Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোট বিহীন সরকার স্বৈরাচারভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, মুদ্রাস্ফীতির কারণে জরাজীর্ণ সাধারণ মানুষের জীবন ব্যবস্থা। ভোট বিহীন সরকার স্বৈরাচারভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। আর মেগা উন্নতির কথা বলে যাচ্ছে। তাদের মেগা উন্নতির ফলে সাধারণ মানুষ এখন নিম্নমানের খাদ্য কিনছে। সরকার মেগা উন্নয়নের নামে দুর্নীতি করে যাচ্ছে।

বুধবার (২৮ জুন) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ঈদুল-আজহার প্রাক্কালে জনজীবনে নাকাল অবস্থা বিরাজ করছে। একদিকে যানজটে অসহনীয় ভোগান্তি, অন্যদিকে সকল প্রকার খাদ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি। মানুষের প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত। ভোটারবিহীন সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দল ও ভিন্নমতের মানুষদের ওপর দমনপীড়নে যতটা দক্ষ, ততটাই ব্যর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দামসহ জনজীবনের সকল প্রকার ভোগান্তি কমাতে। বিস্ময়কর মুদ্রাস্ফীতি নিম্ন ও মধ্যবিত্তের স্বল্প আয় গিলে খাচ্ছে।

রিজভী বলেন, সিন্ডিকেটবান্ধব সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সঙ্কট তৈরি হবে’ মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে সিন্ডিকেটে জড়িতরা আরো বেশি স্ফীতকায় ও ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে, আরো বেশি প্রণোদিত ও উৎসাহিত হবে। আসলে দেশবাসী সকলেই জানে যে সিন্ডিকেটের সাথে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই জড়িত। সেজন্যই বাণিজ্যমন্ত্রীকে সিন্ডিকেটের পক্ষ অবলম্বন করতে হয়েছে।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সারা বিশ্বে বর্তমানে খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও দেশে কেন লাগামহীন অবস্থা? কারণ যে দেশের অর্থনীতি, টাকা পাচার আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হরিলুটের নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত, সেখানে খাদ্যপণ্যের লাগাম টানা যায় না। মেগাদুর্নীতির ভাবধারা থেকে উৎসারিত তথাকথিত মেগা উন্নয়ন করতে গিয়ে মানুষকে কিনতে হচ্ছে ছোট মুরগী, ছোট ডিম, ছোট সাবান, ছোট রুটি। পাশাপাশি চাল, চিনি, মাংস ও সবজীর ওজন কমে যাচ্ছে। অর্থাৎ গরীব মানুষের আয় থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্যপণ্য কিনতে পারছে না। সরকারের বাজেট পূর্বের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ব্যক্তিগত বাজেট যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষ দিশেহারা, ভুক্তভোগী মানুষ বোবা কান্নায় গুমরে মরছে। সরকার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ বলে চেঁচিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ সেই যুদ্ধ যে অঞ্চলে হচ্ছে সেই ইউরোপে জিনিসপত্রের দাম পূর্বের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে। আর অনেক দূরে বাংলাদেশে তা আকাশ স্পর্শ করছে। আর ডিম, মাছ, মাংস তো আর ইউক্রেন থেকে আসে না। আসলে লুটপাটের সিন্ডিকেটের দুষ্টচক্রকে আড়াল করতেই যুদ্ধের অজুহাত দেয়া হচ্ছে। সরকার গরীব ও মেহনতি মানুষকে পিষ্ট করার নীতির কারণেই দেশের শতকরা ১০ ভাগ ধনীর হাতেই দেশের মোট আয়ের ৫০ ভাগের কাছাকাছি আয়।

তিনি বলেন, গত ছয় বছরে শিল্পখাতে কর্মসংস্থান কমেছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরিও কমেছে। এমন অবস্থায় চরম মুদ্রাস্ফীতিতে অসহায় মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। তারা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক খাবার কিনতে পারছে। এরা লুট ও টাকা পাচারনীতির কারণে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বানিয়েছে এক শ্রেণির মানুষকে।

রিজভী বলেন, বিদ্যমান অর্থনীতির এই নৈরাজ্যের মধ্যে এবারের কোরবানির ঈদ পালিত হতে যাচ্ছে। খাদ্যপণ্যের অসহনীয় দাম, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। মানুষের ঈদ আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে চাল, চিনি, ডাল, শাক-সবজীর দামের বৃদ্ধি অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ ও কাচা মরিচসহ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম গ্যালাক্সিতে পৌঁছেছে। যার কারণে এবার পশুর হাটে তেমন বেচা-বিক্রি নেই, পশুরহাট জমে ওঠেনি। স্বভূমির সীমানায় কেউ শান্তিতে নেই। বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রভূত্বের ও জনগণকে অধীন করে রাখার প্রকাশ পায়। এরা সহযোগিতা ও সামাধানের বৃত্ত বিবৃত না করে প্রভুর ন্যায় আচরণ করছে বলেই জনগণ এক অবর্ননীয় সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, এই ঈদ আনন্দর মধ্যে সরকারী নিপীড়নের কোনো কমতি নেই। অসহিষ্ণুতা, সীমাহীন লোভ আর উদ্ধত রাষ্ট্রশক্তির আশ্রয় করে শুধুই একটি হিংসার বিকৃত রূপ দেখা যায় সরকারের আচরণে। ঈদের প্রাক্কালেও হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও আমাদের কারাবন্দী নেতাদের মুক্তি দেয়া হয়নি। গায়েবি মামলা অব্যহত চলছে। সারাদেশে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চলছে নারকীয় আক্রমণ।

এ সময় তিনি কারাগারে আটক সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মাইলস্টোনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৩

ভোট বিহীন সরকার স্বৈরাচারভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৩:২১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, মুদ্রাস্ফীতির কারণে জরাজীর্ণ সাধারণ মানুষের জীবন ব্যবস্থা। ভোট বিহীন সরকার স্বৈরাচারভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। আর মেগা উন্নতির কথা বলে যাচ্ছে। তাদের মেগা উন্নতির ফলে সাধারণ মানুষ এখন নিম্নমানের খাদ্য কিনছে। সরকার মেগা উন্নয়নের নামে দুর্নীতি করে যাচ্ছে।

বুধবার (২৮ জুন) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ঈদুল-আজহার প্রাক্কালে জনজীবনে নাকাল অবস্থা বিরাজ করছে। একদিকে যানজটে অসহনীয় ভোগান্তি, অন্যদিকে সকল প্রকার খাদ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি। মানুষের প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত। ভোটারবিহীন সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দল ও ভিন্নমতের মানুষদের ওপর দমনপীড়নে যতটা দক্ষ, ততটাই ব্যর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দামসহ জনজীবনের সকল প্রকার ভোগান্তি কমাতে। বিস্ময়কর মুদ্রাস্ফীতি নিম্ন ও মধ্যবিত্তের স্বল্প আয় গিলে খাচ্ছে।

রিজভী বলেন, সিন্ডিকেটবান্ধব সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সঙ্কট তৈরি হবে’ মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে সিন্ডিকেটে জড়িতরা আরো বেশি স্ফীতকায় ও ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে, আরো বেশি প্রণোদিত ও উৎসাহিত হবে। আসলে দেশবাসী সকলেই জানে যে সিন্ডিকেটের সাথে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই জড়িত। সেজন্যই বাণিজ্যমন্ত্রীকে সিন্ডিকেটের পক্ষ অবলম্বন করতে হয়েছে।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সারা বিশ্বে বর্তমানে খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও দেশে কেন লাগামহীন অবস্থা? কারণ যে দেশের অর্থনীতি, টাকা পাচার আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হরিলুটের নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত, সেখানে খাদ্যপণ্যের লাগাম টানা যায় না। মেগাদুর্নীতির ভাবধারা থেকে উৎসারিত তথাকথিত মেগা উন্নয়ন করতে গিয়ে মানুষকে কিনতে হচ্ছে ছোট মুরগী, ছোট ডিম, ছোট সাবান, ছোট রুটি। পাশাপাশি চাল, চিনি, মাংস ও সবজীর ওজন কমে যাচ্ছে। অর্থাৎ গরীব মানুষের আয় থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্যপণ্য কিনতে পারছে না। সরকারের বাজেট পূর্বের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ব্যক্তিগত বাজেট যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষ দিশেহারা, ভুক্তভোগী মানুষ বোবা কান্নায় গুমরে মরছে। সরকার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ বলে চেঁচিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ সেই যুদ্ধ যে অঞ্চলে হচ্ছে সেই ইউরোপে জিনিসপত্রের দাম পূর্বের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে। আর অনেক দূরে বাংলাদেশে তা আকাশ স্পর্শ করছে। আর ডিম, মাছ, মাংস তো আর ইউক্রেন থেকে আসে না। আসলে লুটপাটের সিন্ডিকেটের দুষ্টচক্রকে আড়াল করতেই যুদ্ধের অজুহাত দেয়া হচ্ছে। সরকার গরীব ও মেহনতি মানুষকে পিষ্ট করার নীতির কারণেই দেশের শতকরা ১০ ভাগ ধনীর হাতেই দেশের মোট আয়ের ৫০ ভাগের কাছাকাছি আয়।

তিনি বলেন, গত ছয় বছরে শিল্পখাতে কর্মসংস্থান কমেছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরিও কমেছে। এমন অবস্থায় চরম মুদ্রাস্ফীতিতে অসহায় মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। তারা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক খাবার কিনতে পারছে। এরা লুট ও টাকা পাচারনীতির কারণে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বানিয়েছে এক শ্রেণির মানুষকে।

রিজভী বলেন, বিদ্যমান অর্থনীতির এই নৈরাজ্যের মধ্যে এবারের কোরবানির ঈদ পালিত হতে যাচ্ছে। খাদ্যপণ্যের অসহনীয় দাম, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। মানুষের ঈদ আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে চাল, চিনি, ডাল, শাক-সবজীর দামের বৃদ্ধি অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ ও কাচা মরিচসহ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম গ্যালাক্সিতে পৌঁছেছে। যার কারণে এবার পশুর হাটে তেমন বেচা-বিক্রি নেই, পশুরহাট জমে ওঠেনি। স্বভূমির সীমানায় কেউ শান্তিতে নেই। বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রভূত্বের ও জনগণকে অধীন করে রাখার প্রকাশ পায়। এরা সহযোগিতা ও সামাধানের বৃত্ত বিবৃত না করে প্রভুর ন্যায় আচরণ করছে বলেই জনগণ এক অবর্ননীয় সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, এই ঈদ আনন্দর মধ্যে সরকারী নিপীড়নের কোনো কমতি নেই। অসহিষ্ণুতা, সীমাহীন লোভ আর উদ্ধত রাষ্ট্রশক্তির আশ্রয় করে শুধুই একটি হিংসার বিকৃত রূপ দেখা যায় সরকারের আচরণে। ঈদের প্রাক্কালেও হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও আমাদের কারাবন্দী নেতাদের মুক্তি দেয়া হয়নি। গায়েবি মামলা অব্যহত চলছে। সারাদেশে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চলছে নারকীয় আক্রমণ।

এ সময় তিনি কারাগারে আটক সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।