নড়াইল জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, তামাশার নির্বাচন করে সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারেরা। আপনাদের প্রতিরোধে পালিয়েছে সেই ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার, এখন সময় নতুন করে দেশ গড়ার। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল তারা। সেখান থেকে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চায় বিএনপি।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা নিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় যেতে হবে। মানুষের কথা বলার অধিকার, ভোটের অধিকার, রাজনীতির অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। যখনই দেশের ক্রান্তিকাল সৃষ্টি হয়েছে তখনই বিএনপি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থেকেছে। গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার বাংলাদেশকে ধ্বংস করে গেছে। এখন রাষ্ট্র পুনর্গঠন করার দায়িত্ব আমাদের। আগামী প্রজন্ম যেন শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারে সেজন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশে একছত্র অপশাসন কায়েম করেছিল বলে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ করে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একছত্র অপশাসন কায়েম করেছিল। জনগণের আস্থা অর্জনে আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘদিনের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দেশকে পুনর্গঠন করতে চাই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার খুনি আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র ধ্বংস করে গেছে। নির্বাচনের নামে দেশের জনগণের সঙ্গে তামাশা ও প্রহসন করেছে। বিরোধীদলের প্রতি দমন, পীড়ন, মিথ্যা মামলা ও নেতাকর্মীদের গুম, খুন করা হয়েছে। জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে কাউকে ভোট দিতে দেয়নি আওয়ামী লীগ।
এর আগে নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন-বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান। এ সময় অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক মাহবুব মুর্শেদ জাপল ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান পলাশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান আরো বলেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি অতীতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বেকারদের প্রবাসে কর্মসংস্থানের সুযোগ, এদেশে রফতানি আয়ের প্রধান উৎস গামের্ন্টসের সূচনা ও কৃষি তথা কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। বিএনপি সরকারের আমলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, নারী শিক্ষার উন্নয়ন, কলকারখানা স্থাপনপূর্বক বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু। এছাড়া বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি জুলফিকার আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী জর্জ, যুগ্মসম্পাদক আলী হাসান, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মুস্তাফিজুর রহমান আলেক, লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহদুজ্জামান বাটু, সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, কালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক স ম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু, কালিয়া পৌর বিএনপির সভাপতি এস এম সেলিম হোসেন, নড়াইল পৌর বিএনপির সভাপতি তেলায়েত হোসেন বাবু, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফসিয়ার রহমানসহ অনেকে।