আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে আমি বলব- তাদের দেশের গভর্ন্যান্স বা প্রশাসনিক ইস্যুগুলো সামলানোর দায়িত্ব কিন্তু তাদেরই। এ ব্যাপারে আমরা যে ধরনের বক্তব্য দেখতে পাচ্ছি বা যেসব মন্তব্য আসছে, তা থেকে মনে হচ্ছে দায়টা যেন তারা অন্য কোনো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংকটের জন্য ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ’কে দায়ী করে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সামনে যেসব নিজস্ব চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো আপনাদেরই দেখতে হবে। তার বদলে যদি বলেন- ‘‘বাইরের অমুক কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে’’, তাতে কিন্তু কোনো লাভ নেই। এতে সমস্যার কোনো সমাধান হবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট নিশ্চিত করা।’
বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দলই দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাচ্ছে, সে ব্যাপারে মুখপাত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে বারবার একটা কথাই বলে আসছি যে বাংলাদেশকে তাদের দেশের মানুষের রায় ও ম্যান্ডেট কী, সেটা যাচাই করতে হবে।
আর সেটা করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ একটা নির্বাচনের মাধ্যমে-খুব তাড়াতাড়ি।
বাংলাদেশ তাদের ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের জন্য যে মানবিক করিডর দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে, সে ব্যাপারে ভারতের অবস্থান কী সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছিল মুখপাত্রের কাছে।
জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আমি আগেও অনেকবার বলেছি, এই ধরনের ডেভেলপমেন্টগুলোর (যেটাতে নিরাপত্তাগত প্রশ্ন জড়িত থাকে) দিকে সব সময়ই আমাদের সতর্ক নজর থাকে।
একজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে চেয়েছেন এবং পরে সর্বদলীয় বৈঠকও করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারত কি বিচলিত বোধ করছে?
জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আমরা দুই দেশের সম্পর্কটা যেভাবে দেখি সেটা আমি আগেও অনেকবার বলেছি। আমরা একটা গঠনমূলক ও ইতিবাচক সম্পর্ক চাই। কিন্তু সেই সম্পর্কটার ভিত্তি হতে হবে এমন যাতে দুই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থ মিলিত হয়।
তবে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত কী ভাবছে, সে ব্যাপারে তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি।