Dhaka বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানবপাচারে ৩৫৫ কোটি টাকা আয় এমপি পাপুলের

ফাইল ছবি

গত পাঁচ বছরে মানবপাচার করে ৩৫৫ কোটিরও বেশি টাকা আয় করেছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুল ও তার পরিবার। ৫০০টিরও বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এফডিআরের হিসাব তদন্ত করে এই টাকার সন্ধান পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

পল্টন থানায় পাপুল, তার মেয়ে, ভাই, শ্যালিকা এবং আরও চার জনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি আজ মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করে।

সিআইডি’র আর্থিক অপরাধ ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল-আমিন হোসেন এই অর্থপাচার মামলা করেন।

তিনি বলেন, মূলত এফডিআরসহ ৫০০টিরও বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের হিসাব তদন্ত করে এই টাকার খোঁজ পাওয়া গেছে। সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, মূলত মানবপাচার করেই ৩৫৫ কোটি টাকার বেশি অর্থ আয় করেছেন তারা।

তিনি বলেন, এই অ্যাকাউন্টগুলোতে ১৩০ কোটিরও বেশি টাকা পাওয়া গেছে।

পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের জে ডব্লিউ লীলাবালি ও পাপুলের ভাই কাজী বদরুল আলম লিটনের মালিকানাধীন জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল- এ দুটি বিদেশি কর্মসংস্থান প্রতিষ্ঠানকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মামলার বিবৃতিতে বলা হয়, পাপুলের সহযোগী সাদিকুর রহমান মনির বিদেশে চাকরি দেওয়ার জন্য জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে প্রত্যেক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা নিয়েছেন।

আরও পড়ুন : কেরানীগঞ্জে একরাতেই কবর থেকে সাত লাশ উধাও!

মনিরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সিআইডি ৩৮ কোটি ২২ লাখ টাকার সন্ধান পেয়েছে। এই টাকা পাপুল, তার শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও কন্যা ওয়াফা ইসলাম বিভিন্ন সময়ে পাঠিয়েছেন এবং তুলেছেন।

জেসমিন ও মনিরের মধ্যে কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক না থাকলেও, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে জেসমিনের অ্যাকাউন্টে ১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পাঠানো হয়। এ ছাড়া, মনির পাপুলের প্রতিষ্ঠান ফোর পয়েন্ট হাউজিংয়ের নামে এক কোটি ১৮ লাখ টাকা পাঠান বলে জানায় সিআইডি।

এই সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, জেসমিনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো পাপুল সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন।

পাপুল ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন- পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, তার ভাই কাজী বদরুল আলম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান, সহযোগী সাদিকুর রহমান ও জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা এবং দুটি প্রতিষ্ঠান জে ডব্লিউ লীলাবালি ও জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল।

তবে, এ মামলায় পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলামের সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সিআইডি।

পাপুল বর্তমানে কুয়েতে কারাগারে আছেন। জুনের প্রথম দিকে সেদেশে গ্রেপ্তারের পর মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে তার বিচার চলছে।

পাপুল ও এক কুয়েতি নাগরিকের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া নামের একটি কর্মসংস্থান প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কুয়েতে পাঠাতে প্রতি কর্মীর কাছ থেকে তিন হাজার দিনার পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগ আছে এর বিরুদ্ধে। এসব কর্মীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাকিবের গোলে হংকংয়ের বিপক্ষে ড্র করল বাংলাদেশ

মানবপাচারে ৩৫৫ কোটি টাকা আয় এমপি পাপুলের

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২০

গত পাঁচ বছরে মানবপাচার করে ৩৫৫ কোটিরও বেশি টাকা আয় করেছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুল ও তার পরিবার। ৫০০টিরও বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এফডিআরের হিসাব তদন্ত করে এই টাকার সন্ধান পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

পল্টন থানায় পাপুল, তার মেয়ে, ভাই, শ্যালিকা এবং আরও চার জনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি আজ মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করে।

সিআইডি’র আর্থিক অপরাধ ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল-আমিন হোসেন এই অর্থপাচার মামলা করেন।

তিনি বলেন, মূলত এফডিআরসহ ৫০০টিরও বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের হিসাব তদন্ত করে এই টাকার খোঁজ পাওয়া গেছে। সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, মূলত মানবপাচার করেই ৩৫৫ কোটি টাকার বেশি অর্থ আয় করেছেন তারা।

তিনি বলেন, এই অ্যাকাউন্টগুলোতে ১৩০ কোটিরও বেশি টাকা পাওয়া গেছে।

পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের জে ডব্লিউ লীলাবালি ও পাপুলের ভাই কাজী বদরুল আলম লিটনের মালিকানাধীন জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল- এ দুটি বিদেশি কর্মসংস্থান প্রতিষ্ঠানকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মামলার বিবৃতিতে বলা হয়, পাপুলের সহযোগী সাদিকুর রহমান মনির বিদেশে চাকরি দেওয়ার জন্য জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে প্রত্যেক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা নিয়েছেন।

আরও পড়ুন : কেরানীগঞ্জে একরাতেই কবর থেকে সাত লাশ উধাও!

মনিরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সিআইডি ৩৮ কোটি ২২ লাখ টাকার সন্ধান পেয়েছে। এই টাকা পাপুল, তার শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও কন্যা ওয়াফা ইসলাম বিভিন্ন সময়ে পাঠিয়েছেন এবং তুলেছেন।

জেসমিন ও মনিরের মধ্যে কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক না থাকলেও, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে জেসমিনের অ্যাকাউন্টে ১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পাঠানো হয়। এ ছাড়া, মনির পাপুলের প্রতিষ্ঠান ফোর পয়েন্ট হাউজিংয়ের নামে এক কোটি ১৮ লাখ টাকা পাঠান বলে জানায় সিআইডি।

এই সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, জেসমিনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো পাপুল সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন।

পাপুল ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন- পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, তার ভাই কাজী বদরুল আলম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান, সহযোগী সাদিকুর রহমান ও জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা এবং দুটি প্রতিষ্ঠান জে ডব্লিউ লীলাবালি ও জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল।

তবে, এ মামলায় পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলামের সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সিআইডি।

পাপুল বর্তমানে কুয়েতে কারাগারে আছেন। জুনের প্রথম দিকে সেদেশে গ্রেপ্তারের পর মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে তার বিচার চলছে।

পাপুল ও এক কুয়েতি নাগরিকের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া নামের একটি কর্মসংস্থান প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কুয়েতে পাঠাতে প্রতি কর্মীর কাছ থেকে তিন হাজার দিনার পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগ আছে এর বিরুদ্ধে। এসব কর্মীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি।