আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
উত্তর কোরিয়ার বন্দিশালা থেকে অবশেষে মুক্তি পেলেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য ট্র্যাভিস কিং। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশেষ সামরিক বিমানে টেক্সাসে নিয়ে আসা হয় কিংকে। দুমাস ধরে কিমের দেশে বন্দি থাকার পর অবশেষে নিজের দেশে পৌঁছালেন তিনি।
গত জুলাই মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ায় ঢুকে পড়েন মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য ট্র্যাভিস কিং। তারপর বছর তেইশের ওই মার্কিন সেনাকে হেফাজতে নেয় উত্তর কোরিয়ার সেনা।
জেরায় কিং জানান, মার্কিন বাহিনীতে চরমে পৌঁছেছে কৃষ্ণাঙ্গ বিদ্বেষ। সেনায় বৈষম্য ও অমানবিক আচরণ সহ্য করতে না পেরেই তিনি পালিয়ে এসেছেন। কিংকে নিয়ে তুমুল উত্তেজনা শুরু হয় পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে।
একজন সিনিয়র কর্মকর্তার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কয়েক মাসের জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর ট্র্যাভিস কিং যুক্তরাষ্ট্রের হাতে ফিরে এসেছেন এবং তিনি তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিং তার বাড়িতে ফেরার সুযোগ পেয়ে খুব খুশি এবং তিনি তার পরিবারের সাথে পুনরায় মিলিত হওয়ার জন্য খুব উন্মুখ হয়ে আছেন।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, এদিন মার্কিন সেনার যৌথ ঘাঁটি আন্তোনিও-ফোর্ট স্যাম হিউস্টনে পৌঁছন কিং। সেখানে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে সেনা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এবিষয়ে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, কিংকে কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তারপর তাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে কিমের প্রশাসন সুর নরম করে কেন আমেরিকার হাতে কিংকে তুলে দিল সেই বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মার্কিন বাহিনীর নির্দেশ মোতাবেক দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন ছিলেন ট্র্যাভিস কিং। তবে সেখানে মারামারির একটি ঘটনায় তাকে দুমাস জেলে থাকতে হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরলে কিংকে অনুশাসন ভঙের মামলার মুখোমুখি হতে হতো। কিন্তু তার আগেই সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ায় চলে যান কৃষ্ণাঙ্গ ওই সেনা। এরপর জল অনেক দূর গড়িয়ে যায়। এবার যখন কিং আমেরিকায় ফিরে এসেছেন মার্কিন প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ করে কি না সেটাই দেখার।
এর আগে বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা জানায়, পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি ট্র্যাভিস কিংকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্ণ বৈষম্য এবং অমানুষিক আচরণে মোহভঙ্গের কারণে উত্তর কোরিয়ায় চলে গিয়েছিলেন মার্কিন সৈনিক ট্র্যাভিস কিং। তাকে আটকের পর উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে বলেছিল, ট্র্যাভিস কিং তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, মার্কিন সেনাবাহিনীতে বর্ণবাদী বৈষম্য এবং অমানবিক আচরণে জমে থাকা ক্ষোভের কারণেই তিনি উত্তর কোরিয়ায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।