জাবি প্রতিনিধি :
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফল শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে ঘোষণা হতে পাওে আশা করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভোট গণনার কাজ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ভোট গণনার কাজ প্রায় শেষের দিকে। দুপুর দুইটা থেকে আড়াইটার মধ্যে গণনার কাজ শেষ হবে। এরপর ফল ঘোষণার প্রস্তুতি আমরা নেবো। আশা করছি, সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, যারা বর্জন করেছেন সেখানে নির্বাচন কমিশনের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। ‘কারো ইচ্ছে হলে বর্জন করবেন, কারো ইচ্ছে হলে গ্রহণ করবেন; এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, তিনি বলেন।
নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তারের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো ফর্মাল নথি এখনও আমাদের কাছে আসেনি। তাই ফর্মাল তথ্য নেই।
অধ্যাপক মনিরুজ্জামান আরও বলেন, জাকসুর ভোট গণনায় কোনো লাভ-লোকসানের হিসাব বিবেচনা করা হচ্ছে না। আমরা জাকসুর বিধি অনুযায়ী কাজ করছি।
এর আগে, সকাল ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দুপুর দুইটা মধ্যে প্রকাশ করতে পারব বলে আশা করি। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, উনি হয়তো গণনার কথা বলেছেন।
কমিশনের একজন সদস্যের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। বিভিন্ন মাধ্যমে। তবে আমাদের কাছে কোনো লিখিত পদত্যাগপত্র আসেনি।
ভোট গণনায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতামতের প্রতিফলন ঘটিয়ে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে একটি হলো ম্যানুয়ালি ভোট গণনা করা। এটা তাদের অনেকের দাবি ছিলো। নির্বাচনে প্রায় ৬৫০ জনের মতো প্রার্থী রয়েছে। তাদের সব কিছু দেখে ভোট গণনা করতে হচ্ছে। এ কারণে ভোট গণনায় সময় লাগছে। এছাড়া গতকাল শুক্রবার আমাদের একজন সহকর্মী সিনেটের দরজায় ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়ে হার্ট এটাক করে মারা গেছেন। এ ঘটনা আমাকে মারাত্মকভাবে শোকাহত করেছে। এর প্রভাব ভোট গণনাতেও পড়েছিলো। এ কারণে ভোট গণনা কিছুক্ষণ স্থগিত ছিলো। এরপর আবার গণনা শুরু হয়, যা এখনও চলমান।
ফল কোথায় ঘোষণা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও স্থান সেভাবে ঠিক হয়নি। আমার মনে হয়, সিনেট কক্ষেই ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের সময় ছিল। কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করায় ভোটগ্রহণ কিছুটা পিছিয়ে যায়। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। তবে তিন দিনেও ভোট গণনা শেষ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের।
এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭, যার মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১১৫ এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮। এর মধ্যে প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৭টি হলে ভোট গণনা শেষ হয়েছে, বাকি চারটির গণনা এখনো চলমান। গণনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ভোট গণনা বাকি থাকা হলগুলো হলো- মওলানা ভাসানী হল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল।
এর আগে হল সংসদের ভোট গণনা সম্পন্ন হয়েছে। আজ তৃতীয় দিনের মতো গণনা চলছে। তবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার সুনির্দিষ্ট সময় এখনো অনিশ্চিত। নির্বাচন কমিশন একাধিকবার ভিন্ন ভিন্ন সময়সীমার কথা জানিয়েছে।