Dhaka শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুরে ১১ মাসে ৪১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১৩

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত ১১ মাসে রংপুর অঞ্চলের আশঙ্কাজনকভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। এই সময়ে ৪১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১৩ জন নিহত এবং ৪৬৪ জন আহত হয়েছেন। এদের অনেকেই পঙ্গুত্বের ঝুঁকিসহ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

দুর্ঘটনাজনিত এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৯০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক আইন অমান্য করায় বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে ১৪ হাজার ৭৫৮টি মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ, যা থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জিত হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়ন সূত্রে জানা গেছে, রিজিয়নের আওতায় তেঁতুলিয়া, বোদা, সাতমাইল, তারাগঞ্জ, বড়দরগা, গোবিন্দগঞ্জ ও হাতীবান্ধা এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের থানা রয়েছে। এসব থানার আওতায় রয়েছে ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক এবং ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক। প্রতিদিন এসব সড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্তে যাত্রীপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের চাপ, সড়কের কিছু অংশের নাজুক অবস্থা এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোসহ অসতর্কতা-অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।

দুই মাস আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শিকার হন নাট্যকার ও ভাওয়াইয়া গবেষক আশরাফুজ্জামান বাবু। তিনি রংপুরের বদরগঞ্জ থেকে শহরের দিকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। তার মুখে ও ঠোঁটে বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করা যুবক রাশেদ এখন হুইলচেয়ারে বন্দি। একসময় যে মানুষটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল, আজ সে বোঝা হয়ে গেছে নিজের কাছেই।

রংপুর নগরীর নজিরেরহাট এলাকার আব্দুর রহিম অনিক গত ২৪ সেপ্টেম্বর বদরগঞ্জ রোডে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও সন্তানসহ গুরুতর আহত হন। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। পারিবারিকভাবে অসচ্ছল অনিকের পরিবার ধারদেনা করে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখন একদিকে ঋণ পরিশোধের চিন্তা অন্যদিকে চিকিৎসাযর ব্যয়।

বাবু-রাশেদ-অনিকের মতো এমন অনেকই আছেন আড়ালে, যাদের দুর্ঘটনার খবর থাকে অজানা। অথচ ভোরের আলো ফোটার আগেই রংপুরের মহাসড়কগুলো জেগে ওঠে। কেউ যায় জীবিকার খোঁজে, কেউ ফিরে আপন নীড়ে। কিন্তু এই পথই যেন অনেকের জন্য হয়ে উঠছে শেষ গন্তব্য। প্রতিদিনের যাত্রার আড়ালে লুকিয়ে থাকে অনিশ্চিত মৃত্যু, অশ্রু আর নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার গল্প।

এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ ও দুর্ঘটনা রোধে সড়কগুলোতে নিয়মিত টহল, যানবাহন তল্লাশি ও আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করছে হাইওয়ে পুলিশ । পাশাপাশি চালক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তারা। সেই সাথে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের সড়ক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে হাইওয়ে পুলিশ।

সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতে, সড়কে নিয়মিত নজরদারি থাকলেও চালকদের একাংশ আইন মানতে অনীহা দেখাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ চালকের অভাব, বিশ্রাম ছাড়া দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানো এবং যান্ত্রিক ত্রুটিও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠছে।

তারা মনে করেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, চালকদের মানবিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করাও জরুরি। বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানো, অদক্ষ চালক দিয়ে যানবাহন পরিচালনা এবং লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালানোর প্রবণতা বন্ধ না হলে এই মৃত্যু মিছিল থামবে না। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের পুলিশ সুপার আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত গতি, বেপরোয়া ওভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং অদক্ষ চালকই অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ। রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক ও ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কে নিয়মিত টহল এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ভবিষ্যতে নজরদারি আরও জোরদার করা হবে। দুর্ঘটনা কমাতে গতি নিয়ন্ত্রণ, ফিটনেসহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনাও পরিকল্পনাও রয়েছে।

এদিকে, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, গত নভেম্বর মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩১৭ জন। আগের মাস অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ১৪ দশমিক ২২ জন। নভেম্বর মাসে নিহত হয়েছেন ১৬ দশমিক ১ জন। সেই হিসেবে নভেম্বর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৫টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৭১টি শহরের সড়কে এবং ৫টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ১২২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৫৯টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্ম ঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজিকে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি

রংপুরে ১১ মাসে ৪১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১৩

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত ১১ মাসে রংপুর অঞ্চলের আশঙ্কাজনকভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। এই সময়ে ৪১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১৩ জন নিহত এবং ৪৬৪ জন আহত হয়েছেন। এদের অনেকেই পঙ্গুত্বের ঝুঁকিসহ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

দুর্ঘটনাজনিত এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৯০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক আইন অমান্য করায় বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে ১৪ হাজার ৭৫৮টি মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ, যা থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জিত হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়ন সূত্রে জানা গেছে, রিজিয়নের আওতায় তেঁতুলিয়া, বোদা, সাতমাইল, তারাগঞ্জ, বড়দরগা, গোবিন্দগঞ্জ ও হাতীবান্ধা এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের থানা রয়েছে। এসব থানার আওতায় রয়েছে ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক এবং ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক। প্রতিদিন এসব সড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্তে যাত্রীপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের চাপ, সড়কের কিছু অংশের নাজুক অবস্থা এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোসহ অসতর্কতা-অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।

দুই মাস আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শিকার হন নাট্যকার ও ভাওয়াইয়া গবেষক আশরাফুজ্জামান বাবু। তিনি রংপুরের বদরগঞ্জ থেকে শহরের দিকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। তার মুখে ও ঠোঁটে বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করা যুবক রাশেদ এখন হুইলচেয়ারে বন্দি। একসময় যে মানুষটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল, আজ সে বোঝা হয়ে গেছে নিজের কাছেই।

রংপুর নগরীর নজিরেরহাট এলাকার আব্দুর রহিম অনিক গত ২৪ সেপ্টেম্বর বদরগঞ্জ রোডে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও সন্তানসহ গুরুতর আহত হন। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। পারিবারিকভাবে অসচ্ছল অনিকের পরিবার ধারদেনা করে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখন একদিকে ঋণ পরিশোধের চিন্তা অন্যদিকে চিকিৎসাযর ব্যয়।

বাবু-রাশেদ-অনিকের মতো এমন অনেকই আছেন আড়ালে, যাদের দুর্ঘটনার খবর থাকে অজানা। অথচ ভোরের আলো ফোটার আগেই রংপুরের মহাসড়কগুলো জেগে ওঠে। কেউ যায় জীবিকার খোঁজে, কেউ ফিরে আপন নীড়ে। কিন্তু এই পথই যেন অনেকের জন্য হয়ে উঠছে শেষ গন্তব্য। প্রতিদিনের যাত্রার আড়ালে লুকিয়ে থাকে অনিশ্চিত মৃত্যু, অশ্রু আর নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার গল্প।

এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ ও দুর্ঘটনা রোধে সড়কগুলোতে নিয়মিত টহল, যানবাহন তল্লাশি ও আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করছে হাইওয়ে পুলিশ । পাশাপাশি চালক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তারা। সেই সাথে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের সড়ক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে হাইওয়ে পুলিশ।

সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতে, সড়কে নিয়মিত নজরদারি থাকলেও চালকদের একাংশ আইন মানতে অনীহা দেখাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ চালকের অভাব, বিশ্রাম ছাড়া দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানো এবং যান্ত্রিক ত্রুটিও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠছে।

তারা মনে করেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, চালকদের মানবিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করাও জরুরি। বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানো, অদক্ষ চালক দিয়ে যানবাহন পরিচালনা এবং লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালানোর প্রবণতা বন্ধ না হলে এই মৃত্যু মিছিল থামবে না। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের পুলিশ সুপার আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত গতি, বেপরোয়া ওভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং অদক্ষ চালকই অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ। রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক ও ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কে নিয়মিত টহল এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ভবিষ্যতে নজরদারি আরও জোরদার করা হবে। দুর্ঘটনা কমাতে গতি নিয়ন্ত্রণ, ফিটনেসহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনাও পরিকল্পনাও রয়েছে।

এদিকে, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, গত নভেম্বর মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩১৭ জন। আগের মাস অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ১৪ দশমিক ২২ জন। নভেম্বর মাসে নিহত হয়েছেন ১৬ দশমিক ১ জন। সেই হিসেবে নভেম্বর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৫টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৭১টি শহরের সড়কে এবং ৫টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ১২২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৫৯টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্ম ঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজিকে।