Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশ সদস্যকে অটোরিকশায় ঝুলিয়ে নিয়ে গেল চালক

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুরের শ্রীপুরে পুলিশ সদস্য কনস্টেবল কমল দাসকে অটোরিকশায় ঝুলিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার নিয়ে গেছে চালক জনি আহমেদ (২৪)। পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে নেওয়ার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ চালকসহ অটোরিকশাটি আটক করেছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক অটোরিকশা চালক জনি আহমেদ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে। পুলিশ সদস্য কমল দাস মাওনা হাইওয়ে থানায় কর্মরত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইউনিফর্ম পড়া অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্য চলন্ত অটোরিকশার রড ধরে ডান পাশে ঝুলে আছেন। পেছনে কয়েকজন যাত্রী চালককে অনুরোধ করছেন অটোরিকশা থামানোর জন্য। কিন্তু চালক রিকশা থামাচ্ছেন না। মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করায় অটোরিকশাকে ওভারটেক করে আসা-যাওয়া করছে বিভিন্ন পরিবহন। পরে মহাসড়কের একটি স্থানে জ্যাম লেগে থাকলে স্থানীয় জনতা ও পুলিশ সদস্য মিলে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জামিরদিয়া এলাকায় চালককে আটক করে মারধর করতে দেখা যায়।

শ্রীপুরের মোতাহার খান নামে এক স্থানীয় সাংবাদিক তার ফেবসুক পোস্টে ওই ভিডিও পোস্ট করে লিখেন অটোতে ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আজকে অবৈধ অটোরিকশা মহাসড়কে চলছে। এর দায় কার! মান্থলি (মাসিক) গ্রহণ করে মহাসড়কে নিষিদ্ধ অটো চলতে দেওয়াই আজকে পুলিশ নিজেই ভুক্তভোগী। এখনো কি নিষিদ্ধ হবে না অটো রিকশা! এখনো কি হবে না আপনাদের হুশ!

ওই গণমাধ্যম কর্মীর পোস্টে মন্তব্য হাবিব সোহাগ লিখেন পুলিশের বাড়তি ইনকাম সোর্স বন্ধ করা যাবে না। জহিরুল ইসলাম জনি লিখেছেন গাজীপুর-ময়মনসিংহ পুরো মহাসড়কেই অটোরিকশার ছড়াছড়ি। কেউ কেউ মন্তব্য করেন টাকা দিলে রাস্তা ক্লিয়ার, অটোরিকশা বেপরোয়া এদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি, অটোরিকশা জন্য রাস্তায় জ্যাম লেগেই থাকে, অটোরিকশা কি নিষিদ্ধ করা হোক।

সাংবাদিক সুমন গাজী তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেন শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অটোচালকের কৃতকর্মের যে ভয়াবহ চিত্র দেখলাম। শরীরটা কাঁপছে। একজন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে প্রায় এক কিলোমিটার ঝুলিয়ে নিলো। পুলিশ ভাইটা কান্না করছিলো। থামানোর অনুনয়-বিনয় করছিলো। অটোতে থাকা এক যাত্রীকেও দেখলাম থামানোর অনুরোধ জানাতে। অথচ বদমাইশটা গতি আরও বাড়াচ্ছিলো। যে কোনো মূহুর্তেই পুলিশ ভাইটার অপমৃত্যু হতে পারতো। ওই অটোচালক কতোটা বীভৎস চরিত্রের অধিকারী। সাক্ষাৎ জল্লাদ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী রাখছি।

পুলিশ কনস্টেবল কমল দাস বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বিকালে জৈনাবাজার এলাকায় তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। এসময় যাত্রী নিয়ে একটি অটোরিকশা আসলে সেটি থামিয়ে জব্দ করার জন্য চাবি নেওয়ার চেষ্টা করেন।

“কিন্তু চালক সঙ্গে সঙ্গে অটোরিকশা চালাতে শুরু করে। আমি অটোরিকশায় ওঠার চেষ্টা করি, কিন্তু চালক রিকশার গতি আরও বাড়িয়ে দেয়। এরপর আমি অটোরিকশায় ডান পাশের রড আকড়ে ধরে ঝুলে থাকি।”

এ অবস্থায় চালক তাকে চলন্ত অটোরিকশা থেকে মহাসড়কে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করে এই পুলিশ সদস্য বলেন, “চালককে থামার অনুরোধ করলেও গতি আরও বাড়িয়ে আমাকে মহাসড়কে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। রিকশায় থাকা যাত্রীরা অনুরোধ করলেও সে অটোরিকশা থামায়নি।

তিনি বলেন, “তার উদ্দেশ্য ছিল আমাকে চাপা দিয়ে হলেও অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যাবে। আমাকে ঝুলিয়ে কমপক্ষে এক কিলোমিটার নিয়ে যায় সে। কিন্তু আমি শেষ পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে আটক করতে সক্ষম হই।”

মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, কনস্টেবল কমল দাস অটোটা আটকানোর চেষ্টা করছিল। পরে অটো টান দিলে সে আবার অটোতে উঠে পড়লে অটো না থামিয়ে অটো ছেড়ে দেয়। পরে এক কিলোমিটার যাওয়ার পর জ্যাম থাকায় অটোটা আটকানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

পুলিশ সদস্যকে অটোরিকশায় ঝুলিয়ে নিয়ে গেল চালক

প্রকাশের সময় : ১২:১৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুরের শ্রীপুরে পুলিশ সদস্য কনস্টেবল কমল দাসকে অটোরিকশায় ঝুলিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার নিয়ে গেছে চালক জনি আহমেদ (২৪)। পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে নেওয়ার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ চালকসহ অটোরিকশাটি আটক করেছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক অটোরিকশা চালক জনি আহমেদ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে। পুলিশ সদস্য কমল দাস মাওনা হাইওয়ে থানায় কর্মরত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইউনিফর্ম পড়া অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্য চলন্ত অটোরিকশার রড ধরে ডান পাশে ঝুলে আছেন। পেছনে কয়েকজন যাত্রী চালককে অনুরোধ করছেন অটোরিকশা থামানোর জন্য। কিন্তু চালক রিকশা থামাচ্ছেন না। মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করায় অটোরিকশাকে ওভারটেক করে আসা-যাওয়া করছে বিভিন্ন পরিবহন। পরে মহাসড়কের একটি স্থানে জ্যাম লেগে থাকলে স্থানীয় জনতা ও পুলিশ সদস্য মিলে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জামিরদিয়া এলাকায় চালককে আটক করে মারধর করতে দেখা যায়।

শ্রীপুরের মোতাহার খান নামে এক স্থানীয় সাংবাদিক তার ফেবসুক পোস্টে ওই ভিডিও পোস্ট করে লিখেন অটোতে ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আজকে অবৈধ অটোরিকশা মহাসড়কে চলছে। এর দায় কার! মান্থলি (মাসিক) গ্রহণ করে মহাসড়কে নিষিদ্ধ অটো চলতে দেওয়াই আজকে পুলিশ নিজেই ভুক্তভোগী। এখনো কি নিষিদ্ধ হবে না অটো রিকশা! এখনো কি হবে না আপনাদের হুশ!

ওই গণমাধ্যম কর্মীর পোস্টে মন্তব্য হাবিব সোহাগ লিখেন পুলিশের বাড়তি ইনকাম সোর্স বন্ধ করা যাবে না। জহিরুল ইসলাম জনি লিখেছেন গাজীপুর-ময়মনসিংহ পুরো মহাসড়কেই অটোরিকশার ছড়াছড়ি। কেউ কেউ মন্তব্য করেন টাকা দিলে রাস্তা ক্লিয়ার, অটোরিকশা বেপরোয়া এদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি, অটোরিকশা জন্য রাস্তায় জ্যাম লেগেই থাকে, অটোরিকশা কি নিষিদ্ধ করা হোক।

সাংবাদিক সুমন গাজী তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেন শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অটোচালকের কৃতকর্মের যে ভয়াবহ চিত্র দেখলাম। শরীরটা কাঁপছে। একজন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে প্রায় এক কিলোমিটার ঝুলিয়ে নিলো। পুলিশ ভাইটা কান্না করছিলো। থামানোর অনুনয়-বিনয় করছিলো। অটোতে থাকা এক যাত্রীকেও দেখলাম থামানোর অনুরোধ জানাতে। অথচ বদমাইশটা গতি আরও বাড়াচ্ছিলো। যে কোনো মূহুর্তেই পুলিশ ভাইটার অপমৃত্যু হতে পারতো। ওই অটোচালক কতোটা বীভৎস চরিত্রের অধিকারী। সাক্ষাৎ জল্লাদ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী রাখছি।

পুলিশ কনস্টেবল কমল দাস বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বিকালে জৈনাবাজার এলাকায় তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। এসময় যাত্রী নিয়ে একটি অটোরিকশা আসলে সেটি থামিয়ে জব্দ করার জন্য চাবি নেওয়ার চেষ্টা করেন।

“কিন্তু চালক সঙ্গে সঙ্গে অটোরিকশা চালাতে শুরু করে। আমি অটোরিকশায় ওঠার চেষ্টা করি, কিন্তু চালক রিকশার গতি আরও বাড়িয়ে দেয়। এরপর আমি অটোরিকশায় ডান পাশের রড আকড়ে ধরে ঝুলে থাকি।”

এ অবস্থায় চালক তাকে চলন্ত অটোরিকশা থেকে মহাসড়কে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করে এই পুলিশ সদস্য বলেন, “চালককে থামার অনুরোধ করলেও গতি আরও বাড়িয়ে আমাকে মহাসড়কে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। রিকশায় থাকা যাত্রীরা অনুরোধ করলেও সে অটোরিকশা থামায়নি।

তিনি বলেন, “তার উদ্দেশ্য ছিল আমাকে চাপা দিয়ে হলেও অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যাবে। আমাকে ঝুলিয়ে কমপক্ষে এক কিলোমিটার নিয়ে যায় সে। কিন্তু আমি শেষ পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে আটক করতে সক্ষম হই।”

মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, কনস্টেবল কমল দাস অটোটা আটকানোর চেষ্টা করছিল। পরে অটো টান দিলে সে আবার অটোতে উঠে পড়লে অটো না থামিয়ে অটো ছেড়ে দেয়। পরে এক কিলোমিটার যাওয়ার পর জ্যাম থাকায় অটোটা আটকানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।