নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরা, এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। চুক্তির ফলে সরকারি এবং কূটনৈতিক পাসপোর্ট যারা হোল্ড করছেন তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে যারা পাকিস্তানে অফিসিয়াল বা কূটনৈতিক পাসপোর্ট ধারণ করছে তারাও বাংলাদেশ সফর করতে পারবেন।

প্রেস সচিব বলেন, এটা আমাদের একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস আমরা ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এ চুক্তি হবে পাঁচ বছরের জন্য।

শফিকুল আলম বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক, এনবিআর, সিআইডির দল কাজ করছে। এটা খুবই একটা বিস্তৃত একটা কাজ। তিনি বলেন, এটা আমার মনে হয় কয়েক বছর লেগে যাবে পুরো টাকা ফেরত আনতে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গড়া প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। চলতি বছরের জানুয়ারিতে থেকে এ পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব।

এই অর্থের কতটুকু উদ্ধার করা সম্ভব হবে– এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, বিদেশে ৪০ হাজার কোটির সম্পদের সঙ্গে অনেকগুলো আইনি প্রক্রিয়া আছে। এখানে আইনি অনেক জটিলতা আছে। ফলে অনেকের নাম কিংবা কোথায় তার সম্পদ আছে, আমরা এখানে প্রকাশ করতে পারি না। কিন্তু এদের অনেকেরই সম্পদের কথা ব্রিটিশ পত্রিকায় এসেছে। যেহেতু আমাদের সরকার এখানে একটা অংশ, সরকার টাকাটা কীভাবে উদ্ধার করে— প্রথমে খুঁজে কোথায় কোথায় সম্পদ আছে। দ্বিতীয়ত, সেসব দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন, তারপর ওই সম্পদ ফ্রোজেন করা হয়। কিছু কিছু জায়গায় কিন্তু ফ্রোজেন হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, তারপরও যেহেতু আমাদের এখান থেকে টাকা পাচার করে ওই সম্পদ কেনা হয়েছে, সেটি বিক্রি করে আমাদের এখানে পুরো টাকাটা নিয়ে আসা। এই কাজ এখন আমরা করছি। এটা খুবই সময় সাপেক্ষ বিষয়। এটার জন্য সারা পৃথিবীতেই টিম পাঠাতে হয়, সরেজমিনে গিয়ে তারা দেখে আসেন— কোথায় কোথায় কী আছে। সেখানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যারা আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। এই কাজগুলো গুরুত্বের সঙ্গে করা হচ্ছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে যে দুটি বিভাগ করা হচ্ছে, সেখানে রাজস্ব নীতি বিভাগের প্রধান বা সচিব হিসেবে যেকোনো ক্যাডারের কর্মকর্তা নিয়োগ পাবেন বলে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, এনবিআর ভেঙে গঠিত দুইটি বিভাগে রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব হিসেবে যেকোনো ক্যাডারের কর্মকর্তা নিয়োগযোগ্য হবেন। এক্ষেত্রে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব নিয়োগের প্রক্রিয়া আগের মতোই বহাল থাকবে, বলেন প্রেস সচিব।