মিয়ানমার থেকে গোলাগুলি ও গোলা ছোড়া অব্যাহত রয়েছে। এতে বান্দবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে বসবাসকারীরা এখনো আতংকে আছে। পশ্চিমকুল, ক্যাম্পপাড়া, বাজারপাড়া, কোনারপাড়া, খিজারীঘোনা, ভূমিহীন পাড়াসহ তুমব্রুর অন্তত ১৫ গ্রামে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
মঙ্গলবার (২০শে সেপ্টেম্বর) ভোরে মুহুর্মুহু গুলি, থেমে থেমে ছোড়া হচ্ছে আর্টিলারি, মর্টারের গোলা। দুই মাস ধরে চলা মিয়ানমারের গোলাগুলিতে ঘুমধুমের তুমব্র“ এলাকার হাজারো মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সীমান্ত এলাকার চাষাবাদ প্রায় বন্ধ। খুব প্রয়োজন না হলে ঘর থেকেও কেউ বের হচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে ওই সীমান্তের প্রায় সবগুলো বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এদিকে, অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছেড়েছেন তুমব্রু। ওই এলাকার ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
গত দু’মাস ধরে মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এরমধ্যে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি মর্টার শেল এসে পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। গত শুক্রবার তুমব্রু সীমান্তে মর্টার শেল বিস্ফোরণে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার পর সীমান্তের বাসিন্দারা আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।
এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে তাতে তেমন কোনো কাজ হয়নি, সীমান্তে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে, গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের দূতাবাস প্রধানদের অবহিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই আলোচনায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আসিয়ান। এ কারণে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং সামগ্রিকভাবে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সমস্যার বিষয়টি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বড় আকারে তুলে ধরতে পারে আসিয়ানের কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র। আজ চীন ও জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের কথা রয়েছে।