করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বব্যাপী ১০ লাখ অতিক্রম করার সঙ্গে ভারতেও মৃত্যুর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সেইসঙ্গে কোভিড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও ৬৪ লাখ অতিক্রম করেছে। এছাড়া দেশটিতে ৫৪ লাখের ওপর বেশি রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর যারা কিনা মৃত্যুর দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে আছে ভারত। সেপ্টেম্বর ছিল দেশটির জন্য সবচেয়ে বাজে মাস। যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ১১০ জন করে মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। কিছু রাজ্যে অন্য রাজ্যের চেয়ে অধিক মৃত্যু দেখা দেয়ায় আঞ্চলিক অসংগতিও অব্যাহত রয়েছে।
যাকে বিশেষজ্ঞরা দেশব্যাপী মহামারী তার কাজ করে যাওয়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। ভারতের শোচনীয় অবস্থার ক্ষেত্রে মূলত ভূমিকা রেখেছে কয়েকটি রাজ্য। সেসব অঞ্চলের অবস্থার ওপর দৃষ্টি রাখা যাক।
তালিকার শীর্ষে আছে মহারাষ্ট্র। মহারাষ্ট্র ভারতের অন্যতম বড় ও ধনী রাজ্যগুলোর একটি। যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১.৩ মিলিয়ন এবং মৃত্যুর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজারের বেশি। মহামারী শুরুর দিকেই মহারাষ্ট্রে আঘাত হানে এবং দ্রুত বিস্তৃত হতে থাকে। সেপ্টেম্বরে যেখানে প্রতিদিনকার মৃত্যু ছিল ৩০০ থেকে ৫০০ জনের মতো। এটি অন্যান্য আক্রান্ত রাজ্যের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে সক্ষম
জনাকীর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র মুম্বাইয়ের এ অবস্থা মহামারী পর্যবেক্ষকদের জন্য উদ্বেগজনক ইঙ্গিত প্রদান করছে। মৃত্যুর দিক থেকে মুম্বাই এখন বিভাগগুলোর মাঝে সবার ওপরে। তবে শান্ত শহর হিসেবে পরিচিত পুনেও আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। মুম্বাই ও পুনেসহ কভিড-১৯-এ সর্বোচ্চ মৃত্যুর দিক থেকে ১০টি বিভাগের পাঁচটিই হচ্ছে মহারাষ্ট্রের।
ড. অর্ণব ঘোষ বলেন, মুম্বাই হচ্ছে মহারাষ্ট্রে ভাইরাস ঢোকার পথ। সরকারি এক জরিপে দেখা গেছে, শহরের কিছু অংশে অর্ধেক জনগণের মাঝে কভিড-১৯-এর অ্যান্টিবডির উপস্থিতি দেখা গেছে। তার মতে, মুম্বাইয়ে চলাফেরা যখন বন্ধ ছিল, তখন পুনের শহর ও গ্রাম অঞ্চলে বেশ চলাচল ছিল। একই অবস্থা ছিল পুনে ও আশপাশের জেলাগুলোর মধ্যেও।
খারাপ হচ্ছে পাঞ্জাবের অবস্থা: উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যটি ৩ শতাংশ মৃত্যুহারের কথা জানিয়েছে। এর থেকে কভিড পজিটিভ রোগীদের মৃত্যুর একটা হিসাব পাওয়া যায় এবং পাঞ্জাবের পরিসংখ্যান ভারতের জাতীয় গড়ের দ্বিগুণ। প্রকৃত সংখ্যার হিসাবে মৃত্যুর জন্য এর রাজ্যের অবস্থান নয়ে। কিন্তু রাজ্যের কোনো কোনো বিভাগ ৪ শতাংশ বা তার বেশি পর্যন্ত উচ্চ মৃত্যুহারের কথা উল্লেখ করেছে। বিশেষজ্ঞ ড. শামিকা রবী বলেন, পাঞ্জাব এখন উদ্বেগের কারণ। এর মৃত্যুর হার কেবল দেশের মাঝেই সর্বোচ্চ না, বরং এটা বাড়ছেও।
বিবিসি