বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :
দুইদিন সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি থেকে অবশেষে মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্ত হয়েছে লামা উপজেলার বিভিন্ন রবার বাগানের ২৬ রাবার শ্রমিক।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে লামা উপজেলার সীমান্ত পেরিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা অতিক্রম করে কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁয় নিয়ে একটি দুর্গম পাহাড়ে তাদের ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন অপহৃত ২৬ শ্রমিককে মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মুক্তিপ্রাপ্ত শ্রমিকরা হলেন- মো. ফারুক (২৬), মো. আইয়ুব আলী (২৬), মো. সিদ্দিক (৪০), মো. আব্দুল খালেক (২০), আব্দুল মাজেদ (১৭), মনিরুল ইসলাম (৩০), জিয়াউর রহমান (৪৫), মো. মোবারক (২৫), মো. হারুল (৩০), সৈয়দ নুর (২৮), রমিজ উদ্দিন (৩০), মো. কায়ছার (৩৮), মো. মনির হোসেন (৩৫), মো. ইমরান (১৭), মঞ্জুর (৩০), আফসার আলী (২৫), মো. খাইরুল আমিন (৩০), আবু বক্কর (২৯), আবদুর রাজ্জাক (৩৩) ও মো. মবিন (২৫)। এরা সবাই কক্সবাজার জেলার রামু, ঈদগাহ এবং বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। অপর ৬ জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। মুক্তিপ্রাপ্ত শ্রমিকরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা যায়।
আরাফাত রাবার বাগানের মালিক মো. ফোরকান জানান, তার বাগানের ১২ জনকে মুক্ত করতে ৩ লাখ আর বাকী ৫ বাগানের ১৪ জনকে মুক্ত করতে ৭ লাখ টাকা মোট ১০ লাখ টাকা সন্ত্রাসীদেরকে মুক্তিপণ দিতে হয়েছে। অপহৃত শ্রমিকদেরকে বেশি মারধর করা হয়েছে। উদ্ধারের পর তাদের এখন কক্সবাজার উপজেলার ঈদগাঁ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বান্দরবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপারেশন) মো. আব্দুল করিম জানান, গত শনিবার লামা উপজেলার ফাঁসিয়া খালী ইউনিয়নের মুরুং ঝিড়ির বিভিন্ন রাবার বাগান থেকে যে ২৬ শ্রমিককে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেছিল। আজ সকালে তাদের ছেড়ে দিয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্ত শ্রমিকদের কক্সবাজারের ঈদগাঁ এলাকায় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মুরং ঝিরি এলাকা থেকে রবার বাগানে কর্মরত ২৬ জন শ্রমিককে অপহরণ করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তাদের মুক্তি দিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে সন্ত্রাসীরা। পরে বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণ দেওয়ার পর অপহৃত শ্রমিকদের ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।