Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সারাহ ইসলামের কিডনি নেওয়া শামীমাও মারা গেলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সারাহ ইসলামের মরণোত্তর কিডনি নেওয়া শামীমা আক্তার মারা গেছেন। এর ফলে ‘ব্রেন ডেড’ (মরণোত্তর) ওই তরুণীর কিডনি নেওয়া দুই নারীরই মৃত্যু হলো।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শামীমা। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায়।

শামীমার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসএমএমইউয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল।

তিনি বলেন, প্রথমজন ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।

অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিল শামীমা। সম্প্রতি শামীমার ভাই জানায়, ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে, একেবারে শুকিয়ে গেছে শামীমা। পরে তিন সপ্তাহ আবারও বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। শুরুর দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও কেন শুকিয়ে যাচ্ছিল সেটি ধরতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। চার দিন আগে আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে।

শামীমার মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সি ভাইরাস ও বিরল নিউমোনিয়া ধরা পড়েছিল। সে অনুযায়ী ডায়ালাইসিসও শুরু করেছিলাম। আমাদের এখানে সমস্যা হওয়ায় ওয়ার্ডে নিয়ে সি ভাইরাস ডায়ালাইসিস দিয়েছিলাম। এরপরও তার উন্নতি হয়নি। বাইরের হাসপাতালেও একদিন নেওয়া হয়েছিল। অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় আবারও আমাদের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হলো।

প্রতিস্থাপনে নেতৃত্ব দেওয়া এই চিকিৎসক আরও বলেন, হেপাটাইটিস সি পজিটিভ হলে ব্লাড কাজ করে না। এজন্য বিশেষ করে রক্ত লাগে, সেটিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর রেসপন্স করেনি। বাড়িতে থাকার সময়ে অবস্থা খারাপ হলেও সময় মতো আমাদের জানানো হয়নি। অনেকটা অবহেলা ছিল। খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তাহলে হয়তো এই অবস্থা দেখতে হতো না।

ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথমজন ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।

২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি সারাহ ইসলাম নামে ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর ‘ব্রেন ডেড’ ঘোষণা করেন বিএসএমএমইউ চিকিৎসকরা। ওই রাতেই তার কিডনি শামীমা আক্তার এবং হাসিনা নামে দুই নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।

দেশে প্রথমবারের মতো ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্টকে বিএসএমএমইউয়ের পক্ষ থেকে সফল দাবি করা হলেও এর ৯ মাস পর অক্টোবরে হাসিনা মারা যান। তবে শামীমা আক্তার বেঁচে ছিলেন এতদিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সারাহ ইসলামের কিডনি নেওয়া শামীমাও মারা গেলেন

প্রকাশের সময় : ০২:১৯:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সারাহ ইসলামের মরণোত্তর কিডনি নেওয়া শামীমা আক্তার মারা গেছেন। এর ফলে ‘ব্রেন ডেড’ (মরণোত্তর) ওই তরুণীর কিডনি নেওয়া দুই নারীরই মৃত্যু হলো।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শামীমা। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায়।

শামীমার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসএমএমইউয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল।

তিনি বলেন, প্রথমজন ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।

অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিল শামীমা। সম্প্রতি শামীমার ভাই জানায়, ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে, একেবারে শুকিয়ে গেছে শামীমা। পরে তিন সপ্তাহ আবারও বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। শুরুর দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও কেন শুকিয়ে যাচ্ছিল সেটি ধরতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। চার দিন আগে আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে।

শামীমার মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সি ভাইরাস ও বিরল নিউমোনিয়া ধরা পড়েছিল। সে অনুযায়ী ডায়ালাইসিসও শুরু করেছিলাম। আমাদের এখানে সমস্যা হওয়ায় ওয়ার্ডে নিয়ে সি ভাইরাস ডায়ালাইসিস দিয়েছিলাম। এরপরও তার উন্নতি হয়নি। বাইরের হাসপাতালেও একদিন নেওয়া হয়েছিল। অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় আবারও আমাদের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হলো।

প্রতিস্থাপনে নেতৃত্ব দেওয়া এই চিকিৎসক আরও বলেন, হেপাটাইটিস সি পজিটিভ হলে ব্লাড কাজ করে না। এজন্য বিশেষ করে রক্ত লাগে, সেটিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর রেসপন্স করেনি। বাড়িতে থাকার সময়ে অবস্থা খারাপ হলেও সময় মতো আমাদের জানানো হয়নি। অনেকটা অবহেলা ছিল। খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তাহলে হয়তো এই অবস্থা দেখতে হতো না।

ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথমজন ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।

২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি সারাহ ইসলাম নামে ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর ‘ব্রেন ডেড’ ঘোষণা করেন বিএসএমএমইউ চিকিৎসকরা। ওই রাতেই তার কিডনি শামীমা আক্তার এবং হাসিনা নামে দুই নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।

দেশে প্রথমবারের মতো ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্টকে বিএসএমএমইউয়ের পক্ষ থেকে সফল দাবি করা হলেও এর ৯ মাস পর অক্টোবরে হাসিনা মারা যান। তবে শামীমা আক্তার বেঁচে ছিলেন এতদিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।