যশোর জেলা প্রতিনিধি :
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে সুশাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে যশোর পিটিআই মিলনায়তনে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগবিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, পুলিশকে তদন্তের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি শাস্তি না পায়।
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শহীদ মুগ্ধর লাশ বহনকারী জানিয়েছেন, শহীদ মুগ্ধ মারা যাওয়ার পর কোন হাসপাতাল তাঁর লাশ নিতে চায়নি। তাঁর পোস্টমর্টেম করা সম্ভব হয়নি। তাঁর লাশ এন্ট্রি করতে রাজি হয়নি প্রশাসন। মিডিয়া ঘটনাগুলো তুলে এনেছে। এখন আপনি ন্যায়বিচার করতে গিয়ে যদি বলেন, ওই আসামি হত্যা করেছে, সেটা তো পোস্টমর্টেম রিপোর্টে সাপোর্ট করছে না। তাহলে আমি কী করব? আমি বিনয়ের সঙ্গে বলছি, আপনি নতুন পুলিশ রিপোর্ট তৈরি করুন। আইনের স্বাভাবিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রগতিশীল হওয়ার চেষ্টা করুন। ৫ আগস্টের আগের তত্ত্বে বিচার করলে হবে না। আপনাদের সামনে হাতছানি দিচ্ছে ইতিহাসের যুগসন্ধিক্ষণ।’
পুলিশের উদ্দেশে অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা গর্বের সঙ্গে বলি ৫ আগস্টের আগের পুলিশ বাহিনী আর পরের পুলিশ বাহিনী এক নয়। ৬০ লক্ষাধিক মানুষের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা হয়েছিল। প্রায় শতভাগ গায়েবি মামলার বাদী হয়েছিল পুলিশ। ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাও করেনি। ৫ আগস্টের আগে সাত শর বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছিল। বিনা বিচারে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। এসব ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের সব উপাদানে ভরপুর। ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাহিনীর হাত দিয়ে একটিও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়নি।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি। বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সিআইডির অতিরিক্ত আইজি মতিউর রহমান শেখ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান খান বক্তব্য দেন।
যশোর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে কর্মশালায় খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও ১৬ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, জেলা ও দায়রা জজ, সিনিয়র জুডিশিয়াল ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পাবলিক প্রসিকিউটর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৩২০ কর্মকর্তা অংশ নেন।