নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অনেকেই মব নিয়ে কথা বলেন। আমি আবারও বলব, যেগুলো লেজিটিমেট প্রোটেস্ট, সেগুলোকে প্রোটেস্টই বলা উচিত। আর যেটা আসলেই মব, তাকে মবই বলতে হবে। কিন্তু যদি প্রোটেস্ট হয়, সেটাকে যদি মব বলতে চান, তাহলে তার প্রোটেস্ট করার অধিকারটা কেড়ে নেওয়া হয়। এখন অনেকেই এ ধরনের আলাপগুলো দিচ্ছেন। যেকোনো প্রোটেস্টকেই মব বলে চালিয়ে তাঁর প্রোটেস্ট করার অধিকারটা কেড়ে নিতে চাচ্ছে এ বিষয়টিতে সচেতন থাকতে হবে সবাইকে। যাঁরা এখন এ ধরনের আলাপগুলো তুলছেন, তাঁরা ১৫ বছর ধরে যত মব হয়েছে, তার একটা শব্দও কিন্তু করেননি।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, হাসিনা আমলে এসব প্রতিষ্ঠানে কাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে? দেখা গেছে, কোথাও কাজ পাচ্ছে না এর নাতি, তার আত্মীয়দের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে যোগ্যরা বঞ্চিত হয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের ট্যাক্সের প্রতিষ্ঠানে কাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে, সেটা দেখা উচিত। সে বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারককে প্রধান করে তদন্ত করা উচিত।
সংবাদপত্রের ওয়েজ বোর্ডের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘“নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া” এটার সঙ্গে আমি একমত। যেসব প্রতিষ্ঠান ওয়েজ বোর্ড দেবে, তাদেরকে আমরা সুরক্ষা দেব। টেলিভিশন, অনলাইন এবং সংবাদপত্রের লাইসেন্সটা সস্তা করে ফেলা হয়েছে।
সাংবাদিক ইউনিয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, কোনো ইউনিয়নের লিডার থেকে কোনো পত্রিকার সম্পাদক হওয়া উচিত নয়। যখন সম্পাদকের দায়িত্ব থাকবে না, তখন আবার ইউনিয়নের লিডারের পদে আসবেন। এ বিষয়গুলো ভাববার সময় এসেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ানির্ভর সাংবাদিকতা প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, অনেক বড় সাংবাদিক সোশ্যাল মিডিয়ায় আর ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে খবর প্রচার করছেন। এগুলো একটু রেগুলেটরির আওতায় আনা উচিত। রেস্পন্সিভ জার্নালিজম করতে হবে। মাইলস্টোনের আগুন লাগার ঘটনায় দেখবেন, ফেসবুকে দেওয়া হলো ২০০ লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরদিন কিন্তু এ রকম বিষয়টি পাওয়া যায়নি। এই যে, এ ধরনের তথ্য ছাড়ানো হচ্ছে, হাজার হাজার মানুষ দেখছে। প্রতিদিন ইউটিউবে সস্তা বস্তাপচা কনটেন্ট দেওয়া হয়। পৃথিবীর কোন দেশে এগুলো করা যায় বলুন তো? পাকিস্তান, ভারত কোথাও করা যায় না।
সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিক সুরক্ষা আইনটা সাংবাদিকদের জন্য অবশ্যই ভালো। এটার একটা খসড়া তৈরি হয়েছে। এই আইনে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় অনেক ভালো ভালো বিষয় রাখা হয়েছে।
ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্নালিস্ট কমিউনিটির সদস্য সচিব মো. মিয়া হোসেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, বিএফইউজের সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক একরামুল হক ভূঁইয়া (লোটন একরাম), ঢাকা মেইল ডট কমের নির্বাহী সম্পাদক হারুন জামিল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ।