নিজস্ব প্রতিবেদক :
রোগীর সুরক্ষা, আর্থিক বরাদ্দ ও ধারাবাহিকতা, জবাবদিহিতা ও জরুরি প্রস্তুতি নিশ্চিত করাসহ পুরোনো আইন পর্যালোচনা ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি ৭টি নতুন আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন।
সোমবার (৫ মে) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে আজাদ খান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোগীর সুরক্ষা, আর্থিক বরাদ্দ ও ধারাবাহিকতা, জবাবদিহিতা ও জরুরি প্রস্তুতি নিশ্চিত করার জন্য সব সংশ্লিষ্ট পুরাতন আইন পর্যালোচনা ও যুগোপযোগী করতে হবে। নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে।
কমিশনের প্রস্তাবিত নতুন আইনগুলোর মধ্যে প্রধানগুলো হলো- বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন আইন, বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস আইন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা আইন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন, ঔষধের মূল্য নির্ধারণ ও প্রবেশাধিকার আইন অ্যালায়েড হেলথ প্রোফেশনাল কাউন্সিল আইন ও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল আইন। এ ছাড়াও রয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও রোগী নিরাপত্তা, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক এক্রেডিটেশন, বনাগলাদেশ সেইফ ফুড ড্রাগ আইভিডি ও মেডিকেল ডিভাইস।
এদিকে যেসব আইন সংশোধন মনে করেছে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন সেগুলো হলো- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, মেডিকেল শিক্ষা একরেডিটেশন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল, বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, পৌর ও সিটি কর্পোরেশন আইন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একটি স্বতন্ত্র পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করতে হবে। যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নির্বাচনি প্রক্রিয়া ও নিয়োগের সুপারিশ করার জন্য উচ্চপর্যায়ের সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ন পদগুলোতে নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগ্যতা সম্পর্কে জাতীয় সংসদকে অবহিত করতে হবে।
গ্রামে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুপারিশে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন বলেছে, গ্রামে এবং শহরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে চিকিৎসক নিয়োগ করতে হবে। গ্রামে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও উপকেন্দ্র ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র একত্র করে এবং শহরে ওয়ার্ডভিত্তিক কেন্দ্র গড়ে। প্রথম স্তরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রেফারেল ব্যবস্থা কাঠামো ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাধ্যতামুলক রেফারেল ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে রোগী সঠিক সময়ে সেবা পায় এবং উচ্চতর প্রতিষ্ঠানে ভির কমে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ -প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন এর প্রধান অধ্যাপক এ কে আজাদ খান এবং কমিশনের সদস্য- অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী, অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার, অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, সাবেক সচিব এস এম রেজা, অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, ডা. আজহারুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।
২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর জাতীয় অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে প্রধান করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠিত হয়। কমিটিতে দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সাবেক আমলাসহ একজন ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছেন।