Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ মাথায় পড়ে গাজায় পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ গাজায় বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাথায় পড়ে অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।

শুক্রবার (৮ মার্চ) গাজার উত্তরাঞ্চলীয় আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের আল-শিফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাজা উপত্যকার আল শিফা হাসপাতারের জরুরি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আল-শেখ বার্তা সংস্থা এএফপিকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উপকূলের উত্তরে আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে এই প্রাণঘাতী ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর হয়। হতাহতদের গাজার আল-শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আল-ঘৌল জানান, এক ব্যাগ ময়দা পাওয়ার আশায় সে ও তার ভাই ত্রাণবাহী প্যারাসুটগুলোর পেছনে ছুটছিলেন। তারপর হঠাৎ তারা দেখতে পান একটি প্যারাসুট না খুলে রকেটের মতো ছুটে গিয়ে একটি বাড়ির ছাদের পড়ে।

তিনি আরও বলেন, ‘১০ মিনিট পরে আমি দেখলাম যে বাড়িটির ছাদে ত্রাণের বস্তাগুলো পড়েছে লোকজন সেখান থেকে তিনজন শহীদ ও অন্যান্য আহতদের সরিয়ে নিচ্ছে। তারা সবাই ওই বাড়ির ছাদেই থাকতেন।’

জর্ডানের সামরিক সূত্র জানায়, তাদের কোনো বিমান থেকে ত্রুটিপূর্ণ প্যারাসুটটি ফেলা হয়নি। জর্ডানের যে চারটি বিমান থেকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয় তারা কোনো ধরনের ত্রুটি ছাড়াই তাদের ত্রাণ পৌঁছানোর অভিযান সম্পন্ন করেছে।

শুক্রবার হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বিমান থেকে ত্রাণ ফেলাকে ‘নিরর্থক’ বলে অভিহিত করেছে। আর বলেছে, ‘এটি ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের সবচেয়ে ভালো পথ না।’

জাতিসংঘ জানায়, বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা বা প্রস্তাবিত সামুদ্রিক সহায়তার করিডোর কোনোটাই স্থলপথে সহায়তা পাঠানোর বিকল্প হতে পারে না।

ইসরায়েলের কাছে আরও বেশি সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে আরও বেশি ট্রাককে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

শুক্রবার (৮ মার্চ) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি সি-১৭ কার্গো বিমান থেকে গাজা শহরের উত্তরে আল শাতির ওপর দিয়ে প্লেন থেকে সহায়তা ফেলা হচ্ছে। গত কয়েকমাসে কোনো ধরণের সহায়তা না পাওয়া এলাকা ছিল এটি।

মূলত এই ত্রাণ সহায়তা প্যারাসুটের মাধ্যমে নিচে ফেলা হয়। কিন্তু প্যারাসুট যথাযথভাবে না খোলার কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে নিচে পড়ে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আচমকা হামলা চালায় হামাস ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। এরপর থেকেই প্রতিশোধের নামে গাজায় বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদার দেশটির হামলায় ইতোমধ্যে প্রায় ৩১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গাজায় ক্রমাগত হামলায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনাহারে থাকা এসব মানুষকে সহযোগিতায় কয়েকদিন ধরে বিমান থেকে ত্রাণ ফেলছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশনার গত রোববার উত্তর গাজায় বিমান থেকে ৩৬ হাজার প্যাকেট খাবার ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। জর্ডানের সঙ্গে সমন্বয় করে এদিন দ্বিতীয়বারের মতো খাবার ফেলে জো বাইডেন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় ২০ বারের মতো খাবারের প্যাকেট ফেলেছে।

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ মাথায় পড়ে গাজায় পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত

প্রকাশের সময় : ০৬:১৫:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ গাজায় বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাথায় পড়ে অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।

শুক্রবার (৮ মার্চ) গাজার উত্তরাঞ্চলীয় আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের আল-শিফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাজা উপত্যকার আল শিফা হাসপাতারের জরুরি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আল-শেখ বার্তা সংস্থা এএফপিকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উপকূলের উত্তরে আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে এই প্রাণঘাতী ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর হয়। হতাহতদের গাজার আল-শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আল-ঘৌল জানান, এক ব্যাগ ময়দা পাওয়ার আশায় সে ও তার ভাই ত্রাণবাহী প্যারাসুটগুলোর পেছনে ছুটছিলেন। তারপর হঠাৎ তারা দেখতে পান একটি প্যারাসুট না খুলে রকেটের মতো ছুটে গিয়ে একটি বাড়ির ছাদের পড়ে।

তিনি আরও বলেন, ‘১০ মিনিট পরে আমি দেখলাম যে বাড়িটির ছাদে ত্রাণের বস্তাগুলো পড়েছে লোকজন সেখান থেকে তিনজন শহীদ ও অন্যান্য আহতদের সরিয়ে নিচ্ছে। তারা সবাই ওই বাড়ির ছাদেই থাকতেন।’

জর্ডানের সামরিক সূত্র জানায়, তাদের কোনো বিমান থেকে ত্রুটিপূর্ণ প্যারাসুটটি ফেলা হয়নি। জর্ডানের যে চারটি বিমান থেকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয় তারা কোনো ধরনের ত্রুটি ছাড়াই তাদের ত্রাণ পৌঁছানোর অভিযান সম্পন্ন করেছে।

শুক্রবার হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বিমান থেকে ত্রাণ ফেলাকে ‘নিরর্থক’ বলে অভিহিত করেছে। আর বলেছে, ‘এটি ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের সবচেয়ে ভালো পথ না।’

জাতিসংঘ জানায়, বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা বা প্রস্তাবিত সামুদ্রিক সহায়তার করিডোর কোনোটাই স্থলপথে সহায়তা পাঠানোর বিকল্প হতে পারে না।

ইসরায়েলের কাছে আরও বেশি সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে আরও বেশি ট্রাককে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

শুক্রবার (৮ মার্চ) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি সি-১৭ কার্গো বিমান থেকে গাজা শহরের উত্তরে আল শাতির ওপর দিয়ে প্লেন থেকে সহায়তা ফেলা হচ্ছে। গত কয়েকমাসে কোনো ধরণের সহায়তা না পাওয়া এলাকা ছিল এটি।

মূলত এই ত্রাণ সহায়তা প্যারাসুটের মাধ্যমে নিচে ফেলা হয়। কিন্তু প্যারাসুট যথাযথভাবে না খোলার কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে নিচে পড়ে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আচমকা হামলা চালায় হামাস ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। এরপর থেকেই প্রতিশোধের নামে গাজায় বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদার দেশটির হামলায় ইতোমধ্যে প্রায় ৩১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গাজায় ক্রমাগত হামলায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনাহারে থাকা এসব মানুষকে সহযোগিতায় কয়েকদিন ধরে বিমান থেকে ত্রাণ ফেলছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশনার গত রোববার উত্তর গাজায় বিমান থেকে ৩৬ হাজার প্যাকেট খাবার ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। জর্ডানের সঙ্গে সমন্বয় করে এদিন দ্বিতীয়বারের মতো খাবার ফেলে জো বাইডেন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় ২০ বারের মতো খাবারের প্যাকেট ফেলেছে।