আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সবাইকে অবাক করে দিয়ে আকস্মিকভাবে সিংহাসন ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডেনমার্কের রানি দ্বিতীয় মার্গ্রেথে। টেলিভিশনে নতুন বছর শুরুর ভাষণ দিতে গিয়ে সিংহাসন ছাড়ার ঘোষণা দেন তিনি। এসময় তার এই ভাষণ টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল।
টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ওই ভাষণে ৮৩ বছর বয়সী রানি বলেন, আমি চিন্তা করেছি, পরের প্রজন্মের কাছে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সময় নিয়ে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার সিংহাসন ছাড়ার এখনই সময়। ২০২৪ সালের ১৪ জানুয়ারি আমার বাবার উত্তরসূরি হওয়ার ৫২ বছর পর আমি ডেনমার্কের রানির পদ থেকে পদত্যাগ করব। ছেলে যুবরাজ ফ্রেডেরিক আমার আসনে স্থলাভিষিক্ত হবে।
রানি দ্বিতীয় মারগ্রেটার সিংহাসনে রাজ্যাভিষেক হয়েছিল ১৯৭২ সালে। প্রয়াত ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পর তিনি ইউরোপে সিংহাসনে সবচেয়ে বেশি সময় থাকা রাষ্ট্রপ্রধান।
সিংহাসন ছাড়ার ঘোষণার পর ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মিতে ফ্রেডিরিকসেন এক বিবৃতি রানিকে তার শাসন আমলের জন্য ধন্যবাদ জানান। ডেনমার্কের শাসনব্যবস্থা সংসদীয় পদ্ধতির। সরকারপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর হাতে আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা।
রয়টার্স বলছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ডেনমার্কের রানি দ্বিতীয় মার্গ্রেথে ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রানি হয়ে ওঠেন। আর গত বছরের জুলাই মাসে তিনি ডেনমার্কের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রানি হন।
ডেনমার্কে আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা নির্বাচিত সংসদ এবং এর সরকারের হাতে থাকে। আর রাজা বা রানি রাষ্ট্রীয় সফর থেকে শুরু করে জাতীয় দিবস উদযাপন পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী দায়িত্ব পালন করে থাকেন এবং দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকেন।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন আজীবন দায়িত্ব পালনের জন্য রানিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘এটা বোঝা এখনও কঠিন যে, এখন সিংহাসন পরিবর্তনের সময় এসেছে। অনেক ডেনিশ এখনও অন্য কোনও রানিকে চেনেন না।’
তিনি বলেন, রানি মার্গ্রেথে ডেনমার্কের মূর্ত প্রতীক।
উল্লেখ্য, ১৯৪০ সালে ডেনমার্কের সাবেক রাজা নবম ফ্রেডেরিক এবং রানি ইনগ্রিডের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন মার্গ্রেথে। তিনি তার সারা জীবন ডেনিশ নাগরিকদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়ে এসেছেন। এমনকি নাগরিকদের অনেকেই তার কৌশলী এবং সৃজনশীল ব্যক্তিত্বের ভক্ত।
এছাড়া রানি দ্বিতীয় মার্গ্রেথে প্রত্নতত্ত্বের প্রতি তার ভালোবাসার জন্যও পরিচিত এবং বেশ কয়েকটি খনন কাজেও তিনি অংশ নিয়েছেন।