Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনার সাথে যুদ্ধে হেরে গেলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৪:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২০
  • ১৯৯ জন দেখেছেন

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

করোনার সাথে যুদ্ধে হেরে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ওপার বাংলার সিনেমার বর্ষীয়ান এই অভিনেতা করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৬ অক্টোবর করোনায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

এরপর কয়েক দফায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ও উন্নতির খবর পাওয়া যায়। করোনা থেকে মুক্ত হয়েছিলেন সৌমিত্র। তবে অন্যান্য জটিল রোগের কাছে পরাস্ত হয়ে আজ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন এই কিংবদন্তি।

রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিনেতা, আবৃত্তিকার, কবি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

কলকাতার একাধিক গণমাধ্যম তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করোনার সঙ্গে একাধিক রোগে ভুগছিলেন। তিনি প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। এটা নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছিল ফুসফুস ও মস্তিষ্কে। মূত্রথলিতেও সংক্রমণ হয়েছিলো তার। এতকিছুর সঙ্গে এই বার্ধক্যে তার শরীর লড়াই করে উঠতে পারছিলো না।

আরও পড়ুন : আফসানা মিমি শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হলেন

এর আগে ভোর ৫টায় বেলভিউ হাসাপতালে পৌঁছান সৌমিত্রকন্যা পৌলমী বোস। বাবাকে দেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে কেঁদে ফেলেন তিনি। সৌমিত্রকন্যা বলেন, বাবা ভালো নেই। একদম ভালো নেই। বাবাকে এই অবস্থায় আর দেখতে পারছি না।

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তার পরিবারের আদিবাড়ি ছিল বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কাছে কয়া গ্রামে। সৌমিত্রর দাদার আমল থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবার নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে বসবাস শুরু করেন।

সৌমিত্র পড়াশোনা করেন- হাওড়া জেলা স্কুল, স্কটিশ চার্চকলেজ, কলকাতার সিটি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

১৯৫৯ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। পরবর্তীতে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সৌমিত্র। মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। কবি ও খুব উচ্চমানের আবৃত্তিকার হিসেবে তার দারুণ খ্যাতি রয়েছে।

২০১২ সালে ভারতের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন সৌমিত্র। ২০০৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ পান তিনি। তাছাড়া ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন এ শিল্পী।

এছাড়া দেশ-বিদেশের অসংখ্য সম্মাননা তার প্রাপ্তির ঝুলিতে জমা পড়েছে। উল্লেখযোগ্য হলো- ফ্রান্সের ‘লেজিয়ঁ দ্য নর’ (২০১৮)।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

করোনার সাথে যুদ্ধে হেরে গেলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৪:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২০

করোনার সাথে যুদ্ধে হেরে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ওপার বাংলার সিনেমার বর্ষীয়ান এই অভিনেতা করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৬ অক্টোবর করোনায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

এরপর কয়েক দফায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ও উন্নতির খবর পাওয়া যায়। করোনা থেকে মুক্ত হয়েছিলেন সৌমিত্র। তবে অন্যান্য জটিল রোগের কাছে পরাস্ত হয়ে আজ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন এই কিংবদন্তি।

রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিনেতা, আবৃত্তিকার, কবি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

কলকাতার একাধিক গণমাধ্যম তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করোনার সঙ্গে একাধিক রোগে ভুগছিলেন। তিনি প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। এটা নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছিল ফুসফুস ও মস্তিষ্কে। মূত্রথলিতেও সংক্রমণ হয়েছিলো তার। এতকিছুর সঙ্গে এই বার্ধক্যে তার শরীর লড়াই করে উঠতে পারছিলো না।

আরও পড়ুন : আফসানা মিমি শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হলেন

এর আগে ভোর ৫টায় বেলভিউ হাসাপতালে পৌঁছান সৌমিত্রকন্যা পৌলমী বোস। বাবাকে দেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে কেঁদে ফেলেন তিনি। সৌমিত্রকন্যা বলেন, বাবা ভালো নেই। একদম ভালো নেই। বাবাকে এই অবস্থায় আর দেখতে পারছি না।

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তার পরিবারের আদিবাড়ি ছিল বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কাছে কয়া গ্রামে। সৌমিত্রর দাদার আমল থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবার নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে বসবাস শুরু করেন।

সৌমিত্র পড়াশোনা করেন- হাওড়া জেলা স্কুল, স্কটিশ চার্চকলেজ, কলকাতার সিটি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

১৯৫৯ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। পরবর্তীতে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সৌমিত্র। মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। কবি ও খুব উচ্চমানের আবৃত্তিকার হিসেবে তার দারুণ খ্যাতি রয়েছে।

২০১২ সালে ভারতের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন সৌমিত্র। ২০০৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ পান তিনি। তাছাড়া ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন এ শিল্পী।

এছাড়া দেশ-বিদেশের অসংখ্য সম্মাননা তার প্রাপ্তির ঝুলিতে জমা পড়েছে। উল্লেখযোগ্য হলো- ফ্রান্সের ‘লেজিয়ঁ দ্য নর’ (২০১৮)।