রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, পালিয়ে গিয়েও শেখ হাসিনার অন্তর থেকে এখনও খুনের ভাব যায়নি, অত্যাচারী ভাব যায়নি, তার মধ্যে এখনও কোন অনুশোচনাও হয়নি। তার মধ্যে এখনো হত্যার মানসিকতা ও প্রতিহিংসা রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) রংপুর আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, হাজার হাজার শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবকের রক্ত নিয়েও এখনো তার রক্তপিপাসু মন শান্ত হয়নি। এখনো তিনি প্রতিহিংসা থেকে হত্যার নির্দেশনা দেন। যা একজন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এই শেখ হাসিনা ক্ষমতাকে চিরকাল নিজের করে রাখার জন্য নির্বাচন ও গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮ সালে রাতের ভোট এবং ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন করেছেন যা ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় ভাইরাল ভিডিওতে শেখ হাসিনার যেসব বক্তব্য শোনা যায় তাতে তার অত্যাচারী মনোভাবই প্রকাশ পায়। তাদের মধ্যে এখনো ক্ষমতার লোভ কাজ করছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে এক লাখ লোক মারা যাবে কিন্তু ৫ আগস্টের পর দেশে এরকম কিছুই ঘটেনি। অথচ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।
দেশের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতের সঠিক উন্নয়ন হলে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে দেশের মানুষ ভারতে চিকিৎসা নিতে যেতো না। একই বই, একই পদ্ধতি, বিশ্বের চিকিৎসকরা একই হওয়ার কথা। তারপরও দেশের মানুষের মাইন্ড সেটাপ বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। এটার পরিবর্তন একমাত্র দেশের চিকিৎসকরা ঘটাতে পারেন।
রিজভী বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার উদ্দেশ্য ছিল মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভারের টাকা আত্মসাৎ করা। মালয়েশিয়া, কানাডা, দুবাই ও ইউরোপের দেশে আপনাদের সন্তানেরা কিয়ামত পর্যন্ত যাতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে পারে এজন্য টাকা পাচার করেছেন। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন ধ্বংস ও গণতন্ত্রের প্রত্যেকটি রাস্তা বন্ধ করেছেন। নির্বাচন ও ভোটকে পদদলিত করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছেন।
ভারতের কাছ থেকে বন্ধুসুলভ আচরণ পাওয়া যায় না অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকরা কোনো অংশে কম নয় কিন্তু মাইন্ড সেটের কারণে রোগীদের একটি বিরাট অংশ ভারতে চলে যেত। আমরা ডলার খরচ করে আমাদের চিকিৎসা করালেও তারা কখনোই আমাদের বন্ধুর চোখে দেখত না। একটি বন্ধু দেশের মানুষের প্রতি যে বন্ধুসুলভ আচরণ তাদের কাছ থেকে সে আচরণ পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার যতটুকু অবকাঠামো আছে সেটিকে উন্নত এবং জবাবদিহিতার মধ্যে আনা গেলে বাংলাদেশ থেকে কোনো রোগী ভারতে যেত না।
এসময় তিনি ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বিষয়টি উল্লেখ করে তার সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
ড্যাব রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহামুদুল হক সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, রংপুর জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. খালেকুজ্জামান বাদল, সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. দেলওয়ার হোসেন সরকার, ড্যাব রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি ডা. আকমল হাবিব চৌধুরী, ড্যাব রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব শামসুজ্জামান সরকার, মহানগর ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. নিখিলেন্দ্র শংকর গুহ রায়, সদস্যসচিব ডা. শরিফুল ইসলাম ননতু, রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শরিফুল ইসলাম মন্ডল প্রমুখ।