Dhaka মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নীলক্ষেত অবরোধ করেছে অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে সর্বোচ্চ তিন কোর্স পর্যন্ত মানোন্নয়ন দিয়ে পরবর্তী বর্ষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে এই অবরোধ শুরু করেছেন তারা।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে গিয়ে তারা নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন। এসময় আজিমপুর-সায়েন্সল্যাব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছু গাড়ি রাস্তা পরিবর্তন করে পলাশী হয়ে নিউমার্কেট থানার সামনে দিয়ে চলাচল করে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অবরোধ ছেড়ে দিতে বললেও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলমান রয়েছে।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী হাফসা আক্তার বলেন, বিলম্বে ফল প্রকাশের কারণে আমরা পরবর্তী বর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি এবং ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছি। তাই, সামান্য জিপিএ বা সিজিপিএ’র শর্তের জন্য বিগত বর্ষের সব বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব না। এজন্য নির্ধারিত জিপিএ বা সিজিপিএ’র শর্ত শিথিল করে তিনটি বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন চাই।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ বলেন, ঢাবির শিক্ষার্থীরা যদি কোনো একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়, তাহলে ওরা পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে উঠতে পারে। তাহলে, আমাদের ক্ষেত্রে বৈষম্য কেন? আমরা এক বিষয়ে অকৃতকার্য হলেও পুনরায় ওই শিক্ষাবর্ষের সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়। কোনো ইমপ্রুভ পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ নেই। এর ফলে আমাদের শিক্ষাজীবন অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই আমারা চাই, এই বৈষম্য অতি দ্রুত সমাধান করা হোক।

সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ওসমান গনি বলেন, সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে সর্বোচ্চ তিন কোর্স পর্যন্ত মানোন্নয়ন দিয়ে পরবর্তী বর্ষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিতে হবে আমাদের। সেই দাবির ধারাবাহিকতায় আজ আমাদের এ অবরোধ কর্মসূচি চলছে।

তিনি আরও জানান, সাত কলেজের সমন্বয়ক ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে আমরা দেখা করেছি আমাদের দাবি নিয়ে। তিনি ১৯বার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি। এছাড়া আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গেও কয়েকবার কথা বলেছি। তারাও আমাদের বলে যাচ্ছে- সমন্বয় করছি, সমতা আনার চেষ্টা করছি, মিটিংয়ে বসবো এসব। কিন্তু কোনও সমাধান আমরা পাইনি।

অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাও দেশের সচেতন নাগরিক। আমারও চাই না দুর্ভোগ সৃষ্টি হোক। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা রাজপথে নেমেছি। আমাদের তিন মাসের রেজাল্ট ৯ মাসে দেওয়া হয়। যার ফলে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাই না পরবর্তী পরীক্ষার জন্য। এখানে দোষ কার?

দাবি না মানা পর্যন্ত তারা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও তিনি জানান।

এ দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির জের ধরে নীলক্ষেত মোড়ে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। পুলিশের বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ১৬ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে গত রোববার (২০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ গণঅনশন পালন করেন তারা।

আবহাওয়া

নীলক্ষেত অবরোধ করেছে অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৩:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে সর্বোচ্চ তিন কোর্স পর্যন্ত মানোন্নয়ন দিয়ে পরবর্তী বর্ষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে এই অবরোধ শুরু করেছেন তারা।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে গিয়ে তারা নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন। এসময় আজিমপুর-সায়েন্সল্যাব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছু গাড়ি রাস্তা পরিবর্তন করে পলাশী হয়ে নিউমার্কেট থানার সামনে দিয়ে চলাচল করে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অবরোধ ছেড়ে দিতে বললেও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলমান রয়েছে।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী হাফসা আক্তার বলেন, বিলম্বে ফল প্রকাশের কারণে আমরা পরবর্তী বর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি এবং ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছি। তাই, সামান্য জিপিএ বা সিজিপিএ’র শর্তের জন্য বিগত বর্ষের সব বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব না। এজন্য নির্ধারিত জিপিএ বা সিজিপিএ’র শর্ত শিথিল করে তিনটি বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন চাই।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ বলেন, ঢাবির শিক্ষার্থীরা যদি কোনো একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়, তাহলে ওরা পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে উঠতে পারে। তাহলে, আমাদের ক্ষেত্রে বৈষম্য কেন? আমরা এক বিষয়ে অকৃতকার্য হলেও পুনরায় ওই শিক্ষাবর্ষের সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়। কোনো ইমপ্রুভ পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ নেই। এর ফলে আমাদের শিক্ষাজীবন অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই আমারা চাই, এই বৈষম্য অতি দ্রুত সমাধান করা হোক।

সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ওসমান গনি বলেন, সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে সর্বোচ্চ তিন কোর্স পর্যন্ত মানোন্নয়ন দিয়ে পরবর্তী বর্ষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিতে হবে আমাদের। সেই দাবির ধারাবাহিকতায় আজ আমাদের এ অবরোধ কর্মসূচি চলছে।

তিনি আরও জানান, সাত কলেজের সমন্বয়ক ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে আমরা দেখা করেছি আমাদের দাবি নিয়ে। তিনি ১৯বার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি। এছাড়া আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গেও কয়েকবার কথা বলেছি। তারাও আমাদের বলে যাচ্ছে- সমন্বয় করছি, সমতা আনার চেষ্টা করছি, মিটিংয়ে বসবো এসব। কিন্তু কোনও সমাধান আমরা পাইনি।

অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাও দেশের সচেতন নাগরিক। আমারও চাই না দুর্ভোগ সৃষ্টি হোক। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা রাজপথে নেমেছি। আমাদের তিন মাসের রেজাল্ট ৯ মাসে দেওয়া হয়। যার ফলে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাই না পরবর্তী পরীক্ষার জন্য। এখানে দোষ কার?

দাবি না মানা পর্যন্ত তারা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও তিনি জানান।

এ দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির জের ধরে নীলক্ষেত মোড়ে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। পুলিশের বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ১৬ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে গত রোববার (২০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ গণঅনশন পালন করেন তারা।