Dhaka শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে ৪ শিশুর শরীরে ‘বার্ড ফ্লু’ শনাক্ত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৮০ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু। দেশে চার শিশুর শরীরে এ রোগের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের বয়স এক থেকে আট বছর। অবশ্য, বর্তমানে চিকিৎসা নিয়ে তারা সবাই সুস্থ আছে।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আইইডিসিআর-এর পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে প্রতিরোধ জোরদারে গবেষণা কৌশল প্রণয়ন করেছে সরকার। এ বিষয়ে গত বুধবার আইসিডিডিআর,বি, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক করেছে, যেখানে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশের জন্য জাতীয় গবেষণা কৌশল চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সভায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকির কারণ চিহ্নিতকরণ, ভাইরাস হোস্ট সম্পর্ক, প্রাণী-মানব সংযোগ এবং টিকার কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য আরও শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

সভায় বলা হয়, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা কেবল নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের সমস্যা নয়। ২০২৫ সালে এটি আবারও মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে এবং ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মতো মহাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আটটি দেশের মোট ৩০ জনের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মানুষের মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জন শনাক্ত হয়েছে কম্বোডিয়ায় এবং বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে চারজন।

উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশে ২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১২ জন মানুষের মধ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হলেও ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসেই শনাক্ত হয়েছে চার জন। দেশে শনাক্ত হওয়া মোট ১২ জনের মধ্যে সাত জনই ছিল পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। ২০২৫ সালে শনাক্ত হওয়া চার জনই ছিল এক থেকে আট বছর বয়সী শিশু, যা শিশুদের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির প্রতি নির্দেশ করে।

আইসিডিডিআর,বির গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঢাকা ও গাজীপুরের লাইভ বার্ড মার্কেট বা জীবিত হাঁস-মুরগির বাজার থেকে সংগৃহীত বাতাসের নমুনার ৯১% এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ। এসব বাজারকে মানুষের মাঝে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ সালে এসব বাজারে পাওয়া মৃত মুরগির প্রায় অর্ধেকই এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সাবটাইপ এইচফাইভে আক্রান্ত ছিল।

গবেষণার অংশ হিসেবে করা একটি সিস্টেমেটিক রিভিউতে দেখা যায়, পোলট্রি খাতে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়ার প্রধান ঝুঁকির কারণ হচ্ছে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বড় ধরনের ঘাটতি। এর মধ্যে রয়েছে অসুস্থ পাখিকে আলাদা না রাখা, বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা এবং পোলট্রি রাখার জায়গায় অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশে ৪ শিশুর শরীরে ‘বার্ড ফ্লু’ শনাক্ত

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু। দেশে চার শিশুর শরীরে এ রোগের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের বয়স এক থেকে আট বছর। অবশ্য, বর্তমানে চিকিৎসা নিয়ে তারা সবাই সুস্থ আছে।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আইইডিসিআর-এর পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে প্রতিরোধ জোরদারে গবেষণা কৌশল প্রণয়ন করেছে সরকার। এ বিষয়ে গত বুধবার আইসিডিডিআর,বি, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক করেছে, যেখানে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশের জন্য জাতীয় গবেষণা কৌশল চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সভায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকির কারণ চিহ্নিতকরণ, ভাইরাস হোস্ট সম্পর্ক, প্রাণী-মানব সংযোগ এবং টিকার কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য আরও শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

সভায় বলা হয়, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা কেবল নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের সমস্যা নয়। ২০২৫ সালে এটি আবারও মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে এবং ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মতো মহাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আটটি দেশের মোট ৩০ জনের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মানুষের মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জন শনাক্ত হয়েছে কম্বোডিয়ায় এবং বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে চারজন।

উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশে ২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১২ জন মানুষের মধ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হলেও ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসেই শনাক্ত হয়েছে চার জন। দেশে শনাক্ত হওয়া মোট ১২ জনের মধ্যে সাত জনই ছিল পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। ২০২৫ সালে শনাক্ত হওয়া চার জনই ছিল এক থেকে আট বছর বয়সী শিশু, যা শিশুদের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির প্রতি নির্দেশ করে।

আইসিডিডিআর,বির গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঢাকা ও গাজীপুরের লাইভ বার্ড মার্কেট বা জীবিত হাঁস-মুরগির বাজার থেকে সংগৃহীত বাতাসের নমুনার ৯১% এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ। এসব বাজারকে মানুষের মাঝে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ সালে এসব বাজারে পাওয়া মৃত মুরগির প্রায় অর্ধেকই এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সাবটাইপ এইচফাইভে আক্রান্ত ছিল।

গবেষণার অংশ হিসেবে করা একটি সিস্টেমেটিক রিভিউতে দেখা যায়, পোলট্রি খাতে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়ার প্রধান ঝুঁকির কারণ হচ্ছে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বড় ধরনের ঘাটতি। এর মধ্যে রয়েছে অসুস্থ পাখিকে আলাদা না রাখা, বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা এবং পোলট্রি রাখার জায়গায় অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি।