Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রায়ের কপি পেলে রোববার এটিএম আজহারের রিভিউ আবেদন

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেলে আবেদনটি রোববার (১৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করা হবে।

শনিবার (১৮ জুলাই) এটিএম আজহারুল ইসলামের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এ তথ্য জানান। ১৪টি যুক্তি দিয়ে রিভিউ আবেদনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘তামাদি আইনের সুযোগ নিয়ে এ আবেদন দাখিল করা হবে। নির্ধারিত সময়ের শেষদিন যেহেতু কোর্ট বন্ধ ছিল সেহেতু কোর্ট খুললেই আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।’

আপিল বিভাগের রায় প্রকাশের পর থেকে রিভিউ করতে পরবর্তী ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন আদালত। এটিএম আজহারের ক্ষেত্রে এই ১৫ দিনের সময় গত ৩০ মার্চ শেষ হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারনে গত ২৬ মার্চ থেকেই সারাদেশের অফিস আদালত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সে হিসেবে সুপ্রিমকোর্টসহ সারাদেশের আদালতে সাধারণ ছুটি শুরু থাকায় সেটি করা যায়নি।

শিশির মনির বলেন, ‘আইন অনুযায়ী আসামি রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার দিন থেকে রিভিউয়ের জন্য দিন গণনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত অনুলিপি পাইনি। যদিও আমাদের অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডকে একটি কপি দেওয়া হয়েছে গত ১৬ মার্চ। সেইদিনটি ধরেই ৩০ মার্চ হচ্ছে রিভিউ আবেদন করার শেষদিন। এরই মধ্যে গত ২১ মার্চ এটিএম আজহারুল ইসলাম আমাদের রিভিউ আবেদন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেভাবেই আমরা রিভিউ আবেদন প্রস্তুত করেছি।’

১৪টি যুক্তিতে রিভিউ আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে অন্যতম যুক্তি হলো- আপিল বিভাগ সর্বসম্মতভাবে মৃত্যুদণ্ড দেননি। চার বিচারপতির মধ্যে তিনজন তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। আর একজন বিচারপতি (কয়েকদিন আগে অবসরে যাওয়া বিচারপতি জিনাত আরা) তিনটি অভিযোগের মধ্যে দুটিতেই খালাস দিয়েছেন, আর একটিতে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। সুতরাং যেসব অভিযোগ বিচারকের দৃষ্টিতেই সন্দেহজনক, তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা ঠিক হবে না।’

মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এক রায়ে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহার। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে গতবছর ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখেন। গত ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওইদিনই এর কপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। রায়ের কপি বিকেল ৫টার পর পৌঁছায় সেদিন পরোয়ানা কারাগারে পাঠানো যায়নি। এরপর পরোয়ানা প্রস্তুত করে ১৬ মার্চ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে মৃত্যুপরোয়ানা জারি করেন। লাল কাপড়ে মুড়িয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরোয়ানা পাঠানো হয় কাশিপুর কারাগারে। সেখানেই বন্দি এটিএম আজহারুল ইসলাম। সেখানে তা পৌঁছার পর তাকে মৃত্যুপরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।

এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট এটিএম আজহারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকেই তিনি কারাবন্দি রয়েছেন।

Tag :
জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রায়ের কপি পেলে রোববার এটিএম আজহারের রিভিউ আবেদন

প্রকাশের সময় : ০৬:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেলে আবেদনটি রোববার (১৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করা হবে।

শনিবার (১৮ জুলাই) এটিএম আজহারুল ইসলামের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এ তথ্য জানান। ১৪টি যুক্তি দিয়ে রিভিউ আবেদনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘তামাদি আইনের সুযোগ নিয়ে এ আবেদন দাখিল করা হবে। নির্ধারিত সময়ের শেষদিন যেহেতু কোর্ট বন্ধ ছিল সেহেতু কোর্ট খুললেই আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।’

আপিল বিভাগের রায় প্রকাশের পর থেকে রিভিউ করতে পরবর্তী ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন আদালত। এটিএম আজহারের ক্ষেত্রে এই ১৫ দিনের সময় গত ৩০ মার্চ শেষ হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারনে গত ২৬ মার্চ থেকেই সারাদেশের অফিস আদালত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সে হিসেবে সুপ্রিমকোর্টসহ সারাদেশের আদালতে সাধারণ ছুটি শুরু থাকায় সেটি করা যায়নি।

শিশির মনির বলেন, ‘আইন অনুযায়ী আসামি রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার দিন থেকে রিভিউয়ের জন্য দিন গণনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত অনুলিপি পাইনি। যদিও আমাদের অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডকে একটি কপি দেওয়া হয়েছে গত ১৬ মার্চ। সেইদিনটি ধরেই ৩০ মার্চ হচ্ছে রিভিউ আবেদন করার শেষদিন। এরই মধ্যে গত ২১ মার্চ এটিএম আজহারুল ইসলাম আমাদের রিভিউ আবেদন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেভাবেই আমরা রিভিউ আবেদন প্রস্তুত করেছি।’

১৪টি যুক্তিতে রিভিউ আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে অন্যতম যুক্তি হলো- আপিল বিভাগ সর্বসম্মতভাবে মৃত্যুদণ্ড দেননি। চার বিচারপতির মধ্যে তিনজন তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। আর একজন বিচারপতি (কয়েকদিন আগে অবসরে যাওয়া বিচারপতি জিনাত আরা) তিনটি অভিযোগের মধ্যে দুটিতেই খালাস দিয়েছেন, আর একটিতে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। সুতরাং যেসব অভিযোগ বিচারকের দৃষ্টিতেই সন্দেহজনক, তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা ঠিক হবে না।’

মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এক রায়ে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহার। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে গতবছর ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখেন। গত ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওইদিনই এর কপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। রায়ের কপি বিকেল ৫টার পর পৌঁছায় সেদিন পরোয়ানা কারাগারে পাঠানো যায়নি। এরপর পরোয়ানা প্রস্তুত করে ১৬ মার্চ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে মৃত্যুপরোয়ানা জারি করেন। লাল কাপড়ে মুড়িয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরোয়ানা পাঠানো হয় কাশিপুর কারাগারে। সেখানেই বন্দি এটিএম আজহারুল ইসলাম। সেখানে তা পৌঁছার পর তাকে মৃত্যুপরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।

এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট এটিএম আজহারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকেই তিনি কারাবন্দি রয়েছেন।