আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
এবার তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করায় যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। কোম্পানিগুলো হলো- বিএই ল্যান্ড অ্যান্ড আর্মমেন্টস, অ্যালায়েন্ট টেকসিস্টেম অপারেশনস, অ্যারোভাইরোনমেন্ট, ভিয়াসাত ও ডাটা লিংক সলুশনস।
চীনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হলেও, বিষয়টি নিয়ে বেইজিংয়ের মার্কিন দূতাবাস কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, পাঁচটি মার্কিন সমরাস্ত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে বেইজিং। তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করার কারণেই এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া এসব কোম্পানির সম্পত্তি জব্দ করা হবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি সেগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদেরও চীন থেকে নিষিদ্ধ করা হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে উন্নত চিপ রপ্তানিতে চীনের উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তাতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, বাইডেন প্রশাসনের এ নিষেধাজ্ঞা বাজার অর্থনীতি ও ন্যায্য প্রতিযোগিতার নীতিগুলো লঙ্ঘন করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্য বিবিসি বলছে, মূলত যুক্তরাষ্ট্র চায় না অত্যাধুনিক চিপ কাজে লাগিয়ে চীন হাইপারসনিক মিসাইল ও এআইসংবলিত যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করুক। আর নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো এমনভাবে দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে চীনের সামরিক বাহিনী উন্নতমানের চিপ আমদানির সুযোগ হারিয়ে ফেলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই সিদ্ধান্তের পর শেয়ারের দরপতনের কারণে একদিনেই ৫৩ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের মূলধন হারিয়েছিল মার্কিন চিপ জায়ান্ট এনভিডিয়া। কোম্পানিটি চীনা বাজারের জন্য বিশেষভাবে উন্নতমানের এআই চিপ ‘এ৮০০’ ও ‘এইচ৮০০’ বানিয়েছিল। নিষেধাজ্ঞার ফলে এ দুটি চিপের বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
অন্যান্য চিপ নির্মাতার ওপর এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়লেও বিশ্লেষকদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে এনভিডিয়া। কারণ, কোম্পানিটির সামগ্রিক আয়ের ২৫ শতাংশই আসে চীন থেকে। নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরপরই এনভিডিয়ার শেয়ারমূল্য কমেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি নিয়ে ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যকার উত্তেজনা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। কারণ, তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। অন্যদিকে, বেইজিংয়ের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে তাইওয়ান সরকার। আর এই ইস্যুতে তাইওয়ানকেই জোরালো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
আগামী ১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ নির্বাচনকে সামনে রেখেই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে চীন। গত মাসে তাইওয়ানের কৌশলগত তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি মার্কিন ডলারের সরঞ্জাম সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 

























