নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন মো. জিশান মাহমুদ নামে সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।
রোববার (৯ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের দফতরে এ চিঠি দেয়া হয়েছে।
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে দেয়া আবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি, বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ নামের তথাকথিত রাজনৈতিক দলের সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ওমরাহ হজ করার কথা বলে দুবাইয়ে গিয়ে অস্বীকৃত ইসরাইল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার উৎখাতের দেশবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। পরবর্তীতে উক্ত সংবাদকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা প্রপাগান্ডা বলে নুরুল হক নুর তা বারবার উড়িয়ে দিলেও, বিগত ২২ জুন ঢাকাস্থ ফিলিস্তিন দূতাবাসে রোহিঙ্গাদের জন্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) খাদ্য সহায়তা বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান সাংবাদিকদের অবহিত করেন, ‘গণ অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। মোসাদের সঙ্গে বৈঠক বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। যারা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, তারা নেতা হতে পারেন না’।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের এহেন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দেশের সব ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হলে, গত ৮ জুলাই সময় টিভিতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অস্বীকৃত ইসরাইল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদি স্বীকার করেন যে, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দুবাইয়ের সিটি সেন্টারে অবস্থিত স্টার বাক্স কফিশপে ৩ ঘণ্টা বৈঠক করে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন জিততে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য মেন্দি এন সাফাদির সাহায্য চান নুর। নূর ক্ষমতায় আসলে ইসরাইলের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও দেন। ইহুদিদের সমর্থন পেতে নুরুল হক নুর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মানুষকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য।
সরকার উৎখাতে নুর সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়েছে, যা রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর হুমকিস্বরূপ বিধায় নুরুল হক নুর ওরফে ভিপি নুর দণ্ডবিধির ১২৩ক/১২৪ক/৫০৫ ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন; যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে বিধায় তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত ধারায় মামলা করতে আগ্রহী।
এতে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৯৬ ধারার বিধান মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আমলে নেয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন থাকায় আপনার নিকট আবেদন, ভিপি নুরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার জন্য আমার অনুকুলে অনুমোদন প্রদান করে বাধিত করবেন।