নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় পার্টির (আহা) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, দেশের শ্রমবাজার সংকুচিত, অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ যুবক চাকরির বাজারে যুক্ত হচ্ছে। তারা কিন্তু চাকরি পাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা চরম অবনতি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। জেনেতেন ভাবে কোন নির্বাচন করলে আমরা সেখানে অংশ নেবো না।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানে জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি অবশ্যই নির্বাচন চায়, কিন্তু কোনো যেনতেন নির্বাচন চায় না। নির্বাচনের আগে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে দেশের যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, তাতে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আর নির্বাচন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য না হলে কোনোভাবেই গণতন্ত্র ফিরে আসবে না।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, গেল বছরের ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর দেশের রাজনীতিতেও পরিবর্তন এসেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা জাতীয় পার্টিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে প্রায় দেড় হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। তাদের জীবন বৃথা যেতে দেব না। আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। দেশের সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব, প্রতিষ্ঠিত করব গণতন্ত্র। তবে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার আগে নিজের দলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আগে নিজেদের দলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দশম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব এসেছে। এখন থেকে জাপা যৌথ নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালিত হবে।
গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রসঙ্গে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমরা বিতর্কিত ধারা বাদ দিয়ে নতুন গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি।
সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরাও সংস্কারের পক্ষে। কারণ পল্লীবন্ধু এরশাদই এদেশের শ্রেষ্ঠ সংস্কারক। কিন্তু সংস্কার করতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা দরকার। তাছাড়া নির্বাচিত পার্লামেন্ট ছাড়া সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন অসম্ভব।
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমরাও বিচারপতি খায়রুল হকের বিচার চাই। কারণ তিনি ওপেন কোর্টে দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বহাল রাখার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে নিজেই সেই রায় পরিবর্তন করেছেন। এজন্য অবশ্যই তার বিচার হওয়া উচিত। তবে তার মানে এই নয় যে তার নামে হত্যা মামলা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, সরকারকে অবশ্যই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। কোনোভাবেই যেন একপেশে বিচার না হয়। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষ যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নাজমা আকতার, লিয়াকত হোসেন খোকাসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।