Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নাশকতার প্রমাণ নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের ফল প্রকাশ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ইরানের সামরিক তদন্তকারীরা এখন পর্যন্ত অপরাধমূলক কার্যকলাপ বা নাশকতার কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি বলে জানিয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইরনা বলেছে, ‘ইরানের সামরিক তদন্তকারীরা এখন পর্যন্ত হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং অন্য সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় অপরাধমূলক কার্যকলাপের কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।

দুর্ঘটনার বিষয়ে সামরিক বাহিনীর একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি উঁচু পাহাড়ি এলাকায় আঘাত করার পর তাতে আগুন ধরে গিয়েছিল। হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষে ‘বুলেটের কোনো গর্ত বা চিহ্ন’ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, রোববার (১৯ মে) রাইসির হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ‘পূর্বনির্ধারিত পথেই উড়ছিল এবং নির্ধারিত গতিপথ বদলায়নি।’ সেখানে আরো বলা হয়, ‘ওয়াচ টাওয়ার এবং ফ্লাইট ক্রুদের মধ্যে যোগাযোগের সময় সন্দেহজনক কোনো বিষয় পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীদের একটি বিবৃতি অনুসারে, প্রেসিডেন্টকে পরিবহনকারী হেলিকপ্টার এবং সঙ্গে থাকা অপর দুই হেলিকপ্টারের মধ্যে চূড়ান্ত যোগাযোগ দুর্ঘটনার প্রায় দেড় মিনিট আগে রেকর্ড করা হয়েছিল।

হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ সোমবার (২০ মে) ভোরে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া গেছে। একটি ইরানি ড্রোন হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করেছিল। কিন্তু দুর্গম এলাকা, কুয়াশা এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল তাদের কার্যক্রম চালাতে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।

তবে এ দুর্ঘটনা নিয়ে প্রথম বিবৃতিতে কাউকে দোষারোপ করা হয়নি। ইরানি কর্তৃপক্ষ বলেছে, আরো বিশদ বিবরণ প্রকাশ করা হবে। সেনাবাহিনীও বলেছে, তদন্ত পরিচালনার জন্য আরো সময়ের প্রয়োজন। রাইসি যে হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করেছিলেন সেটি ‘বেল-২১২’ মডেলের একটি হেলিকপ্টার। এটি ১৯৬০-এর দশকের শেষ থেকে পরিচালিত হচ্ছিল।

হেলিকপ্টারটি পুরনো মডেলের হওয়ায় এর অধিকাংশ যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় না। এই মডেলের হেলিকপ্টার প্রথমে আমেরিকা তৈরি করেছিল। এরপর কানাডায়ও উৎপাদিত হয়েছে। ১৯৭৬ সালে ইরান প্রথম এই হেলিকপ্টারটি ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। তার আগে হেলিকপ্টারটি মার্কিন বিমানবাহিনী ব্যবহার করেছিল।

১৯৭৯ সালে ইরানে বিপ্লবের সময় থেকে এবং পরবর্তীকালে এটির পরমাণু কর্মসূচির ওপর আরোপিত বিদেশি নিষেধাজ্ঞার ফলে আকাশযানের যন্ত্রাংশ বা নতুন বিমান-হেলিকপ্টার সংগ্রহ তেহরানের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।

গত রোববার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না মানুষ, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নাশকতার প্রমাণ নেই

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের ফল প্রকাশ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ইরানের সামরিক তদন্তকারীরা এখন পর্যন্ত অপরাধমূলক কার্যকলাপ বা নাশকতার কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি বলে জানিয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইরনা বলেছে, ‘ইরানের সামরিক তদন্তকারীরা এখন পর্যন্ত হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং অন্য সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় অপরাধমূলক কার্যকলাপের কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।

দুর্ঘটনার বিষয়ে সামরিক বাহিনীর একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি উঁচু পাহাড়ি এলাকায় আঘাত করার পর তাতে আগুন ধরে গিয়েছিল। হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষে ‘বুলেটের কোনো গর্ত বা চিহ্ন’ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, রোববার (১৯ মে) রাইসির হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ‘পূর্বনির্ধারিত পথেই উড়ছিল এবং নির্ধারিত গতিপথ বদলায়নি।’ সেখানে আরো বলা হয়, ‘ওয়াচ টাওয়ার এবং ফ্লাইট ক্রুদের মধ্যে যোগাযোগের সময় সন্দেহজনক কোনো বিষয় পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীদের একটি বিবৃতি অনুসারে, প্রেসিডেন্টকে পরিবহনকারী হেলিকপ্টার এবং সঙ্গে থাকা অপর দুই হেলিকপ্টারের মধ্যে চূড়ান্ত যোগাযোগ দুর্ঘটনার প্রায় দেড় মিনিট আগে রেকর্ড করা হয়েছিল।

হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ সোমবার (২০ মে) ভোরে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া গেছে। একটি ইরানি ড্রোন হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করেছিল। কিন্তু দুর্গম এলাকা, কুয়াশা এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল তাদের কার্যক্রম চালাতে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।

তবে এ দুর্ঘটনা নিয়ে প্রথম বিবৃতিতে কাউকে দোষারোপ করা হয়নি। ইরানি কর্তৃপক্ষ বলেছে, আরো বিশদ বিবরণ প্রকাশ করা হবে। সেনাবাহিনীও বলেছে, তদন্ত পরিচালনার জন্য আরো সময়ের প্রয়োজন। রাইসি যে হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করেছিলেন সেটি ‘বেল-২১২’ মডেলের একটি হেলিকপ্টার। এটি ১৯৬০-এর দশকের শেষ থেকে পরিচালিত হচ্ছিল।

হেলিকপ্টারটি পুরনো মডেলের হওয়ায় এর অধিকাংশ যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় না। এই মডেলের হেলিকপ্টার প্রথমে আমেরিকা তৈরি করেছিল। এরপর কানাডায়ও উৎপাদিত হয়েছে। ১৯৭৬ সালে ইরান প্রথম এই হেলিকপ্টারটি ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। তার আগে হেলিকপ্টারটি মার্কিন বিমানবাহিনী ব্যবহার করেছিল।

১৯৭৯ সালে ইরানে বিপ্লবের সময় থেকে এবং পরবর্তীকালে এটির পরমাণু কর্মসূচির ওপর আরোপিত বিদেশি নিষেধাজ্ঞার ফলে আকাশযানের যন্ত্রাংশ বা নতুন বিমান-হেলিকপ্টার সংগ্রহ তেহরানের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।

গত রোববার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছে।