Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬ মাসের মধ্যে ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডলার সংকটের মধ্যে দেশে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। সদ্য গত হওয়া ডিসেম্বর মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার সমান ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা) প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এই সংখ্যাটি গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত জুনে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। পুরো বছরে প্রবাসী আয় এলো ২ হাজার ১৯১ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার বা ২১ দশমিক ৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবাসী আয়ের এ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে।

বিদায়ী বছর ২০২৩-এ প্রবাসী আয়ে ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে গেছে। প্রবাসী আয়ে নিম্নমুখী প্রবণতা বাড়ায় ডলার সংকট। এ সময় খোলা মার্কেটে ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে প্রবাসী আয় দেশে আসার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অবৈধ হুন্ডির বাজার ছিল রমরমা। এই সময় খোলা বাজারে ডলার দাম ১২৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে কমতে থাকে প্রবাসী আয়। গত সেপ্টেম্বরে স্মরণকালের সর্বনিম্নে নেমে যায় প্রবাসী আয়।

এ সময় প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছু উদ্যোগ নিলে খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। এই খাতে পরের মাস অক্টোবরে বড় ধরনের উন্নতি হয়।

আগে প্রবাসী আয়ের ডলারের যে দামে কেনা হতো, অক্টোবর মাসে তা বাড়িয়ে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। প্রণোদনা দেওয়া হতো ২ দশমিক ৫০ পয়সা হারে। আরও ২ দশমিক ৫০ শতাংশ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেশি দিতে পারে-এমন অনুমতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বাইরেও বেশি টাকা দিতে পারে, এমন অনুমতিও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে এসেছে ছয় কোটি ৬২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭২ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

এর আগে প্রবাসী আয় বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাতে সহজ করার পাশাপাশি বেশি প্রবাসী আয় পাঠানো প্রবাসীদের সম্মাননা ঘোষণা ও বেশ কিছু বাধা-নিষেধ তুলে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে।

পরিসংখ্যান বলছে, বছরের শেষ ছয়মাস জুলাই-ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে এক হাজার ৭৯ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে জুলাই মাসেই আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; সেপ্টেম্বরে আসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; অক্টোররে আসে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার; নভেম্বর মাসে ১৯৩ কোটি ৪০ হাজার এবং বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে আসে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার।

সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। তার আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন ছিল। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা প্রয়োজন : সালাহউদ্দিন আহমদ

৬ মাসের মধ্যে ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৯:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডলার সংকটের মধ্যে দেশে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। সদ্য গত হওয়া ডিসেম্বর মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার সমান ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা) প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এই সংখ্যাটি গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত জুনে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। পুরো বছরে প্রবাসী আয় এলো ২ হাজার ১৯১ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার বা ২১ দশমিক ৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবাসী আয়ের এ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে।

বিদায়ী বছর ২০২৩-এ প্রবাসী আয়ে ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে গেছে। প্রবাসী আয়ে নিম্নমুখী প্রবণতা বাড়ায় ডলার সংকট। এ সময় খোলা মার্কেটে ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে প্রবাসী আয় দেশে আসার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অবৈধ হুন্ডির বাজার ছিল রমরমা। এই সময় খোলা বাজারে ডলার দাম ১২৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে কমতে থাকে প্রবাসী আয়। গত সেপ্টেম্বরে স্মরণকালের সর্বনিম্নে নেমে যায় প্রবাসী আয়।

এ সময় প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছু উদ্যোগ নিলে খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। এই খাতে পরের মাস অক্টোবরে বড় ধরনের উন্নতি হয়।

আগে প্রবাসী আয়ের ডলারের যে দামে কেনা হতো, অক্টোবর মাসে তা বাড়িয়ে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। প্রণোদনা দেওয়া হতো ২ দশমিক ৫০ পয়সা হারে। আরও ২ দশমিক ৫০ শতাংশ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেশি দিতে পারে-এমন অনুমতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বাইরেও বেশি টাকা দিতে পারে, এমন অনুমতিও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে এসেছে ছয় কোটি ৬২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭২ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

এর আগে প্রবাসী আয় বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাতে সহজ করার পাশাপাশি বেশি প্রবাসী আয় পাঠানো প্রবাসীদের সম্মাননা ঘোষণা ও বেশ কিছু বাধা-নিষেধ তুলে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে।

পরিসংখ্যান বলছে, বছরের শেষ ছয়মাস জুলাই-ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে এক হাজার ৭৯ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে জুলাই মাসেই আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; সেপ্টেম্বরে আসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; অক্টোররে আসে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার; নভেম্বর মাসে ১৯৩ কোটি ৪০ হাজার এবং বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে আসে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার।

সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। তার আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন ছিল। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।