নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন বিষয়ে সেনাবাহিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে সেনাবাহিনী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে। মবের বিষয়ে জিরো টলারেন্স। সোর্স থেকে তথ্য পেতে দেরি হয়েছে, এ কারণে কিছু কিছু বিলম্ব হয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর সামনে মব হয়েছে, সেনাবাহিনী যায়নি এমন নজির নেই বলে জানিয়েছেন সেনাসদর।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনার আলোকে সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল বলেন, কমিশন থেকে আমরা অচিরেই নির্বাচনের নির্দেশনা পাব। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করবে। ইতিমধ্যে আমাদের নিজেদের প্রস্তুতি রয়েছে।
ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে-এটা বন্ধ করতে সেনাবাহিনী কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না এবং মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ডাকসুর ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কী ভূমিকা রাখবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এর আগেও আমরা আইএসপিআরের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বলেছি ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবুও কিছু স্বার্থন্বেষী মহল প্রোপাগান্ডা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই প্রোপাগান্ডা করে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কিছু কর্মকর্তা সামাজিক মাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য ছড়াচ্ছেন—এমন অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, তাদের উদ্দেশ্য মানুষ জানে। এসব প্রোপাগান্ডা কেউ বিশ্বাস করে না। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
গত ৫ আগস্ট হারানো অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে কর্নেল শফিকুল বলেন, ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। বাকিগুলোও দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা কেবল সেনাবাহিনীর কাজ নয়। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। কোথাও কোথাও কিছুটা সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। যেমন পুলিশ জানে না, সেনাবাহিনী জানে না—তখন কিছুটা দেরি হয়। তবে সেনাবাহিনী মাঠে নামলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া মব (গণপিটুনি) পরিস্থিতি সম্পর্কে কর্নেল শফিকুল জানান, সোর্স থেকে তথ্য পেতে দেরি হওয়ায় কখনো কখনো ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগে। তবে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে কখনো মব হতে দেওয়া হয়নি। রাজবাড়ীতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের ঘটনায় সেনাবাহিনী দেরিতে পৌঁছায়—এ অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরে সেনাবাহিনী উপস্থিত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানের ঘটনা প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই এই দেশটির জন্ম। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান সব সময়ই রাখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।