নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দ্রুত সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেট সংস্কার করে পুনরায় ব্যবসা শুরু করতে প্রয়োজনীয় সহায়তা চেয়েছেন।
বুধবার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার ভবনের সামনে একটি ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করতে দেখা গেছে।
মানববন্ধন অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিষয়টি তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ব্যবাসয়ীরা জানান, আদর্শ হকার্স মার্কেট, মহানগরী ও বঙ্গ গুলিস্তান- এই তিন অংশ মিলেই বঙ্গবাজার। প্রায় ২২ হাজার বর্গফুটের এই মার্কেটে ৫ হাজারের বেশি ছোট-বড় দোকান রয়েছে। ইতোমধ্যে সব দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ঈদ্রিস খান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, বঙ্গবাজারে চার থেকে পাঁচ হাজার দোকান রয়েছে। এখানে হাজার হাজার দোকান কর্মচারী কাজ করেন। সবাই আজ নিঃস্ব, রিক্ত। অনেকে পথের ভিখারি হয়ে গেছেন। সহযোগিতা না পেলে আমাদের অনেকের না খেয়ে মরতে হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব মার্কেট সংস্কার করে পুনরায় চালুর দাবি জানাচ্ছি।
এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, আমরা আজ চরম অসহায়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সহায় সম্বল হারানো সবাইকে যেন তিনি সহযোগিতা করেন। আমরা এখানে যেন আবার ব্যবসা শুরু করতে পারি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই সহযোগিতা চাই।
ব্যবসায়ী সুহেল মুন্সি বলেন, ব্যাংকের ঋণ মওকুফ করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা যেন আবার এখানে ব্যবসা করতে পারি সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এনেক্সকো টাওয়ারের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলার একাংশে পানি ছিটাচ্ছেন। এছাড়া বঙ্গবাজার মার্কেটের অংশেও ডাম্পিং ডাউনের কাজ করছেন। দৃশ্যমান কোনো আগুন দেখা না গেলেও, ধ্বংসস্তূপ ও এনেক্সকো টাওয়ার থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান জানান, আমরা ডাম্পিং ডাউনের কাজ করছি। এখন আর খোলা জায়গায় আগুন নেই। তবে এনেক্সকো টাওয়ারের ৫-৭ তলায় কিছুটা আগুন থাকতে পারে। আমরা সেটি নির্বাপন করছি।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে গুলিস্তানের বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর পাশেই ফায়ার সার্ভিসের সদর দফতর হওয়ায় সকাল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে আগুনের খবর পেয়ে দুই মিনিটের মাথায় ৬টা ১২ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় প্রথম ইউনিট। পরে পানির সংকট ও তীব্র বাতাসের ফলে তীব্রতা বাড়ায় আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের আপ্রাণ চেষ্টায় গতকাল দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।
এদিকে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে তদন্ত কমিটির বাকি চার সদস্যরা হলেন, ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা, সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম, ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর অধীর চন্দ্র ও কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকা জোন-১ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ।