Dhaka মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারের পরিস্থিতি কখনোই ভালো ছিল না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি কখনোই ভালো ছিল না। তবে বাংলাদেশের আশা পরিস্থিতি ভালো হবে এবং দ্রুতই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সকালে চীন ও নেপালের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের কো-অর্ডিনেটর দেখা করতে আসেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কোনো সময় ভালো ছিল না। কখনো একটু ভালো হয়, আবার কখনো একটু খারাপ হয়। এ পরিস্থিতি সবসময় বিরাজমান। আমরা আশা করি, এ পরিস্থিতি সবসময় থাকবে না। আমরা অতি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’। আমাদের সঙ্গে চীন, ভারত, রাশিয়ার যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউকের সঙ্গেও চমৎকার সম্পর্ক। আজ সকালে চীনের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের কো-অর্ডিনেটর এবং নেপালের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে দেখা করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। বিশেষ করে আমাদের দেশের বড় বড় ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও সেতু নির্মাণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচনের পরপরই চীনের প্রেসিডেন্ট অভিনন্দন জানিয়েছে। চীনের সঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সহযোগিতা রয়েছে। এই বাণিজ্য এখনও চীনের ফেভারে। চীন থেকে আমরা তিসি আমদানি করি এবং গম রপ্তানি করি। এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা বাংলাদেশ থেকে পাট, চামড়া, মাংস, সিফুড ও মাছ আরও বেশি আমদানি করতে চায়। এর বাইরে তারা বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করতে চায়।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছরের সেকেন্ড হাফ অর্থাৎ জুলাই মাসের পর থেকে তারা আমদানি করতে পারে। আমরা যেহেতু গম রপ্তানি করি এবং চীন আমাদের বড় একটা মার্কেট, এজন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আমরা যাতে চীনের শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের সুবিধা পাই।

তিনি বলেন, চীনে আমরা ৯৮ ভাগ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) করার জন্য কাজ করছে। আমরা চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছি। তারাও এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কক্সবাজারে স্থানীয়দের তুলনায় রোহিঙ্গা বেশি। এতে নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন আগে থেকেই কাজ করছে। আমরা এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব দিয়েছি বেশি।

হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের দেশের জন্য একটি বোঝা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে ২০১৭ সালে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। সেই সময় ওই এলাকার মানুষ তাদের হৃদয়ও খুলে দিয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমারের শরণার্থীরা কক্সবাজারে যে এলাকায় আছে, সে এলাকার বাসিন্দারা এখন মাইনরিটি হয়ে গেছে। মিয়ানমারে সব রাইটসহ তাদের প্রত্যাবর্তন একমাত্র সমস্যার সমাধান। এটা নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। আমরা চীনের সহযোগিতা কামনা করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে এনগেজমেন্টের মধ্যে আছে। তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারা মিয়ানমারকে বলছে, অন্তত বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবর্তনটা শুরু করার জন্য।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমার হয়ত খুব দ্রুত প্রত্যাবর্তন শুরু করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউএন প্রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখানে তার সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যু যেন ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইট থেকে হারিয়ে না যায়, কারণ ২০১৭-২০ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যু যেভাবে ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইটে ছিল পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হলো, তখন রোহিঙ্গা ইস্যু ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইট থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে গেছে। এটি যেন না হয়, সেজন্য তার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে যেভাবে ইউএন সেক্রেটারি জেনারেল আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ব্যক্ত করেছেন, আমার কাছে করেছেন, বিশ্বমণ্ডলে বিভিন্ন জায়গায় করে চলেছেন, সেগুলো সঙ্গে ইউএন হিউম্যান রাইটস অফিসের মাঝে মধ্যে যে বিবৃতিগুলো এসবের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে, সেই বিষয়েও আমি আলোচনা করেছি। কারণ তারা বায়াসড ও রং সোর্স থেকে ইনফরমেশন পায়। তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি তিনি দেখবেন।

হাছান মাহমুদ বলেছেন, নেপাল আমাদের ইমিডিয়েট প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের উত্তরে দূরত্ব হচ্ছে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। আমাদের দুই দেশের মধ্যে আরও অর্থনৈতিক সম্পর্ক যেন বিস্তৃত হয়, পিপল টু পিপল কন্ট্রাক্ট যেন আরও বিস্তৃত হয়, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি সেটি হচ্ছে ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং এনভারনমেন্ট ইস্যু। ইতোমধ্যে নেপালের সঙ্গে ৪০ মেগাওয়াট ইলেক্ট্রিসিটি আমদানির চুক্তি করেছি। ট্যারিফ নিয়ে আমাদের মধ্যে নেগোশিয়েশন হচ্ছে। আমরা যেন সেখান থেকে আরও বেশি জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে পারি, আমাদের ইনভেস্টররা যেন সেখানে ইনভেস্ট করতে পারে– এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তিনি আমার কাছে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিনন্দন জানিয়েছেন, সেটি হস্তান্তর করেছেন। একই সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, সেটিও আমার কাছে হস্তান্তর করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত।

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিয়ানমারে যে অবস্থা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করার পরিস্থিতিতে নেই। আমাদের পরিকল্পনা কী এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি, সহসায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবো।

বিএনপি অভিযোগ করেছে এই সরকার জনগণের সরকার নয়, এই সরকার ভারত, চীন, রাশিয়ার সরকার। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনার প্রতিক্রিয়া কী জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, এই সরকার জনগণের সরকার। বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি ও অভিনন্দন এরই মধ্যে প্রমাণ করেছে এই সরকার আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিয়ানমারের পরিস্থিতি কখনোই ভালো ছিল না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:১৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি কখনোই ভালো ছিল না। তবে বাংলাদেশের আশা পরিস্থিতি ভালো হবে এবং দ্রুতই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সকালে চীন ও নেপালের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের কো-অর্ডিনেটর দেখা করতে আসেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কোনো সময় ভালো ছিল না। কখনো একটু ভালো হয়, আবার কখনো একটু খারাপ হয়। এ পরিস্থিতি সবসময় বিরাজমান। আমরা আশা করি, এ পরিস্থিতি সবসময় থাকবে না। আমরা অতি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’। আমাদের সঙ্গে চীন, ভারত, রাশিয়ার যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউকের সঙ্গেও চমৎকার সম্পর্ক। আজ সকালে চীনের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের কো-অর্ডিনেটর এবং নেপালের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে দেখা করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। বিশেষ করে আমাদের দেশের বড় বড় ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও সেতু নির্মাণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচনের পরপরই চীনের প্রেসিডেন্ট অভিনন্দন জানিয়েছে। চীনের সঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সহযোগিতা রয়েছে। এই বাণিজ্য এখনও চীনের ফেভারে। চীন থেকে আমরা তিসি আমদানি করি এবং গম রপ্তানি করি। এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা বাংলাদেশ থেকে পাট, চামড়া, মাংস, সিফুড ও মাছ আরও বেশি আমদানি করতে চায়। এর বাইরে তারা বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করতে চায়।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছরের সেকেন্ড হাফ অর্থাৎ জুলাই মাসের পর থেকে তারা আমদানি করতে পারে। আমরা যেহেতু গম রপ্তানি করি এবং চীন আমাদের বড় একটা মার্কেট, এজন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আমরা যাতে চীনের শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের সুবিধা পাই।

তিনি বলেন, চীনে আমরা ৯৮ ভাগ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) করার জন্য কাজ করছে। আমরা চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছি। তারাও এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কক্সবাজারে স্থানীয়দের তুলনায় রোহিঙ্গা বেশি। এতে নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন আগে থেকেই কাজ করছে। আমরা এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব দিয়েছি বেশি।

হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের দেশের জন্য একটি বোঝা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে ২০১৭ সালে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। সেই সময় ওই এলাকার মানুষ তাদের হৃদয়ও খুলে দিয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমারের শরণার্থীরা কক্সবাজারে যে এলাকায় আছে, সে এলাকার বাসিন্দারা এখন মাইনরিটি হয়ে গেছে। মিয়ানমারে সব রাইটসহ তাদের প্রত্যাবর্তন একমাত্র সমস্যার সমাধান। এটা নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। আমরা চীনের সহযোগিতা কামনা করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে এনগেজমেন্টের মধ্যে আছে। তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারা মিয়ানমারকে বলছে, অন্তত বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবর্তনটা শুরু করার জন্য।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমার হয়ত খুব দ্রুত প্রত্যাবর্তন শুরু করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউএন প্রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখানে তার সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যু যেন ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইট থেকে হারিয়ে না যায়, কারণ ২০১৭-২০ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যু যেভাবে ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইটে ছিল পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হলো, তখন রোহিঙ্গা ইস্যু ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইট থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে গেছে। এটি যেন না হয়, সেজন্য তার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে যেভাবে ইউএন সেক্রেটারি জেনারেল আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ব্যক্ত করেছেন, আমার কাছে করেছেন, বিশ্বমণ্ডলে বিভিন্ন জায়গায় করে চলেছেন, সেগুলো সঙ্গে ইউএন হিউম্যান রাইটস অফিসের মাঝে মধ্যে যে বিবৃতিগুলো এসবের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে, সেই বিষয়েও আমি আলোচনা করেছি। কারণ তারা বায়াসড ও রং সোর্স থেকে ইনফরমেশন পায়। তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি তিনি দেখবেন।

হাছান মাহমুদ বলেছেন, নেপাল আমাদের ইমিডিয়েট প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের উত্তরে দূরত্ব হচ্ছে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। আমাদের দুই দেশের মধ্যে আরও অর্থনৈতিক সম্পর্ক যেন বিস্তৃত হয়, পিপল টু পিপল কন্ট্রাক্ট যেন আরও বিস্তৃত হয়, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি সেটি হচ্ছে ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং এনভারনমেন্ট ইস্যু। ইতোমধ্যে নেপালের সঙ্গে ৪০ মেগাওয়াট ইলেক্ট্রিসিটি আমদানির চুক্তি করেছি। ট্যারিফ নিয়ে আমাদের মধ্যে নেগোশিয়েশন হচ্ছে। আমরা যেন সেখান থেকে আরও বেশি জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে পারি, আমাদের ইনভেস্টররা যেন সেখানে ইনভেস্ট করতে পারে– এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তিনি আমার কাছে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিনন্দন জানিয়েছেন, সেটি হস্তান্তর করেছেন। একই সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, সেটিও আমার কাছে হস্তান্তর করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত।

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিয়ানমারে যে অবস্থা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করার পরিস্থিতিতে নেই। আমাদের পরিকল্পনা কী এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি, সহসায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবো।

বিএনপি অভিযোগ করেছে এই সরকার জনগণের সরকার নয়, এই সরকার ভারত, চীন, রাশিয়ার সরকার। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনার প্রতিক্রিয়া কী জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, এই সরকার জনগণের সরকার। বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি ও অভিনন্দন এরই মধ্যে প্রমাণ করেছে এই সরকার আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে।