ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি :
আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, গণপরিষদের নির্বাচনের দাবি তুলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচনকে বিলম্বত করা যাবে না। কারণ, এখানে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অনির্বাচিত ও অগণতান্ত্রিক সরকার এ দেশে মাথা গোঁজার চেষ্টা করছে, সেটা আমরা হতে দেব না।
শনিবার (১৫ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কেউ কেউ বলছেন দেশে একটি গণপরিষদ হবে, গণপরিষদ করার দায়িত্ব কে দিয়েছে তাদের? আমরা বলব সংস্কার বা গণপরিষদের নামে কোনো কালক্ষেপণ না করে যত দ্রুত সম্ভব এদেশে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার প্রধান হিসেবে বর্তমান সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছেন, তাকে শপথ রক্ষা করতে হবে। সংসদ নির্বাচন সবার আগে দিতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন করা যাবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, হাসিনা গত ১৬ বছর ভোট করেনি বলেই বিদায় নিতে হয়েছে। এভাবে পালাতে হয়েছে তাকে। দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা আর যাতে ফিরে না আসে সে জন্য দরকার একটি সুন্দর নির্বাচন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার আগে দিতে হবে। ১৮ মাসের মধ্যে আমরা নির্বাচনের দাবি করছি। ১৮ মাসের বাইরে ১৮ দিনও সময় দিতে আমরা রাজি নই। ১৮ মাসের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ করতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশ একটা সংকটের মধ্যে আছে। সংকটটা হচ্ছে প্রধানত গণতন্ত্র নিয়ে। গত ১৬ বছরে কোনো নির্বাচন হয়নি। এই নির্বাচনটির জন্যই শেখ হাসিনাকে বিদায় নিতে হয়েছে। জনগণ ভোট দিতে পারেনি। বিগত বছরগুলো জনগণের ভোট ছাড়া সরকার চলেছে। এই সরকার জনগণের কোনো তোয়াক্কা করেনি। যাকে ইচ্ছা তাকে গুম করেছে, হত্যা করেছে। কোনো নিয়ম নীতির মধ্যে দেশ পরিচালিত হয়নি।
ড. রিপন বলেন, এখন দেশে জবাবদিহি সরকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। সে জন্য একটি ভালো নির্বাচন করা দরকার। নানাভাবে নানা ছল-চাতুরীর মধ্যে দিয়ে বলা হয় এখন নির্বাচন নয়,সংস্কারের পরে নির্বাচন। আবার কেউ বলছেন, শহীদের রক্তের দাগ শুকানোর আগ পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে না। সারা পৃথিবীতে অভ্যুত্থানের পর পরই নির্বাচন হয়েছে। জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্যই একটি নির্বাচনের প্রয়োজন এসেছে। সুতরাং সেই নির্বাচনকে পাশ কাটানোর কোনো সুযোগ নেই। ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য যদি দলকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়, সেই দায়দায়িত্ব কিন্তু দল গ্রহণ করবে না। কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দায় দল নেবে না। ১৬ বছর অনেক কষ্ট শিকার করেছেন আপনারা। সুতরাং, এমন কোনো লোভের বশবর্তী হয়ে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে জয়যুক্ত হতে হবে, তাই সকলে ধৈর্য ধরুন।’
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ রিংকুর সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদারেস আলী ইছা, বিএনপি নেতা সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল, মো. আজম খান, রশিদুল ইসলাম লিটন প্রমুখ। এ ছাড়া বৃহত্তর ফরিদপুর জেলাগুলোর নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।