আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আফ্রিকার দেশ মালিতে যাত্রীবাহী নৌকা ও সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। পৃথক হামলায় নিহতদের মধ্যে ৪৯ জন বেসামরিক মানুষ এবং ১৫ জন সেনা সদস্য। এ ছাড়া আনুমানিক ৫০ জন হামলাকারীও নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে দেশটির অন্তবর্তীকালীন সরকার।
দেশটির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে পৃথক হামলা দুটি হামলা চালানো হয়।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দুটি পৃথক হামলা টিমবুক্টুর কাছে নদীতে থাকা জাহাজ এবং উত্তর গাও অঞ্চলের বাম্বাতে একটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, এ হামলায় ৪৯ বেসামরিক নাগরিক এবং ১৫ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এতে আরও অনেক আহত হয়েছেন।
মালি সরকারের দাবি, হামলার দায় স্বীকার করেছে চরমপন্থী ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী জেএনআইএম। এটি আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত একটি গোষ্ঠী।
নাইজার নদীতে বেসামরিক নাগরিকদের বহনকারী একটি নৌকায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। পরে গাও অঞ্চলের বুরেম সার্কেলে সেনা ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়।
দেশটির সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলার জবাবে তাদের বাহিনী প্রায় ৫০ জন হামলাকারীকে হত্যা করেছে।
এদিকে এ হামলার ঘটনায় দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে মালির অন্তর্র্বতী সরকার।
হামলার শিকার হওয়া ওই নৌকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান কোমানভ জানিয়েছে, নৌকাটির ইঞ্জিন লক্ষ্য করে অন্তত তিনটি রকেট হামলা চালানো হয়। অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোমানভের এক কর্মকর্তা বলেছেন, নৌকাটি নদীতে স্থির অবস্থায় ছিল এবং সেনাবাহিনী যাত্রীদের সরিয়ে নিতে গিয়েছিল।
এর আগে গত ২০ আগস্ট দেশটির বান্দিয়াগারা শহরের কাছে ইয়ারু এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ২১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
গত ২৮ মে মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ ফরমড্ পুলিশ ইউনিটের টহল টিমের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ব্যানএফপিইউ-২, মিনুসমা, মালির তিন সদস্য আহত হন। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের বহনকারী আর্মাড পারসোনেল ক্যারিয়ারটি (এপিসি) ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২০২০ সাল থেকে মালি শাসন করছে সামরিক জান্তা। নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়তে থাকায় দেশটিতে ২০২০ ও ২০২১ সালে পরপর দুটি অভ্যুত্থান হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের পর সামরিক বাহিনী যখন ক্ষমতা দখল করে, তখন তাদের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন ছিল।