বলেন, সেতুতে সড়ক বাতি না থাকায় অনেক সময় ছোট-খাটো দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই এ সেতুতে সড়ক বাতি জরুরি বলে আমি মনে করি।

পথচারী জালাল উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ি ব্রিজের কাছেই। সন্ধ্যার পর এখান দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। কারণ এখানে প্রায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোর পাঠশালার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান সাইফ বলেন, লাখ লাখ টাকা টোল আদায়ের পরও কেন এখানে বাতি জ্বলবে না, তাই আমি মনে করি এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। বাতিগুলো থাকলে একদিকে যেমন সেতুর সৌন্দর্য বাড়ে অন্যদিকে এখান থেকে চুরি, ছিনতাই ও নেশা কমে যেতো। তাই এখানে দ্রুত বাতিগুলো ঠিক করার দাবি জানাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান বলেন, ‘ঠিকাদার নিয়োগ না থাকায় বাতিগুলো অকেজো হয়ে আছে। তাড়াতাড়ি ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। তখন বাতিগুলো ঠিক করা হবে। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।’