Dhaka সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিপাহ ভাইরাসের আক্রমণ লকডাউনের পথে ভারতের কেরালা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরালায় নতুন মহামারির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যে ভাইরাসে আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিপা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাটা মাত্র পাঁচ হলেও তাদের সংস্পর্শে এসেছেন ৭০৬ জন। রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকজনের এই সংখ্যা ভাবিয়ে তুলেছে কর্তৃপক্ষকে।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, বুধবার যে স্বাস্থ্যকর্মী নিপায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাকে কোঝিকোড়ের একটি হাসপাতালে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নিপায় আক্রান্ত হওয়া রোগীদের সংস্পর্শে আসা ৭০৬ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। ৭৭ জনকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মৃদু উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১৩ জন। তাদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যারা ইতিমধ্যেই নিপায় আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।

নিপার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কোঝিকোড়ে উৎসব, অনুষ্ঠান এবং জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বুধবারই বেশ কয়েকটি গ্রামকে চিহ্নিত করে কনটেনমেন্ট জড়োন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোঝিকোড়ের ৫০টির বেশি ওয়ার্ডকে ঘোষণা করা হয়েছে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে। এই ওয়ার্ডগুলির মানুষজনকে অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার জন্য আবদেন জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখে স্কুল, কলেজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে এখনই লকডাউনের আতঙ্কে ভুগছেন বহু মানুষ।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আরও বেশি লোকের পরীক্ষা করা হতে পারে…আইসোলেশন সুবিধা প্রদান করা হবে।’ তিনি জনগণকে আগামী ১১০ দিনের জন্য কোঝিকোড় জেলায় জনসমাগম এড়াতে বলেছেন।

২০১৮ সালে কেরালায় সর্বপ্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। এবার নিয়ে রাজ্যটিতে চারবার এ দুর্লভ ও মস্তিষ্ক ধ্বংসকারী ভাইরাসটি শনাক্ত হলো। ২০১৯ ও ২০২১ সালেও নিপাহ ভাইরাসে কেরালায় দুই ব্যক্তি মারা গিয়েছিল।

বন ধ্বংস ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ভারতের রাজ্যটি বাদুড় থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য অনুকূল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

আক্রান্ত শূকর, বাদুড় বা মানুষের সরাসরি সংস্পর্শ থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। বিশেষ করে আক্রান্ত পশু-পাখি বা মানুষের লালা বা তরল থেকে এটা সহজে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর আসে। বমি বমি ভাব হয়।

মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ১৯৯৯ সালে সর্বপ্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। আক্রান্ত শূকরের সংস্পর্শ থেকে তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিপাহ ভাইরাসের আক্রমণ লকডাউনের পথে ভারতের কেরালা!

প্রকাশের সময় : ০২:২৪:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরালায় নতুন মহামারির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যে ভাইরাসে আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিপা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাটা মাত্র পাঁচ হলেও তাদের সংস্পর্শে এসেছেন ৭০৬ জন। রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকজনের এই সংখ্যা ভাবিয়ে তুলেছে কর্তৃপক্ষকে।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, বুধবার যে স্বাস্থ্যকর্মী নিপায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাকে কোঝিকোড়ের একটি হাসপাতালে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নিপায় আক্রান্ত হওয়া রোগীদের সংস্পর্শে আসা ৭০৬ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। ৭৭ জনকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মৃদু উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১৩ জন। তাদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যারা ইতিমধ্যেই নিপায় আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।

নিপার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কোঝিকোড়ে উৎসব, অনুষ্ঠান এবং জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বুধবারই বেশ কয়েকটি গ্রামকে চিহ্নিত করে কনটেনমেন্ট জড়োন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোঝিকোড়ের ৫০টির বেশি ওয়ার্ডকে ঘোষণা করা হয়েছে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে। এই ওয়ার্ডগুলির মানুষজনকে অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার জন্য আবদেন জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখে স্কুল, কলেজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে এখনই লকডাউনের আতঙ্কে ভুগছেন বহু মানুষ।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আরও বেশি লোকের পরীক্ষা করা হতে পারে…আইসোলেশন সুবিধা প্রদান করা হবে।’ তিনি জনগণকে আগামী ১১০ দিনের জন্য কোঝিকোড় জেলায় জনসমাগম এড়াতে বলেছেন।

২০১৮ সালে কেরালায় সর্বপ্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। এবার নিয়ে রাজ্যটিতে চারবার এ দুর্লভ ও মস্তিষ্ক ধ্বংসকারী ভাইরাসটি শনাক্ত হলো। ২০১৯ ও ২০২১ সালেও নিপাহ ভাইরাসে কেরালায় দুই ব্যক্তি মারা গিয়েছিল।

বন ধ্বংস ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ভারতের রাজ্যটি বাদুড় থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য অনুকূল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

আক্রান্ত শূকর, বাদুড় বা মানুষের সরাসরি সংস্পর্শ থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। বিশেষ করে আক্রান্ত পশু-পাখি বা মানুষের লালা বা তরল থেকে এটা সহজে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর আসে। বমি বমি ভাব হয়।

মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ১৯৯৯ সালে সর্বপ্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। আক্রান্ত শূকরের সংস্পর্শ থেকে তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল।