Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, ১০ বার নোটিশ দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি :  ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজারের যেখানে আগুন লেগেছে সেই জায়গাটিতে থাকা মার্কেট ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ১০ বার নোটিশ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবাজারে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নেভাতে আরও কিছু সময় লাগবে। আগুন নিভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটজন কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা ঢাকা মেডিক্য্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল বঙ্গবাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এখানে ব্যানার টানানো হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে। দশ বার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এ বিষয়টি জানানো হয়েছিল। আমাদের করণীয় যা যা করার আমরা করেছি। কিন্তু তারপরেও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা।

তিনি আরও বলেন, তিনটি কারণে রাজধানীর বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণ তিনটি বাধা ছিল উৎসুক জনতা ও পানির স্বল্পতা। বাতাসের কারণেও আগুন নেভাতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। বাতাসের কারণে একদিকে আগুন নেভানোর পর আরেক দিকে আগুন লেগে যাচ্ছিল।

নিজের মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও দেখিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, এখানকার উৎসুক জনতার ভিড়ে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। এখানে এত বেশি ভিড় ছিল যে কোনো জায়গায় গিয়ে আমাদের সদস্যরা কাজ করবেন সেই জায়গাটিও ছিল না। দ্বিতীয় সমস্যাটি ছিল পানির স্বল্পতা, আর তৃতীয় সমস্যাটি হলো বাতাস। বাতাসের কারণে এক জায়গার আগুন আরেক জায়গায় চলে যায়।

তিনি বলেন, আজকে আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন সদস্য আহত রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন ক্রিটিক্যাল অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনিস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।

ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয়ে হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা আপনাদের জন্য তথা দেশের জন্য কাজ করে। আপনাদের জন্য কাজ করতে গিয়ে গত এক বছরে ১৩ জন ফায়ার ফাইটার শাহাদাত বরণ করেছেন। তারপরও কেন আমাদের ওপর হামলা?

মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তারা অতি বীর খেতাব পেয়েছেন। এছাড়া গত এক বছরে আহত হয়েছেন আরো ২৯ জন। আজকের ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও আটজন।

তিনি বলেন, কেন বা কারা ফায়ার সার্ভিসের ওপরে হামলা চালাল, তা আমার বোধগম্য নয়। কারা করেছে, কেন করেছে, তা জানতে চাই। আমি তো আপনার জন্যই জীবন দিচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, আমি মিডিয়ার মাধ্যমে সবাইকে জানাতে চাই, দেশের সব দুর্যোগে সবার আগে ফায়ার সার্ভিস আপনাদের পাশে দাঁড়ায়। তারপরেও আমার ওপরে কেন এই আক্রমণ? কেন এই আঘাত ফায়ার সার্ভিসের ওপর?

বঙ্গবাজারের আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করে জানাতে পারব। তবে এটুকু বলতে পারি, সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদারকি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সবাই বিষয়টিকে নজরে রাখছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, ১০ বার নোটিশ দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি :  ডিজি

প্রকাশের সময় : ০৩:২১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজারের যেখানে আগুন লেগেছে সেই জায়গাটিতে থাকা মার্কেট ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ১০ বার নোটিশ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবাজারে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নেভাতে আরও কিছু সময় লাগবে। আগুন নিভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটজন কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা ঢাকা মেডিক্য্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল বঙ্গবাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এখানে ব্যানার টানানো হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে। দশ বার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এ বিষয়টি জানানো হয়েছিল। আমাদের করণীয় যা যা করার আমরা করেছি। কিন্তু তারপরেও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা।

তিনি আরও বলেন, তিনটি কারণে রাজধানীর বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণ তিনটি বাধা ছিল উৎসুক জনতা ও পানির স্বল্পতা। বাতাসের কারণেও আগুন নেভাতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। বাতাসের কারণে একদিকে আগুন নেভানোর পর আরেক দিকে আগুন লেগে যাচ্ছিল।

নিজের মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও দেখিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, এখানকার উৎসুক জনতার ভিড়ে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। এখানে এত বেশি ভিড় ছিল যে কোনো জায়গায় গিয়ে আমাদের সদস্যরা কাজ করবেন সেই জায়গাটিও ছিল না। দ্বিতীয় সমস্যাটি ছিল পানির স্বল্পতা, আর তৃতীয় সমস্যাটি হলো বাতাস। বাতাসের কারণে এক জায়গার আগুন আরেক জায়গায় চলে যায়।

তিনি বলেন, আজকে আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন সদস্য আহত রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন ক্রিটিক্যাল অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনিস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।

ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয়ে হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা আপনাদের জন্য তথা দেশের জন্য কাজ করে। আপনাদের জন্য কাজ করতে গিয়ে গত এক বছরে ১৩ জন ফায়ার ফাইটার শাহাদাত বরণ করেছেন। তারপরও কেন আমাদের ওপর হামলা?

মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তারা অতি বীর খেতাব পেয়েছেন। এছাড়া গত এক বছরে আহত হয়েছেন আরো ২৯ জন। আজকের ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও আটজন।

তিনি বলেন, কেন বা কারা ফায়ার সার্ভিসের ওপরে হামলা চালাল, তা আমার বোধগম্য নয়। কারা করেছে, কেন করেছে, তা জানতে চাই। আমি তো আপনার জন্যই জীবন দিচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, আমি মিডিয়ার মাধ্যমে সবাইকে জানাতে চাই, দেশের সব দুর্যোগে সবার আগে ফায়ার সার্ভিস আপনাদের পাশে দাঁড়ায়। তারপরেও আমার ওপরে কেন এই আক্রমণ? কেন এই আঘাত ফায়ার সার্ভিসের ওপর?

বঙ্গবাজারের আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করে জানাতে পারব। তবে এটুকু বলতে পারি, সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদারকি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সবাই বিষয়টিকে নজরে রাখছেন।