Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্তমান সরকার দেশকে সংকটে ফেলেছে : নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে সংকটে ফেলেছে। নির্বাচন নিয়ে দেশে চরম সংকট তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলগুলো বলছে, আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য কাজ করবে। আমরা সবাই সহযোগিতা করব।

সোমবার (৮ মে) বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে প্রবাসীদের ভূমিকা ও সংকট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ।

সচিব নুরুল হক নুর বলেন, আগামী নির্বাচনে ভিপি নূর, কল্যাণ পার্টি কিংবা বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার নির্বাচন নয়, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের অস্তিত্বের নির্বাচন। এই নির্বাচন যেভাবেই হোক অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হবে। আমাদের দাবি একটাই।

এ বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক বলেন, আমরা একটা জোটে ছিলাম। সেই জোট থেকে আমরা লিভ (বেরিয়ে আসা) করেছি। কেন করেছি, কোন প্রেক্ষাপটে করেছি, সেটা আমরা বলেছি। একটা কথা স্পষ্ট করেছি যে আমরা জোটে না থাকলেও বর্তমান ফ্যাসিবাদ পতনে, বাংলাদেশকে রক্ষায় বিরোধী দলগুলোর যে যুগপৎ আন্দোলন চলছে, সেই আন্দোলনে আমাদের সর্বাত্মক শক্তি ও সহযোগিতা নিয়ে রাজপথে থাকব।’

শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে নুরুল হক নুর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি গড়ে ওঠা বাংলাদেশকে আজকে আজকে সংঘাতের বাংলাদেশে পরিণত করছে এ সরকার। আজকে মুক্তিযোদ্ধা, মুরুব্বি কিংবা রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতাদের কারো কোনো সম্মান নেই, শিষ্ঠাচার নেই। আওয়ামী লীগের হোমরা-চোমরাদের উৎপাতে এলাকায় মানুষ থাকতে পারে না।

শেখ হাসিনার সরকার বিদেশিদের গোলামি করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা বিদেশিদের বলছে, আমাকে ক্ষমতায় রাখো। বিনিময়ে দেশে সম্পদ, জমিজমা নিয়ে যাও, নিরাপত্তাকে ভন্ডুল করে দাও, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে ধূলিস্মাৎ করে দাও। শুধু আমি যে কয়দিন জীবত আছি, আমাকে ক্ষমতায় রাখো। আমি আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকতে চাই। যে কারণে আজকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছে, বৈশ্বিক রাজনৈতিক সংকটে ফেলেছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে জাতীয় কোনো সমাঝোতা আসেনি। দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক নিরাপত্তা কোনোটাই আজকে নিরাপদ নয়। এ সরকার সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য। অর্থনৈতিক জোনের নামে ভিনদেশি কিছু কিছু দেশকে বাংলাদেশে মিনি ক্যানটমেন্ট গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছে। দেশের আনসার থেকে শুরু করে সচিবালয়, মন্ত্রী পরিষদ, রাজনৈতিক দলের কমিটিতেও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আধিপত্য আছে। বর্তমান সরকার গত ১৪ বছরে তিলে তিলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সংবিধানের মধ্যে থেকে বিএনপি বা বিরোধী দলকে নাকি প্রয়োজনে মন্ত্রিত্ব দেবেন। এটা কি আওয়ামী লীগের কমিটি যে আপনি কাউকে ভাইস চেয়ারম্যান বানাবেন! বিরোধী দলের কে মন্ত্রী কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবে সেব্যাপারে আপনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কে? আপনিই তো অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে নুর বলেন, সহযোগিতার রাস্তা একটাই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসেন, আমরা সহযোগিতা করব। স্পষ্ট কথা, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল, তা আপনারা গুম করেছেন। তা ফিরিয়ে নিয়ে আসেন তাহলে কোনো শঙ্কা, সহিংসতা সমস্যা থাকবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নাকি স্থায়ী কোনো নির্বাচন ব্যবস্থা না। তাহলে সব দলের সঙ্গে ডায়ালগ করুন। কীভাবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায়, স্থায়ী নির্বাচন ব্যবস্থা করা যায়। যদি সেটা না করেন তাহলে অতীতে যেমন স্বৈরাচারের পতন হয়েছে আপনাদেরও পতন হবে, ততো দিনে হয়তো দেশের আরো অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের নামে আমদানি রপ্তানির নামে অর্থ পাচারে সরকারদলীয় লোকজন ও আমলা জড়িত দাবি করে নুর বলেন, দুবাইয়ে ৪৫৯ জনের প্রফাইল নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে। দুদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। কল্যাণ পার্টির ইবরাহিম, গণঅধিকার পরিষদের আমি কিংবা বিএনপি যদি করত তাহতে এতো দিনে তো তাদের ক্রস ফায়ার দিতো সরকার, বিচারের সম্মুখীন করা হতো। অর্থপাচারের বিষয়টি বার বার আলোচনায় এলেও তাদের বিচার কিন্তু করা হচ্ছে না। কারণ কি? কারণ অর্থপাচারকারীরা সবাই সরকার দলীয় কিংবা আমলা।

নুরুল হক বলেন, ইব্রাহিম ভাইয়ের কল্যাণ পার্টি, আমাদের গণঅধিকার পরিষদ কিংবা বিএনপি লোকেরা যদি দুর্নীতি করতো, তাদের তো ক্রসফায়ার দিতো এতদিনে। এদের বিচারের মুখোমুখি করতো। সুতরাং অর্থপাচারের বিষয়টি বারবার আলোচনায় এলেও অর্থপাচারকারীদের ধরা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, একটা সময় মানুষ রিজার্ভ কি সেটাই জানতো না। এখন সবাই বোঝে। কেনো রিজার্ভ কমল সবাই এখন প্রশ্ন করছেন। দেশের এমপি-মন্ত্রী-আমলার ব্রিফকেস ভরে ডলার পাচার করার কারণে রিজার্ভ ফুরিয়ে এসেছে। অনিয়ম করলে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরে যান। আমাদের ক্ষমতা ছেড়ে দেন, এক বছরের মধ্যই পরিবর্তন করে দেব।

তিনি আরো বলেন, আজ প্রবাসীরা নানাভাবে অবহেলিত হচ্ছেন। তাদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না, সম্মান দেওয়া হয় না। তারা কষ্টে থাকলেও প্রবাসে দেখার কেউ নেই। দেখার সময় কই, দেশের মধ্যে লুটপাট চলায় ব্যস্ত। প্রবাসীরা ঘর বানাতে গেলে যুবলীগের কাছ থেকে ইটের খোয়া কিনতে হবে, ছাত্রলীগের কাছ থেকে বালি কিনতে হবে। এভাবেই লুটপাট করা হচ্ছে চারিদিক।

বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের উপদেষ্টা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার পোদ্দারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরবষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মহসিন রশিদ, নাবিকের সভাপতি ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

বর্তমান সরকার দেশকে সংকটে ফেলেছে : নুর

প্রকাশের সময় : ১১:২৮:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে সংকটে ফেলেছে। নির্বাচন নিয়ে দেশে চরম সংকট তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলগুলো বলছে, আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য কাজ করবে। আমরা সবাই সহযোগিতা করব।

সোমবার (৮ মে) বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে প্রবাসীদের ভূমিকা ও সংকট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ।

সচিব নুরুল হক নুর বলেন, আগামী নির্বাচনে ভিপি নূর, কল্যাণ পার্টি কিংবা বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার নির্বাচন নয়, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের অস্তিত্বের নির্বাচন। এই নির্বাচন যেভাবেই হোক অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হবে। আমাদের দাবি একটাই।

এ বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক বলেন, আমরা একটা জোটে ছিলাম। সেই জোট থেকে আমরা লিভ (বেরিয়ে আসা) করেছি। কেন করেছি, কোন প্রেক্ষাপটে করেছি, সেটা আমরা বলেছি। একটা কথা স্পষ্ট করেছি যে আমরা জোটে না থাকলেও বর্তমান ফ্যাসিবাদ পতনে, বাংলাদেশকে রক্ষায় বিরোধী দলগুলোর যে যুগপৎ আন্দোলন চলছে, সেই আন্দোলনে আমাদের সর্বাত্মক শক্তি ও সহযোগিতা নিয়ে রাজপথে থাকব।’

শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে নুরুল হক নুর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি গড়ে ওঠা বাংলাদেশকে আজকে আজকে সংঘাতের বাংলাদেশে পরিণত করছে এ সরকার। আজকে মুক্তিযোদ্ধা, মুরুব্বি কিংবা রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতাদের কারো কোনো সম্মান নেই, শিষ্ঠাচার নেই। আওয়ামী লীগের হোমরা-চোমরাদের উৎপাতে এলাকায় মানুষ থাকতে পারে না।

শেখ হাসিনার সরকার বিদেশিদের গোলামি করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা বিদেশিদের বলছে, আমাকে ক্ষমতায় রাখো। বিনিময়ে দেশে সম্পদ, জমিজমা নিয়ে যাও, নিরাপত্তাকে ভন্ডুল করে দাও, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে ধূলিস্মাৎ করে দাও। শুধু আমি যে কয়দিন জীবত আছি, আমাকে ক্ষমতায় রাখো। আমি আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকতে চাই। যে কারণে আজকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছে, বৈশ্বিক রাজনৈতিক সংকটে ফেলেছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে জাতীয় কোনো সমাঝোতা আসেনি। দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক নিরাপত্তা কোনোটাই আজকে নিরাপদ নয়। এ সরকার সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য। অর্থনৈতিক জোনের নামে ভিনদেশি কিছু কিছু দেশকে বাংলাদেশে মিনি ক্যানটমেন্ট গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছে। দেশের আনসার থেকে শুরু করে সচিবালয়, মন্ত্রী পরিষদ, রাজনৈতিক দলের কমিটিতেও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আধিপত্য আছে। বর্তমান সরকার গত ১৪ বছরে তিলে তিলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সংবিধানের মধ্যে থেকে বিএনপি বা বিরোধী দলকে নাকি প্রয়োজনে মন্ত্রিত্ব দেবেন। এটা কি আওয়ামী লীগের কমিটি যে আপনি কাউকে ভাইস চেয়ারম্যান বানাবেন! বিরোধী দলের কে মন্ত্রী কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবে সেব্যাপারে আপনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কে? আপনিই তো অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে নুর বলেন, সহযোগিতার রাস্তা একটাই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসেন, আমরা সহযোগিতা করব। স্পষ্ট কথা, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল, তা আপনারা গুম করেছেন। তা ফিরিয়ে নিয়ে আসেন তাহলে কোনো শঙ্কা, সহিংসতা সমস্যা থাকবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নাকি স্থায়ী কোনো নির্বাচন ব্যবস্থা না। তাহলে সব দলের সঙ্গে ডায়ালগ করুন। কীভাবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায়, স্থায়ী নির্বাচন ব্যবস্থা করা যায়। যদি সেটা না করেন তাহলে অতীতে যেমন স্বৈরাচারের পতন হয়েছে আপনাদেরও পতন হবে, ততো দিনে হয়তো দেশের আরো অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের নামে আমদানি রপ্তানির নামে অর্থ পাচারে সরকারদলীয় লোকজন ও আমলা জড়িত দাবি করে নুর বলেন, দুবাইয়ে ৪৫৯ জনের প্রফাইল নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে। দুদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। কল্যাণ পার্টির ইবরাহিম, গণঅধিকার পরিষদের আমি কিংবা বিএনপি যদি করত তাহতে এতো দিনে তো তাদের ক্রস ফায়ার দিতো সরকার, বিচারের সম্মুখীন করা হতো। অর্থপাচারের বিষয়টি বার বার আলোচনায় এলেও তাদের বিচার কিন্তু করা হচ্ছে না। কারণ কি? কারণ অর্থপাচারকারীরা সবাই সরকার দলীয় কিংবা আমলা।

নুরুল হক বলেন, ইব্রাহিম ভাইয়ের কল্যাণ পার্টি, আমাদের গণঅধিকার পরিষদ কিংবা বিএনপি লোকেরা যদি দুর্নীতি করতো, তাদের তো ক্রসফায়ার দিতো এতদিনে। এদের বিচারের মুখোমুখি করতো। সুতরাং অর্থপাচারের বিষয়টি বারবার আলোচনায় এলেও অর্থপাচারকারীদের ধরা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, একটা সময় মানুষ রিজার্ভ কি সেটাই জানতো না। এখন সবাই বোঝে। কেনো রিজার্ভ কমল সবাই এখন প্রশ্ন করছেন। দেশের এমপি-মন্ত্রী-আমলার ব্রিফকেস ভরে ডলার পাচার করার কারণে রিজার্ভ ফুরিয়ে এসেছে। অনিয়ম করলে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরে যান। আমাদের ক্ষমতা ছেড়ে দেন, এক বছরের মধ্যই পরিবর্তন করে দেব।

তিনি আরো বলেন, আজ প্রবাসীরা নানাভাবে অবহেলিত হচ্ছেন। তাদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না, সম্মান দেওয়া হয় না। তারা কষ্টে থাকলেও প্রবাসে দেখার কেউ নেই। দেখার সময় কই, দেশের মধ্যে লুটপাট চলায় ব্যস্ত। প্রবাসীরা ঘর বানাতে গেলে যুবলীগের কাছ থেকে ইটের খোয়া কিনতে হবে, ছাত্রলীগের কাছ থেকে বালি কিনতে হবে। এভাবেই লুটপাট করা হচ্ছে চারিদিক।

বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের উপদেষ্টা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার পোদ্দারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরবষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মহসিন রশিদ, নাবিকের সভাপতি ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান।