নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি :
নেত্রকোনা সদর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটিতে এখনো যান চলাচল শুরু করা যায়নি। ফলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের যাতায়াত সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।
সেতুটি সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়নের কুমারপুর ফেরিঘাট সড়কের নারিয়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বহু প্রত্যাশার পর সেতুটি নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি এখন কার্যত অচল অবকাঠামোতে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কুমারপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের অংশ হিসেবে নারিয়াপাড়া ঈদগাঁ মাঠসংলগ্ন একটি খালের ওপর পিসি গার্ডার সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
ময়মনসিংহ অঞ্চল পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (এমআরআরআইডিপি) আওতায় ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে কিশোরগঞ্জের এম এস মির্জা কনস্ট্রাকশন ও মামুন কনস্ট্রাকশন যৌথভাবে। প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয় ২০২১ সালের ২০ মে।
নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২২ সালের আগস্টে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও একাধিকবার সময় বাড়ানোর পর অবশেষে ২০২৪ সালের জুনে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের সেতুটি নির্মিত হলেও দুই পাশে প্রয়োজনীয় এপ্রোচ সড়ক না থাকায় যান চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। অথচ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় আট হাজার মানুষের যাতায়াত রয়েছে।
রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজু মিয়া বলেন, সেতু থাকলেও কোনো কাজে আসছে না। দুই পাশে মাটি ভরাট না করায় সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে।
আরেক বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলেন, এত টাকা ব্যয় করে সেতু নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়কের বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। এতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ আরো বেড়েছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে থাকা রবিউল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী সোয়াইব ইমরান জানান, সেতুর দুই পাশে এপ্রোচ সড়ক নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
জমির মালিকরা ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়া জমি দিতে রাজি নন। পাশাপাশি ঈদগাঁ মাঠ ও কবরস্থান থাকায় বিষয়টি আরো জটিল হয়ে উঠেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এলজিইডি নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এমআরআরআইডিপি প্রকল্পের আওতায় সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে। তবে এপ্রোচ সড়কের জন্য আলাদা করে ভূমি অধিগ্রহণের কোনো বরাদ্দ ছিল না। শুরুতে স্থানীয়দের কাছ থেকে জায়গা দেওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেলেও পরে তা বাস্তবায়ন হয়নি। সমস্যা সমাধানে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি 

























