Dhaka মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংক্রমণ না কমার পেছনে মশা নিধনে ব্যর্থতা দায়ী: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ না কমার পেছনে মশা নিধনে ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমরা যতই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিই না কেন, মশা না কমলে দেশে ডেঙ্গু রোগীও কমবে না।

বুধবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।

জাহিদ মালেক বলেন, সেবা যতটুকু দেওয়া সম্ভব আমরা দিচ্ছি। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক। ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ৫শ মানুষের মৃত্যু এবং এক লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে। মশা যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার সেভাবে হচ্ছে না বলেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমছে না। তবে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে কিন্তু আমাদের সেবা নিয়ে মানুষের অভিযোগ নেই।

তিনি বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আসেনি বিধায় এ ৫০০ মানুষ মারা গেছে। কাজেই মশা নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন, বিভিন্ন জায়গায় স্প্রে করা প্রয়োজন। সেই স্প্রেটা আরও জোরদার করতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় এ কাজটি আরও জোরদার করতে হবে। তারা যেন সঠিক ওষুধ ব্যবহার করে। ভেজাল ওষুধ যাতে ব্যবহার না করে।

এ সময় মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আশপাশের দেশের থেকে বাংলাদেশে পরিস্থিতি খারাপ। সবাইকে যার যার জায়গায় দায়িত্ব পালন করতে হবে। সিটি করপোরেশনগুলো যেন ভেজাল ওষুধ না ছিটায় সে আহ্বান জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেবা দিচ্ছে, সেবা নিয়ে মানুষ সন্তুষ্ট। কিন্তু মশা না কমলে ডেঙ্গুরোগী কমবে না এবং মৃত্যু কমবে না। এজন্য যার যা দায়িত্ব তা পালন করলে ভালো হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু বাড়ছে, এটাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, উনারা (বিশ্বব্যাংক) সাহায্য-সহযোগিতা করবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ১০০ মিলিয়ন ডলার দেবে। মশা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এ অর্থায়ন দেবে তারা।

করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্বব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেছি। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমাদের করোনার টিকা তৈরির উদ্যোগকে প্রতিনিধিদল স্বাগত জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করার কথা বলেছেন। এরই মধ্যে আমরা অর্থায়নের কমিটমেন্ট পেয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন প্ল্যান্টের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। প্রয়োজনে আরও চাইবো। সরকারও এ বিষয়ে অর্থায়ন করবে। জমি কিনেছি, বাকি কাজও চলমান। ডিডিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) তৈরি করেছি, এটি পাস করতে এননেকে নিয়ে যাবো।

তিনি বলেন, যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছেন তাদের ছাড়াও তারা যেখানে আছেন সেখানকার স্থানীয় জনগণকে বিশ্বব্যাংক সহায়তা করছে এবং করে যাবে। সহায়তার পরিমাণও বাড়ানো হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ভ্যাকসিন তৈরিতে পাঁচ বছরে ২৭ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ২২ বিলিয়ন ব্যবস্থা করবে। মাল্টিসেক্টরাল ফান্ডিংয়ে আমরা বলেছি ৫ বিলিয়ন লাগবে। এ পর্যন্ত উনারা কমিটমেন্ট দিয়েছে পর্যায়ক্রমে ৫ বিলিয়ন ডলারে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এরই মধ্যে দুই থেকে আড়াই বিলিয়নের কমিটমেন্ট হাতে আছে। বাকিটা তারা ধীরে ধীরে আগামী পাঁচ বছরে ব্যবস্থা করবেন।

তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য ফিফট সেক্টর প্রোগ্রামে কীভাবে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে সে বিষয়ে প্রতিনিধিদল আলোচনা করেছেন। কোভিডের বিষয়ে বাংলাদেশ খুব ভালো করেছে বলে তারা বলেছেন। আমরা যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছি তার প্রশংসাও করেছেন। উনারা বলেছেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করতে হবে, যেন মা ও শিশু মৃত্যুহার কমে। পুষ্টির বিষয়ে জোর দিতে বলেছেন। আবার প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের বিষয়ে জোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামগঞ্জে সেবা দিয়ে থাকে, কিন্তু শহরে সেই সেবা নেই। এটি আমরাও তুলে ধরেছি, এখানে আমরা উন্নয়ন করতে চাই। যেন শহরবাসীও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পান।

অন্য এক প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, ৫ বিলিয়ন ডলার আমরা পাবো আশা করি। আগামী পাঁচ বছরের জন্য ফিফট সেক্টর প্রোগ্রামে এটি ২৭ বিলিয়ন ডলারের অংশ। স্বাস্থ্যখাতের সব খাতেই এটি ব্যবহার হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও নিউট্রিশনে ব্যবহার হবে। হেলথ কেয়ারেও ব্যবহার হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও ভালো ফান্ড পাবে।

আবহাওয়া

সংক্রমণ না কমার পেছনে মশা নিধনে ব্যর্থতা দায়ী: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৭:১৮:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ না কমার পেছনে মশা নিধনে ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমরা যতই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিই না কেন, মশা না কমলে দেশে ডেঙ্গু রোগীও কমবে না।

বুধবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।

জাহিদ মালেক বলেন, সেবা যতটুকু দেওয়া সম্ভব আমরা দিচ্ছি। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক। ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ৫শ মানুষের মৃত্যু এবং এক লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে। মশা যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার সেভাবে হচ্ছে না বলেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমছে না। তবে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে কিন্তু আমাদের সেবা নিয়ে মানুষের অভিযোগ নেই।

তিনি বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আসেনি বিধায় এ ৫০০ মানুষ মারা গেছে। কাজেই মশা নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন, বিভিন্ন জায়গায় স্প্রে করা প্রয়োজন। সেই স্প্রেটা আরও জোরদার করতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় এ কাজটি আরও জোরদার করতে হবে। তারা যেন সঠিক ওষুধ ব্যবহার করে। ভেজাল ওষুধ যাতে ব্যবহার না করে।

এ সময় মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আশপাশের দেশের থেকে বাংলাদেশে পরিস্থিতি খারাপ। সবাইকে যার যার জায়গায় দায়িত্ব পালন করতে হবে। সিটি করপোরেশনগুলো যেন ভেজাল ওষুধ না ছিটায় সে আহ্বান জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেবা দিচ্ছে, সেবা নিয়ে মানুষ সন্তুষ্ট। কিন্তু মশা না কমলে ডেঙ্গুরোগী কমবে না এবং মৃত্যু কমবে না। এজন্য যার যা দায়িত্ব তা পালন করলে ভালো হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু বাড়ছে, এটাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, উনারা (বিশ্বব্যাংক) সাহায্য-সহযোগিতা করবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ১০০ মিলিয়ন ডলার দেবে। মশা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এ অর্থায়ন দেবে তারা।

করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্বব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেছি। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমাদের করোনার টিকা তৈরির উদ্যোগকে প্রতিনিধিদল স্বাগত জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করার কথা বলেছেন। এরই মধ্যে আমরা অর্থায়নের কমিটমেন্ট পেয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন প্ল্যান্টের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। প্রয়োজনে আরও চাইবো। সরকারও এ বিষয়ে অর্থায়ন করবে। জমি কিনেছি, বাকি কাজও চলমান। ডিডিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) তৈরি করেছি, এটি পাস করতে এননেকে নিয়ে যাবো।

তিনি বলেন, যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছেন তাদের ছাড়াও তারা যেখানে আছেন সেখানকার স্থানীয় জনগণকে বিশ্বব্যাংক সহায়তা করছে এবং করে যাবে। সহায়তার পরিমাণও বাড়ানো হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ভ্যাকসিন তৈরিতে পাঁচ বছরে ২৭ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ২২ বিলিয়ন ব্যবস্থা করবে। মাল্টিসেক্টরাল ফান্ডিংয়ে আমরা বলেছি ৫ বিলিয়ন লাগবে। এ পর্যন্ত উনারা কমিটমেন্ট দিয়েছে পর্যায়ক্রমে ৫ বিলিয়ন ডলারে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এরই মধ্যে দুই থেকে আড়াই বিলিয়নের কমিটমেন্ট হাতে আছে। বাকিটা তারা ধীরে ধীরে আগামী পাঁচ বছরে ব্যবস্থা করবেন।

তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য ফিফট সেক্টর প্রোগ্রামে কীভাবে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে সে বিষয়ে প্রতিনিধিদল আলোচনা করেছেন। কোভিডের বিষয়ে বাংলাদেশ খুব ভালো করেছে বলে তারা বলেছেন। আমরা যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছি তার প্রশংসাও করেছেন। উনারা বলেছেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করতে হবে, যেন মা ও শিশু মৃত্যুহার কমে। পুষ্টির বিষয়ে জোর দিতে বলেছেন। আবার প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের বিষয়ে জোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামগঞ্জে সেবা দিয়ে থাকে, কিন্তু শহরে সেই সেবা নেই। এটি আমরাও তুলে ধরেছি, এখানে আমরা উন্নয়ন করতে চাই। যেন শহরবাসীও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পান।

অন্য এক প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, ৫ বিলিয়ন ডলার আমরা পাবো আশা করি। আগামী পাঁচ বছরের জন্য ফিফট সেক্টর প্রোগ্রামে এটি ২৭ বিলিয়ন ডলারের অংশ। স্বাস্থ্যখাতের সব খাতেই এটি ব্যবহার হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও নিউট্রিশনে ব্যবহার হবে। হেলথ কেয়ারেও ব্যবহার হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও ভালো ফান্ড পাবে।