Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধের বিল পাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটককে নিষিদ্ধ করতে একটি বিল পাস করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস। এতে চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সকে টিকটক নিয়ন্ত্রণের অংশ বিক্রি করতে ছয় মাস সময় দেওয়া হবে, অথবা অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ করা হবে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তা বিরোধিতা করার ঘোষণা দিয়েছে চীন।

বুধবার (১৩ মার্চ) প্রতিনিধি পরিষদে হয় এ বিষয়ক ভোটাভুটি। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।

৩৫২-৬৫ ভোটে পাস হয় বিলটি। এর মধ্য দিয়ে টিকটকের চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইট ডান্সকে ছয় মাসের সময় বেধে দেয়া হয়েছে অ্যাপটি বিক্রির জন্য। নয়তো যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে যেতে পারে অ্যাপটির ব্যবহার। কংগ্রেসের পর এবার লাগবে সিনেটের অনুমোদন। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে বিলটি।

মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ব্যাপক ভোটে বিলটি পাস হয়। এখন তা সিনেটে পাস হলে আইনে পরিণত হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট তাতে সই করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা টিকটকের উপর চীনের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২০১২ সালে চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স টিকটক তৈরি করে। বেইজিং ভিত্তিক এই আইটি ফার্মটি কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত। এছাড়া ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অফিস রয়েছে।

এদিকে বিলটি যদি সিনেটে পাস হয় তাহলে টেবিলে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাতে সই করার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে এমনটা হলে তা চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে জোরপূর্বক এই বিক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাইটড্যান্সকে চীনের কর্মকর্তাদের অনুমতি নিতে হবে। ইতোমধ্যে তা বিরোধিতা করার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বুমেরাং হবে।

বিলটি প্রস্তুতকারীদের একজন উইসকনসিন রাজ্যের রিপাবলিকান সদস্য মাইক গ্যালাঘের। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘আমেরিকার একটি প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্মের উপস্থিতির ঝুঁকি নিতে পারে না, যে কোম্পানির পেছনে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব রয়েছে।’

চীনের কোম্পানিগুলো দেশটির একটি জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীন রয়েছে। ফলে অনুরোধের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চীন সরকারকে যেকোনো তথ্য দিতে হবে।
তবে বাইটড্যান্স আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে এই বলে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেড় কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য চীনের বাইটড্যান্স কর্মীদের কাছ থেকে সংরক্ষিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

টিকটকের প্রধান নির্বাহী শো জি চিউ বলেছেন, তার কোম্পানি ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে এবং প্ল্যাটফর্মটিকে ‘বাইরের কারসাজি থেকে মুক্ত’ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বিলটি পাসের অর্থ হবে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা, ‘মুষ্টিমেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিকে আরও ক্ষমতা দেওয়া’। এতে করে এছাড়া হাজার হাজার আমেরিকানের চাকরিকে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭০ মিলিয়ন। তবে চীনের অ্যাপগুলোকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, এগুলোর মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করা হয় বেইজিংকে। যদিও ব্যবহারকারীদের তথ্য নিরাপদে রাখার দাবি প্রতিষ্ঠানটির। টিকটক নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আন্দোলন করছে মার্কিন ব্যবহারকারীরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মব জাস্টিস সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করে না : রিজওয়ানা হাসান

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধের বিল পাশ

প্রকাশের সময় : ০৪:১৪:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটককে নিষিদ্ধ করতে একটি বিল পাস করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস। এতে চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সকে টিকটক নিয়ন্ত্রণের অংশ বিক্রি করতে ছয় মাস সময় দেওয়া হবে, অথবা অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ করা হবে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তা বিরোধিতা করার ঘোষণা দিয়েছে চীন।

বুধবার (১৩ মার্চ) প্রতিনিধি পরিষদে হয় এ বিষয়ক ভোটাভুটি। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।

৩৫২-৬৫ ভোটে পাস হয় বিলটি। এর মধ্য দিয়ে টিকটকের চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইট ডান্সকে ছয় মাসের সময় বেধে দেয়া হয়েছে অ্যাপটি বিক্রির জন্য। নয়তো যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে যেতে পারে অ্যাপটির ব্যবহার। কংগ্রেসের পর এবার লাগবে সিনেটের অনুমোদন। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে বিলটি।

মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ব্যাপক ভোটে বিলটি পাস হয়। এখন তা সিনেটে পাস হলে আইনে পরিণত হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট তাতে সই করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা টিকটকের উপর চীনের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২০১২ সালে চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স টিকটক তৈরি করে। বেইজিং ভিত্তিক এই আইটি ফার্মটি কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত। এছাড়া ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অফিস রয়েছে।

এদিকে বিলটি যদি সিনেটে পাস হয় তাহলে টেবিলে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাতে সই করার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে এমনটা হলে তা চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে জোরপূর্বক এই বিক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাইটড্যান্সকে চীনের কর্মকর্তাদের অনুমতি নিতে হবে। ইতোমধ্যে তা বিরোধিতা করার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বুমেরাং হবে।

বিলটি প্রস্তুতকারীদের একজন উইসকনসিন রাজ্যের রিপাবলিকান সদস্য মাইক গ্যালাঘের। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘আমেরিকার একটি প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্মের উপস্থিতির ঝুঁকি নিতে পারে না, যে কোম্পানির পেছনে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব রয়েছে।’

চীনের কোম্পানিগুলো দেশটির একটি জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীন রয়েছে। ফলে অনুরোধের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চীন সরকারকে যেকোনো তথ্য দিতে হবে।
তবে বাইটড্যান্স আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে এই বলে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেড় কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য চীনের বাইটড্যান্স কর্মীদের কাছ থেকে সংরক্ষিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

টিকটকের প্রধান নির্বাহী শো জি চিউ বলেছেন, তার কোম্পানি ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে এবং প্ল্যাটফর্মটিকে ‘বাইরের কারসাজি থেকে মুক্ত’ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বিলটি পাসের অর্থ হবে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা, ‘মুষ্টিমেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিকে আরও ক্ষমতা দেওয়া’। এতে করে এছাড়া হাজার হাজার আমেরিকানের চাকরিকে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭০ মিলিয়ন। তবে চীনের অ্যাপগুলোকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, এগুলোর মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করা হয় বেইজিংকে। যদিও ব্যবহারকারীদের তথ্য নিরাপদে রাখার দাবি প্রতিষ্ঠানটির। টিকটক নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আন্দোলন করছে মার্কিন ব্যবহারকারীরা।