Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে আটক ৪

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা ও তাঁর গাড়িচালককে বাসা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

তাঁরা হলেন- নাজমুল আবেদীন, নইমুল আমিন, আরাফাত হোসেন ও রিসতি বিন ইউসুফ। তাঁদের সবার বয়স ২২ থেকে ২৩-এর মধ্যে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে পুলিশ।

ঘটনার শিকার আবেদীন আল মামুন চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) তৈরি পোশাক কারখানা প্যাসিফিক জিনসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক। তাঁর গাড়িচালকের নাম মো. জুয়েল।

নগর পুলিশের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাতে নগরের আকবর শাহ থানার প্রভাতী স্কুলের বিপরীতে অবস্থিত বাসা থেকে আবেদীন আল মামুন ও তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িচালক মো. জুয়েলকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবেদীন আল মামুনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ নগদে আদায় করা হয়, বাকি ১৫ লাখ টাকার চেক লিখে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে নগর পুলিশ পুরো শহরে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে ফয়’স লেক চক্ষু হাসপাতালের সামনে আবেদীন আল মামুন ও তাঁর গাড়িচালককে রেখে চলে যান অপহরণকারীরা। এর আগে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, পাহাড়তলী কর্নেল হাট ও আকবর শাহ এলাকায় অপহৃতদের ঘোরানো হয়।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে বলেন, বাসায় ঢুকে আবেদীন আল মামুনকে তাঁর গাড়িচালকসহ অপহরণ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ অপহৃত দুজনকে চক্ষু হাসপাতালের সামনের রাস্তা থেকে উদ্ধার করেছে। পরে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়। তাঁরা কেউ শিক্ষার্থী, আর কেউ পড়ালেখা শেষ করেছেন। আটক ব্যক্তিরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দাবি করেছেন।

ওসি বলেন, চারজনকে আটকের পর তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া পাঁচ লাখ টাকা নইমুল আমিনের বাসা থেকে উদ্ধার হয়েছে। তাঁর বাসা নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক চারজনের সঙ্গে জড়িত অপি, আলাউদ্দিন, আরাফাত, আসিফসহ আরও কয়েকজনকে আটকে অভিযান চলছে।

জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন দুপুরে বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে কারা জড়িত, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এখন নির্বাহী কমিটি রয়েছে। সমন্বয়ক কোনো পদ আর নেই। অপরাধীরা যে পরিচয়েই অপরাধ করুক না কেন, দেশের আইনে তাঁর বিচার হতে হবে।

আরিফ মঈনুদ্দিন আরও বলেন, চট্টগ্রামে তিনটি কমিটিতে সাত শর মতো সদস্য রয়েছে। আমার জানামতে আটক ব্যক্তিরা কমিটির কোনো পদে নেই। এরপরও বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারবে না : গয়েশ্বর

‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে আটক ৪

প্রকাশের সময় : ০৯:১৫:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা ও তাঁর গাড়িচালককে বাসা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

তাঁরা হলেন- নাজমুল আবেদীন, নইমুল আমিন, আরাফাত হোসেন ও রিসতি বিন ইউসুফ। তাঁদের সবার বয়স ২২ থেকে ২৩-এর মধ্যে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে পুলিশ।

ঘটনার শিকার আবেদীন আল মামুন চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) তৈরি পোশাক কারখানা প্যাসিফিক জিনসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক। তাঁর গাড়িচালকের নাম মো. জুয়েল।

নগর পুলিশের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাতে নগরের আকবর শাহ থানার প্রভাতী স্কুলের বিপরীতে অবস্থিত বাসা থেকে আবেদীন আল মামুন ও তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িচালক মো. জুয়েলকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবেদীন আল মামুনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ নগদে আদায় করা হয়, বাকি ১৫ লাখ টাকার চেক লিখে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে নগর পুলিশ পুরো শহরে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে ফয়’স লেক চক্ষু হাসপাতালের সামনে আবেদীন আল মামুন ও তাঁর গাড়িচালককে রেখে চলে যান অপহরণকারীরা। এর আগে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, পাহাড়তলী কর্নেল হাট ও আকবর শাহ এলাকায় অপহৃতদের ঘোরানো হয়।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে বলেন, বাসায় ঢুকে আবেদীন আল মামুনকে তাঁর গাড়িচালকসহ অপহরণ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ অপহৃত দুজনকে চক্ষু হাসপাতালের সামনের রাস্তা থেকে উদ্ধার করেছে। পরে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়। তাঁরা কেউ শিক্ষার্থী, আর কেউ পড়ালেখা শেষ করেছেন। আটক ব্যক্তিরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দাবি করেছেন।

ওসি বলেন, চারজনকে আটকের পর তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া পাঁচ লাখ টাকা নইমুল আমিনের বাসা থেকে উদ্ধার হয়েছে। তাঁর বাসা নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক চারজনের সঙ্গে জড়িত অপি, আলাউদ্দিন, আরাফাত, আসিফসহ আরও কয়েকজনকে আটকে অভিযান চলছে।

জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন দুপুরে বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে কারা জড়িত, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এখন নির্বাহী কমিটি রয়েছে। সমন্বয়ক কোনো পদ আর নেই। অপরাধীরা যে পরিচয়েই অপরাধ করুক না কেন, দেশের আইনে তাঁর বিচার হতে হবে।

আরিফ মঈনুদ্দিন আরও বলেন, চট্টগ্রামে তিনটি কমিটিতে সাত শর মতো সদস্য রয়েছে। আমার জানামতে আটক ব্যক্তিরা কমিটির কোনো পদে নেই। এরপরও বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।