Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতকে উড়িয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০১:১৫:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২০১ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া যখন শুরু হবে, সবার দৃষ্টি তখন ভারতীয় দলের দিকে। জাসপ্রিত বুমরাহ কি আছেন? মাঠে নেমে যখন বৃত্ত গড়ে দাঁড়ালেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা, সেখানে চোখে পড়ল না বুমরাহকে। সতীর্থদের উদ্দেশে সেখানে কথা বলতে দেখা গেল ভিরাট কোহলিকে। ম্যাচের ভাগ্যও যেন লেখা হয়ে গেল তখনই। মোহাম্মদ সিরাজ ও প্রাসিধ কৃষ্ণা অবশ্য চেষ্টা করলেন যথেষ্টই। তবে বুমরাহর অভাব পূরণ করার মতো কেউ তো ক্রিকেট দুনিয়াতেই নেই এখন!

বুমরাহবিহীন ভারতের সামনে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ছিল বড় সুযোগ। প্রাসিধের তিন উইকেটে তাদের একটু নাড়িয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত পথ হারাল না প্যাট কামিন্সের দল। সিডনি টেস্টে ৬ উইকেটের জয়ে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি আবার নিজেদের করে নিল তারা। পাশাপাশি নিশ্চিত করে ফেলল টানা দ্বিতীয়বার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলাও।

বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে সবশেষ ২০১৪-১৫ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর ভারতে দুটি ও অস্ট্রেলিয়ায় দুটি, টানা চারটি সিরিজ জিতেছিল ভারত। অবশেষে দেশের মাঠে ট্রফি পুনরুদ্ধার করলেন কামিন্সরা।

সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রোববার ৬ উইকেটে ১৪১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করা ভারত আর যোগ করতে পারে কেবল ১৬ রান। আগের দিনের চারটির সঙ্গে আরও দুটি উইকেট যোগ করেন স্কট বোল্যান্ড। ইনিংসে ছয় উইকেট নিয়ে প্রথমবার ম্যাচে ১০ উইকেটের স্বাদ পান তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬২। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত জিতে যায় তারা খুব বেশি বিপাকে না পড়েই।

অসম বাউন্সের এই উইকেটে বুমরাহ থাকলে কাজটা নিশ্চিতভাবেই আরও অনেক কঠিন হতো অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য। সিরিজজুড়েই তো লড়াইটা মূলত ছিল বুমরাহ বনাম অস্ট্রেলিয়া!

৩-১ ব্যবধান শুনলে যেমন মনে হয়, এর চেয়ে অনেক বেশি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ছিল এই সিরিজে। ভারতের হয়ে সেই লড়াইটি মূলত করেছেন বুমরাহই। ভারতীয় বোলার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় এক সিরিজের রেকর্ড ৩২ উইকেট নিয়েছেন তিনি এবার, সিরিজজুড়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের আতঙ্ক। কিন্তু শেষ ইনিংসটায় বোলিং করতে পারলেন না পিঠের সমস্যার কারণে। ভারত পারল না বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি ধরে রাখতে।

তৃতীয় দিন সকালে সকালে ভারতের লিড বাড়ানোর আশা নিয়ে ক্রিজে নামেন রাভিন্দ্রা জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দার। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান পেসের সামনে টিকতে পারেননি তারা। দিনের তৃতীয় ওভারে প্যাট কামিন্সকে একটি বাউন্ডারি মারার এক বল পরে জাদেজা (১৩) ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পর সুন্দারকেও (১২) বোল্ড করে দেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক।

এরপর লেজে ছোবল দেন বোল্যান্ড। তিন বলের মধ্যেই শেষ দুই উইকেট নিয়ে ভারতের ইনিংস শেষ করে দেন তিনি। মোহাম্মদ সিরাজকে ফিরিয়ে ইনিংসে পাঁচ উইকেট স্পর্শ করেন তিনি টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার। বুমরাহকে বোল্ড করে পূর্ণ করেন ম্যাচে ১০ উইকেট। অথচ জশ হেইজেলউড ফিট থাকলে তিনি খেলার সুযোগই পেতেন না।

এক রানের মধ্যে শেষ তিন উইকেট হারায় ভারত।

ম্যাচে ৭৬ রানে ১০ উইকেট বোল্যান্ডের। সিডনিতে সবশেষ কোনো অস্ট্রেলিয়ান পেসারের ১০ উইকেট পাওয়ার নজিরটি ২৫ বছর আগের। ভারতের বিপক্ষেই ১০ উইকেট নিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা।

অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়ায় তৃতীয় বলেই ওয়াইড থেকে বাই চারসহ পাঁচ রান পায় অস্ট্রেলিয়া। স্যাম কনস্টাস শুরু করেন নিজের মতো করেই। প্রথম ওভারেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারেন বাউন্ডারি। সিরাজের করা প্রথম ওভার থেকে রান আসে ১৩।

সিরাজের পরের ওভারে টানা দুটি বাউন্ডারি মারেন কনস্টাস। অতি ঝুঁকির পথ বেছে নিয়েই উইকেট হারান ১৯ বছর বয়সী ওপেনার। ১৭ বলে ২২ করে তিনি আউট হন প্রাসিধকে স্লগ করে।

প্রাসিধের হাত ধরেই আরও দুটি উইকেট ধরা দেয় দ্রুত। আগের বেশ কবারের মতো আরও একবার গ্লাইড করে গালিতে ধরা পড়েন মার্নাস লাবুশেন। বাড়তি লাফানো দুর্দান্ত ডেলিভারি সামলাতে পারেননি স্টিভেন স্মিথ। গালিতে ডাইভিং ক্যাচ নেন ইয়াসাসভি জয়সওয়াল।

১০ হাজার টেস্ট রান থেকে ৩৮ রান দূরে এই টেস্ট শুরু করেছিলেন স্মিথ। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি আউট হলেন ৪ রানে। ১০ হাজারের সঙ্গে দূরত্ব রয়ে গেল ১ রানের। মাইলফলক পূরণ করতে তাই শ্রীলঙ্কা সিরিজ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

৩ উইকেটে ৭১ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওপেন করতে নেমে তখনও টিকে উসমান খাওয়াজা। লাঞ্চের পর একটু আগ্রাসনের পথ বেছে নেন খাওয়াজা। কাট আর ড্রাইভে দ্রুত আদায় করেন চারটি বাউন্ডারি। অস্ট্রেলিয়া পেরিয়ে যায় একশ। আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টাতেই উইকেট হারান খাওয়াজা। সিরাজের বলে পুল করতে গিয়ে আউট হন তিনি ৪১ রানে। ৩৬ টেস্ট খেলতে নামা সিরাজের এটি শততম উইকেট। টেস্ট উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করা দশম ভারতীয় পেসার তিনি।

ভারতের আশা আবার জেগে ওঠে ওই উইকেটে। কিন্তু ট্রাভিস হেড ও বাউ ওয়েবস্টার আর জমে উঠতে দেননি লড়াই। দাপুটে ব্যাটিংয়ে দুজন দ্রুতই শেষ করে দেন ম্যাচ। বিশেষ করে, অভিষিক্ত ওয়েবস্টার দেখিয়ে দেন তার সামর্থ্যের ঝলক।

বুমরাহ না থাকায় মূলত দুই পেসারের দলে পরিণত হয় ভারত। সেই দুই পেসার সিরাজ ও প্রাসিধ চেষ্টার কমতি রাখেননি। কিন্তু ঘাটতি রয়েই যায়। দুই স্পিনিং অলরাউন্ডার রাভিন্দ্রা জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দারের একজনের বদলে আরেকজন পেসার না খেলানোর খেসারত দিতে হয় তাদের।

৩৮ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন হেড। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা ওয়েবস্টার এবার অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে ৩৯ রান করে। জুটিতে ৫৮ রান আসে ৫৩ বলে। ২৭ ওভারে ১৬২ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। ওভারপ্রতি রান ছিল ৬, অস্ট্রেলিয়ায় চতুর্থ ইনিংসে দেড়শর বেশি রান তাড়ায় যেটি সবচেয়ে দ্রুততম।

আগের দিন টিভি সাক্ষাৎকারে ওয়েবস্টার বলেছিলেন, “আমি চাইব, রান তাড়ায় যেন আমার নামতে না হয়। তবে যদি আমাকে প্রয়োজন পড়ে দলের, তাহলে দলকে জেতাতে পারাটা হবে দারুণ।” যেমন কথা, তেমন কাজ। বাউন্ডারিতে দলকে জিতিয়ে হুঙ্কার ছুড়ে দলকে উদযাপন করেন ৩১ বছর বয়সী অভিষিক্ত অলরাউন্ডার। গ্যালারিতেও বয়ে যায় উল্লাসের জোয়ার। ড্রেসিং রুমে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন কামিন্স ও কার সতীর্থরা।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

ভারতকে উড়িয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশের সময় : ০১:১৫:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া যখন শুরু হবে, সবার দৃষ্টি তখন ভারতীয় দলের দিকে। জাসপ্রিত বুমরাহ কি আছেন? মাঠে নেমে যখন বৃত্ত গড়ে দাঁড়ালেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা, সেখানে চোখে পড়ল না বুমরাহকে। সতীর্থদের উদ্দেশে সেখানে কথা বলতে দেখা গেল ভিরাট কোহলিকে। ম্যাচের ভাগ্যও যেন লেখা হয়ে গেল তখনই। মোহাম্মদ সিরাজ ও প্রাসিধ কৃষ্ণা অবশ্য চেষ্টা করলেন যথেষ্টই। তবে বুমরাহর অভাব পূরণ করার মতো কেউ তো ক্রিকেট দুনিয়াতেই নেই এখন!

বুমরাহবিহীন ভারতের সামনে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ছিল বড় সুযোগ। প্রাসিধের তিন উইকেটে তাদের একটু নাড়িয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত পথ হারাল না প্যাট কামিন্সের দল। সিডনি টেস্টে ৬ উইকেটের জয়ে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি আবার নিজেদের করে নিল তারা। পাশাপাশি নিশ্চিত করে ফেলল টানা দ্বিতীয়বার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলাও।

বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে সবশেষ ২০১৪-১৫ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর ভারতে দুটি ও অস্ট্রেলিয়ায় দুটি, টানা চারটি সিরিজ জিতেছিল ভারত। অবশেষে দেশের মাঠে ট্রফি পুনরুদ্ধার করলেন কামিন্সরা।

সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রোববার ৬ উইকেটে ১৪১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করা ভারত আর যোগ করতে পারে কেবল ১৬ রান। আগের দিনের চারটির সঙ্গে আরও দুটি উইকেট যোগ করেন স্কট বোল্যান্ড। ইনিংসে ছয় উইকেট নিয়ে প্রথমবার ম্যাচে ১০ উইকেটের স্বাদ পান তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬২। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত জিতে যায় তারা খুব বেশি বিপাকে না পড়েই।

অসম বাউন্সের এই উইকেটে বুমরাহ থাকলে কাজটা নিশ্চিতভাবেই আরও অনেক কঠিন হতো অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য। সিরিজজুড়েই তো লড়াইটা মূলত ছিল বুমরাহ বনাম অস্ট্রেলিয়া!

৩-১ ব্যবধান শুনলে যেমন মনে হয়, এর চেয়ে অনেক বেশি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ছিল এই সিরিজে। ভারতের হয়ে সেই লড়াইটি মূলত করেছেন বুমরাহই। ভারতীয় বোলার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় এক সিরিজের রেকর্ড ৩২ উইকেট নিয়েছেন তিনি এবার, সিরিজজুড়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের আতঙ্ক। কিন্তু শেষ ইনিংসটায় বোলিং করতে পারলেন না পিঠের সমস্যার কারণে। ভারত পারল না বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি ধরে রাখতে।

তৃতীয় দিন সকালে সকালে ভারতের লিড বাড়ানোর আশা নিয়ে ক্রিজে নামেন রাভিন্দ্রা জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দার। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান পেসের সামনে টিকতে পারেননি তারা। দিনের তৃতীয় ওভারে প্যাট কামিন্সকে একটি বাউন্ডারি মারার এক বল পরে জাদেজা (১৩) ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পর সুন্দারকেও (১২) বোল্ড করে দেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক।

এরপর লেজে ছোবল দেন বোল্যান্ড। তিন বলের মধ্যেই শেষ দুই উইকেট নিয়ে ভারতের ইনিংস শেষ করে দেন তিনি। মোহাম্মদ সিরাজকে ফিরিয়ে ইনিংসে পাঁচ উইকেট স্পর্শ করেন তিনি টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার। বুমরাহকে বোল্ড করে পূর্ণ করেন ম্যাচে ১০ উইকেট। অথচ জশ হেইজেলউড ফিট থাকলে তিনি খেলার সুযোগই পেতেন না।

এক রানের মধ্যে শেষ তিন উইকেট হারায় ভারত।

ম্যাচে ৭৬ রানে ১০ উইকেট বোল্যান্ডের। সিডনিতে সবশেষ কোনো অস্ট্রেলিয়ান পেসারের ১০ উইকেট পাওয়ার নজিরটি ২৫ বছর আগের। ভারতের বিপক্ষেই ১০ উইকেট নিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা।

অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়ায় তৃতীয় বলেই ওয়াইড থেকে বাই চারসহ পাঁচ রান পায় অস্ট্রেলিয়া। স্যাম কনস্টাস শুরু করেন নিজের মতো করেই। প্রথম ওভারেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারেন বাউন্ডারি। সিরাজের করা প্রথম ওভার থেকে রান আসে ১৩।

সিরাজের পরের ওভারে টানা দুটি বাউন্ডারি মারেন কনস্টাস। অতি ঝুঁকির পথ বেছে নিয়েই উইকেট হারান ১৯ বছর বয়সী ওপেনার। ১৭ বলে ২২ করে তিনি আউট হন প্রাসিধকে স্লগ করে।

প্রাসিধের হাত ধরেই আরও দুটি উইকেট ধরা দেয় দ্রুত। আগের বেশ কবারের মতো আরও একবার গ্লাইড করে গালিতে ধরা পড়েন মার্নাস লাবুশেন। বাড়তি লাফানো দুর্দান্ত ডেলিভারি সামলাতে পারেননি স্টিভেন স্মিথ। গালিতে ডাইভিং ক্যাচ নেন ইয়াসাসভি জয়সওয়াল।

১০ হাজার টেস্ট রান থেকে ৩৮ রান দূরে এই টেস্ট শুরু করেছিলেন স্মিথ। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি আউট হলেন ৪ রানে। ১০ হাজারের সঙ্গে দূরত্ব রয়ে গেল ১ রানের। মাইলফলক পূরণ করতে তাই শ্রীলঙ্কা সিরিজ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

৩ উইকেটে ৭১ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওপেন করতে নেমে তখনও টিকে উসমান খাওয়াজা। লাঞ্চের পর একটু আগ্রাসনের পথ বেছে নেন খাওয়াজা। কাট আর ড্রাইভে দ্রুত আদায় করেন চারটি বাউন্ডারি। অস্ট্রেলিয়া পেরিয়ে যায় একশ। আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টাতেই উইকেট হারান খাওয়াজা। সিরাজের বলে পুল করতে গিয়ে আউট হন তিনি ৪১ রানে। ৩৬ টেস্ট খেলতে নামা সিরাজের এটি শততম উইকেট। টেস্ট উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করা দশম ভারতীয় পেসার তিনি।

ভারতের আশা আবার জেগে ওঠে ওই উইকেটে। কিন্তু ট্রাভিস হেড ও বাউ ওয়েবস্টার আর জমে উঠতে দেননি লড়াই। দাপুটে ব্যাটিংয়ে দুজন দ্রুতই শেষ করে দেন ম্যাচ। বিশেষ করে, অভিষিক্ত ওয়েবস্টার দেখিয়ে দেন তার সামর্থ্যের ঝলক।

বুমরাহ না থাকায় মূলত দুই পেসারের দলে পরিণত হয় ভারত। সেই দুই পেসার সিরাজ ও প্রাসিধ চেষ্টার কমতি রাখেননি। কিন্তু ঘাটতি রয়েই যায়। দুই স্পিনিং অলরাউন্ডার রাভিন্দ্রা জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দারের একজনের বদলে আরেকজন পেসার না খেলানোর খেসারত দিতে হয় তাদের।

৩৮ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন হেড। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা ওয়েবস্টার এবার অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে ৩৯ রান করে। জুটিতে ৫৮ রান আসে ৫৩ বলে। ২৭ ওভারে ১৬২ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। ওভারপ্রতি রান ছিল ৬, অস্ট্রেলিয়ায় চতুর্থ ইনিংসে দেড়শর বেশি রান তাড়ায় যেটি সবচেয়ে দ্রুততম।

আগের দিন টিভি সাক্ষাৎকারে ওয়েবস্টার বলেছিলেন, “আমি চাইব, রান তাড়ায় যেন আমার নামতে না হয়। তবে যদি আমাকে প্রয়োজন পড়ে দলের, তাহলে দলকে জেতাতে পারাটা হবে দারুণ।” যেমন কথা, তেমন কাজ। বাউন্ডারিতে দলকে জিতিয়ে হুঙ্কার ছুড়ে দলকে উদযাপন করেন ৩১ বছর বয়সী অভিষিক্ত অলরাউন্ডার। গ্যালারিতেও বয়ে যায় উল্লাসের জোয়ার। ড্রেসিং রুমে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন কামিন্স ও কার সতীর্থরা।