নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।
শনিবার (১০ মে) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ গেজেট জারি করা হলে রোববার (১১ মে) বিষয়টি জানা গেছে।
প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (দ্বিতীয় সংশোধনী) অর্ডিন্যান্স, ২০২৫ প্রণয়ন ও জারি করেছেন।
সংশোধিত গেজেটে বলা হয়েছে, কোনও সংগঠন অর্থাৎ কোনও রাজনৈতিক দল, অথবা সেই দলের অধীনস্ত, সংশ্লিষ্ট বা সহযোগী কোনও সত্তা, অথবা এমন কোনও ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে বোঝায় যা ট্রাইব্যুনালের অভিমত অনুযায়ী, ওই দল বা সত্তার কার্যকলাপ প্রচার, সমর্থন, অনুমোদন, সহায়তা বা সম্পৃক্ততার মাধ্যমে জড়িত থাকে।
সংগঠনের জন্য শাস্তির ক্ষেত্রে বলা হয়, এই আইনে বা তৎকালীন প্রযোজ্য অন্য কোনও আইনে যাই থাকুক, যদি ট্রাইব্যুনালের কাছে প্রতীয়মান হয়, কোনও সংগঠন এই আইনের ৩ ধারার উপ-ধারা (২) অনুযায়ী উল্লিখিত অপরাধগুলো করেছে, নির্দেশ দিয়েছে, চেষ্টা করেছে, সহায়তা করেছে, প্ররোচিত করেছে, উসকানি দিয়েছে, ষড়যন্ত্র করেছে, সহজতর করেছে বা সহযোগিতা করেছে, তাহলে ট্রাইব্যুনাল সেই সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ করার, সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণার, তার নিবন্ধন বা লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করার এবং তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা রাখবে।
এদিকে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে জানিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ। জনরোষের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের হিসাব মতে, ওই অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার হাসিনার নির্দেশে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলাসহ সহিংসতায় এক হাজার চারশ’ জন নিহত হন। আহত হন হাজার হাজার মানুষ। যাদের মধ্যে কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, কেউ হারিয়েছেন চোখের আলো।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত তিন দিন ধরে টানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ছাত্র-জনতা। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের বিষয়ে ওই সিদ্ধান্ত জানায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















