নিজস্ব প্রতিবেদক :
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে সরকারকে কর দিচ্ছেন ৮৯ লাখ ৬ হাজার জন। চলতি অর্থবছরের ৬ জুন পর্যন্ত এই হিসাব পাওয়া গেছে। এছাড়া বাংলাদেশের জনগণের বর্তমানে মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ ২ হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলার।
রোববার (১১ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। রোববারের প্রশ্নউত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
তিনি বলেন, ব্যক্তি করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলো হলো, জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন করদাতা সনাক্তকরণ, এক পাতার রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি সহজীকরণ, স্পট অ্যাসেসমেন্ট, অনলাইন ই-রিটার্ন দাখিল, আয়কর দেওয়া সহজীকরণ, যেমন- অনলাইনে আয়কর দেওয়ার জন্য এ চালান, রকেট, নগদ, বিকাশ এবং সোনালি ব্যাংক ই-পেমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ ব্যবস্থা চালু, করদাতাদের সম্মাননা দেওয়া। যেমন- সিটি করপোরেশন ও জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ সময়ব্যাপী কর পরিশোধকারী করদাতাকে জাতীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে, নভেম্বর মাসে কর তথ্য সেবা মাস চালুকরণ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে; এবং কর তথা সেবা দেওয়া কেন্দ্রের মাধ্যমে করদাতাদের রিটার্ন পূরণসহ সামগ্রিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপগুলোর ফলে উত্তরোত্তর ব্যক্তি পর্যায়ে করদাতারা কর দেওয়ায় আগ্রহী হচ্ছেন এবং করদাতার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নয়টি ব্যাংক গত বছর ৪,৬২১ জন গ্রাহকের অনুকূলে ৮,৪০৪.৫২ কোটি টাকার সুদ মওকুফ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে ১,৬২০.৮৩ কোটি টাকার সুদ মওকুফ সুবিধা কার্যকর হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মুস্তফা কামাল বলেন, তফসিলি ব্যাংকের মূলঋণ (আসল) মওকুফ করার কোনো সুযোগ নেই। তফসিলভুক্ত রাষ্ট্র মালিকানাধীন ৬টি ব্যাংক (অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেডেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড, বেসিক ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসি) এবং ০৩টি বিশেষায়িত ব্যাংক (বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাপ ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক) রয়েছে। ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্যদ ২০২২ সালে ৪,৬২১ জন গ্রাহকের অনুকূলে ৮,৪০৪.৫২ কোটি টাকার সুদ মওকুফ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। ২০২২ সালে ব্যাংকগুলোর ১,৬২০.৮৩ কোটি টাকার সুদ মওকুফ সুবিধা কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশে কার্যত তফসিলি ব্যাংকগুরোর জন্য সুদ মওকুফ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি আছে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী তফসিলি ব্যাংকের আসল ঋণ মওকুফ করার কোনো সুযোগ নেই।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্রাহকের অনুকূলে সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান করদে পারে: ঋণ আদায়ের স্বার্থে গ্রাহকের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে। বন্ধ প্রকল্প হতে ঋণ আদায়, ঋণের জামানত, সহজামানত, প্রকল্প সম্পত্তি এবং প্রকল্প উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রির পরেও পাওনা আদায়ের সম্ভাবনা না থাকলে সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান করা হয়। পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে আইনগত ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদি গ্রহণের পরেও পাওনা আদায় না হলে সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান করা হয়। ঋণগ্রহীতার মৃত্যু অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী, মড়ক, নদী ভাঙন বা দুর্দশাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতাকে সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান করা হয়।
উল্লিখিত সমূহে সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান কালে ব্যাংকের তহবিল ব্যয় আদায় নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকসমূহের সুদ মওকুফ সংক্রান্ত সুবিধার সাথে কোনো ব্যাংকের দেউলিয়া হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান অর্থমন্ত্রী।