পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, শুধু দেশে না, দেশের বাইরে থেকে চক্রান্ত হচ্ছে। শেখ হাসিনা দেশের মানুষের যে লাখ কোটি টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে সেগুলো দিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। সরকার তার জায়গা থেকে সচেতন থাকবে, রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের জায়গা থেকে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে ফুলের বাগান ও পানির ফোয়ারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, আমরা যেন কথা, মতামত বা পদক্ষেপের মাধ্যমে নতুন করে ফ্যাসিস্ট বা তাদের দোসরকে সুযোগ না দেই। তারা চাইবে আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরাতে। তারা এ সুযোগটা নিয়ে স্বার্থ হাসিল করবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা গত ৫ আগস্টে প্রমাণ করে দিয়েছেন, তারা ছাগলের উত্তরসূরি। বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট বিবেকবান। এ দেশের মানুষ তাদের পাত্তা দেয় না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মানুষের স্বপ্ন ও স্প্রিটকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মনে করি, এই গুজবগুলোকে পাত্তা দিলে আমাদের শুধু সময় নষ্ট ছাড়া কিছুই হবে না।
সারজিস আলম বলেন, আমাদের বিভিন্ন কথা, মতামত কিংবা পদক্ষেপের মাধ্যমে নতুন করে ফ্যাসিস্ট কিংবা তাদের দোসরদের সুযোগ না দেই। তারা চাইবে আমাদের ঐক্যের ফাটল ঘটাতে। যখন আমরা নিজের সঙ্গে নিজেরা বিভাজনে লিপ্ত হবো তারা এই সুযোগটা নিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিল করবে।
সারজিস বলেন, আমরা কখনোই মনে করি না যে, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আলাদা ফরমেটের সরকার প্রয়োজন আছে। ড. মুহম্মদ ইউনূস প্রধান দ্বায়িত্বে রয়েছেন এবং আমরা মনে করি তার হাত ধরেই বাংলাদেশে নতুন করে গণতন্ত্রের যে দ্বার উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন, যেটি উন্মোচিত হতে পারে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের ভিত্তিতে, সেই স্বচ্ছ নির্বাচন আমরা বাংলাদেশের মাটিতে দেখতে পাবো।
জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার বিষয় মনে করিয়ে দিয়ে সারজিস বলেন, আমরা মনে করি, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। জাতীয় ঐক্যের জন্য সবার আগে যেকোনো ব্যক্তি, দল, গোষ্ঠীর স্বার্থের আগে বাংলাদেশের স্বার্থ চিন্তা করতে হবে। এখন আমরা যদি সেটা চিন্তা করতে পারি, তাহলে আমরা যে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করি, এই অভ্যুত্থানের যে স্পিরিট, সেটা সফল হওয়া সম্ভব।
সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে এই মুখ্য সংগঠক আরো বলেন, এই খুনি হাসিনা, তিনি দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশের মানুষের লক্ষ-কোটি টাকা চুরি করে নিয়ে গিয়ে সেগুলো দিয়ে এখন প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন, চক্রান্ত করছেন। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। অর্ন্তবর্তী সরকার তার জায়গা থেকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোরও তাদের জায়গা থেকে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
এক প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির মাঠে পক্ষে বিপক্ষে কথা থাকবে যেকোন বিষয়ে। এটাই এটাই সৌন্দর্য। এটাই ডেমোক্রেসির চর্চা। আমরা মনে করি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার কিংবা রাজনীতিতে যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন তাদের মতের মধ্যে দ্বিমত থাকবে, বৈচিত্র্য থাকবে আবার যৌক্তিক বিষয়ে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হবেন। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। কিন্তু আমরা যে জিনিসটা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, আমরা যেন আমাদের এই ভিন্ন কথা, মতামত কিংবা পদক্ষেপের মাধ্যমে নতুন করে আবার ওই ফ্যাসিস্ট কিংবা তাদের দোসরদের সুযোগ না দিই।