Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনে টানা তিন বছর জনসংখ্যা কমেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

চীনে টানা তৃতীয় বছরে জনসংখ্যা কমেছে। কারণ দেশটিতে জন্মহারের চেয়ে মৃত্যু বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, আসন্ন বছরগুলোতে এই সংকট আরও প্রকট হতে পারে।

দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ২০২২ সালে জনসংখ্যা হ্রাসের এই ধারা শুরু হয়, যা অব্যাহত ছিল ২০২৩ এবং ’২৪ সালেও।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ পর্যায়ে চীনে জনসংখ্যা ছিল ১৪০ কোটি ৮০ লাখ। এর আগের বছর, ২০২৩ সালের শেষ পর্যায়ে দেশটির মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪১ কোটি। অর্থাৎ যত সংখ্যক মানুষ নিয়ে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালে পা রেখেছিল দেশটি, সেই তুলনায় ’২৪ সালের শেষে জনসংখ্যা কমেছে ২০ লাখ।

এই হ্রাসের হার অবশ্য ২০২২ সালের তুলনায় কম। ২০২২ সালের গোটা বছরে চীনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল প্রায় ৪০ লাখ।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৮০ সালে ‘এক শিশুনীতি’ প্রণয়ন করেছিল চীনে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার। তবে ২০০০ সালের পর থেকে দেশটিতে জন্মহার কমতে থাকায় ২০১৬ সালে এ নীতি বাতিল করে বেইজিং। তারপর ২০২১ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘তিন সন্তান নীতি’।

কিন্তু এ নীতি তেমন ফলপ্রসূ হয়নি, বরং নিম্ন জন্মহার অব্যাহত থাকায় ২০২২ সাল থেকে জনসংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে দেশটিতে, পাশাপাশি বাড়তে থাকে বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা। ২০২৩ সালের শেষ দিকে যেখানে চীনে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের সংখ্যা ছিল ২৯ কোটি ৭০ লাখ, সেখানে ২০২৪ সালের শেষ দিকে অর্থাৎ বর্তমানে চীনে এই বয়সীদের মোট সংখ্যা ৩১ কোটি।

পরিসংখ্যান দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে চীনে জন্মহারের যে পরিস্থিতি, তা অব্যাহত থাকলে আগমী ২০৩৫ সালে চীনের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই হবেন ৬০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীরা।

জনসংখ্যার এই ডেমোগ্রাফিক চিত্রের প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে। কর্মক্ষম তরুণ-তরুণীর সংখ্যা কমতে থাকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটির অর্থনৈতিক গতিশীলতা কমে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতির প্রাথমিক সমাধান হিসেবে গত সেপ্টেম্বরে চাকরি ক্ষেত্রে অবসরের বয়সসীমা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে বেইজিং।

চীনের সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে নারী-পুরুষ উভয়কেই দীর্ঘসময় বাড়ির বাইরে কর্মক্ষেত্রে থাকতে হচ্ছে। ফলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিবার গঠনের প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে এবং তকার প্রভাব পড়ছে বার্ষিক জন্মহারে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

চীনে টানা তিন বছর জনসংখ্যা কমেছে

প্রকাশের সময় : ০৬:৪০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

চীনে টানা তৃতীয় বছরে জনসংখ্যা কমেছে। কারণ দেশটিতে জন্মহারের চেয়ে মৃত্যু বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, আসন্ন বছরগুলোতে এই সংকট আরও প্রকট হতে পারে।

দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ২০২২ সালে জনসংখ্যা হ্রাসের এই ধারা শুরু হয়, যা অব্যাহত ছিল ২০২৩ এবং ’২৪ সালেও।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ পর্যায়ে চীনে জনসংখ্যা ছিল ১৪০ কোটি ৮০ লাখ। এর আগের বছর, ২০২৩ সালের শেষ পর্যায়ে দেশটির মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪১ কোটি। অর্থাৎ যত সংখ্যক মানুষ নিয়ে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালে পা রেখেছিল দেশটি, সেই তুলনায় ’২৪ সালের শেষে জনসংখ্যা কমেছে ২০ লাখ।

এই হ্রাসের হার অবশ্য ২০২২ সালের তুলনায় কম। ২০২২ সালের গোটা বছরে চীনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল প্রায় ৪০ লাখ।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৮০ সালে ‘এক শিশুনীতি’ প্রণয়ন করেছিল চীনে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার। তবে ২০০০ সালের পর থেকে দেশটিতে জন্মহার কমতে থাকায় ২০১৬ সালে এ নীতি বাতিল করে বেইজিং। তারপর ২০২১ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘তিন সন্তান নীতি’।

কিন্তু এ নীতি তেমন ফলপ্রসূ হয়নি, বরং নিম্ন জন্মহার অব্যাহত থাকায় ২০২২ সাল থেকে জনসংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে দেশটিতে, পাশাপাশি বাড়তে থাকে বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা। ২০২৩ সালের শেষ দিকে যেখানে চীনে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের সংখ্যা ছিল ২৯ কোটি ৭০ লাখ, সেখানে ২০২৪ সালের শেষ দিকে অর্থাৎ বর্তমানে চীনে এই বয়সীদের মোট সংখ্যা ৩১ কোটি।

পরিসংখ্যান দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে চীনে জন্মহারের যে পরিস্থিতি, তা অব্যাহত থাকলে আগমী ২০৩৫ সালে চীনের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই হবেন ৬০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীরা।

জনসংখ্যার এই ডেমোগ্রাফিক চিত্রের প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে। কর্মক্ষম তরুণ-তরুণীর সংখ্যা কমতে থাকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটির অর্থনৈতিক গতিশীলতা কমে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতির প্রাথমিক সমাধান হিসেবে গত সেপ্টেম্বরে চাকরি ক্ষেত্রে অবসরের বয়সসীমা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে বেইজিং।

চীনের সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে নারী-পুরুষ উভয়কেই দীর্ঘসময় বাড়ির বাইরে কর্মক্ষেত্রে থাকতে হচ্ছে। ফলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিবার গঠনের প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে এবং তকার প্রভাব পড়ছে বার্ষিক জন্মহারে।