Dhaka শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশের অর্থনীতি: আইএমএফ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আইএমএফের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধির ধীরগতি এই তিনটি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এসব কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এবং টাকার মানের ওপর প্রভাব পড়বে।

গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসে আইএমএফ প্রতিনিধিদল। আজ রোববার ( ৭ মে ) সফর শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন আইএমএফের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ।

আইএমএফ বলছে, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

দ্বিতীয় দফায় দুই সপ্তাহ সফর শেষে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অভিমত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

বিবৃতিতে আইএমএফের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান বলেন, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে, যা প্রশংসনীয়।

তবে মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক আর্থিক খাতের অস্থির অবস্থা ও প্রধান বাণিজ্যিক মিত্র রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও টাকার ওপর চাপ বেড়েছে, যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

সফরে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থিক খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছেন জানিয়ে বিবৃতিতে রাহুল আনন্দ বলেন, আইএমএফের ঋণের অর্থে নেওয়া প্রকল্পগুলোর মূল প্রতিশ্রুতি পূরণের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। সব বিষয় পর্যালোচনা করে বছর শেষে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

সফরকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সরকারি ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইএমএফের প্রতিনিধিরা।

খোলাখুলি আলোচনা ও আন্তরিক আপ্যায়নের জন্য বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদও জানায় আইএমএফের প্রতিনিধি দল।

বাংলাদেশের জনগণের সমর্থনে আইএমএফের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে বলে জানান মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দ।
এবার সফরে আসা আইএমএফের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। এছাড়া, প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, দাতা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

সফরে আন্তরিক আলোচনা এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে আইএমএফ। বাংলাদেশ ও এ দেশের জনগণের সমর্থনে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।

গত বছরের ২৪ জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। এতে ঋণের পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে ১২ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।

এরপর চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। এই ঋণের প্রথম কিস্তি ইতিমধ্যে ছাড় করা হয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইএমএফের কর্মসূচি চালু থাকার কথা রয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

তিন চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশের অর্থনীতি: আইএমএফ

প্রকাশের সময় : ০৭:২৪:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আইএমএফের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধির ধীরগতি এই তিনটি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এসব কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এবং টাকার মানের ওপর প্রভাব পড়বে।

গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসে আইএমএফ প্রতিনিধিদল। আজ রোববার ( ৭ মে ) সফর শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন আইএমএফের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ।

আইএমএফ বলছে, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

দ্বিতীয় দফায় দুই সপ্তাহ সফর শেষে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অভিমত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

বিবৃতিতে আইএমএফের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান বলেন, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে, যা প্রশংসনীয়।

তবে মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক আর্থিক খাতের অস্থির অবস্থা ও প্রধান বাণিজ্যিক মিত্র রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও টাকার ওপর চাপ বেড়েছে, যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

সফরে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থিক খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছেন জানিয়ে বিবৃতিতে রাহুল আনন্দ বলেন, আইএমএফের ঋণের অর্থে নেওয়া প্রকল্পগুলোর মূল প্রতিশ্রুতি পূরণের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। সব বিষয় পর্যালোচনা করে বছর শেষে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

সফরকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সরকারি ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইএমএফের প্রতিনিধিরা।

খোলাখুলি আলোচনা ও আন্তরিক আপ্যায়নের জন্য বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদও জানায় আইএমএফের প্রতিনিধি দল।

বাংলাদেশের জনগণের সমর্থনে আইএমএফের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে বলে জানান মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দ।
এবার সফরে আসা আইএমএফের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। এছাড়া, প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, দাতা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

সফরে আন্তরিক আলোচনা এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে আইএমএফ। বাংলাদেশ ও এ দেশের জনগণের সমর্থনে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।

গত বছরের ২৪ জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। এতে ঋণের পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে ১২ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।

এরপর চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। এই ঋণের প্রথম কিস্তি ইতিমধ্যে ছাড় করা হয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইএমএফের কর্মসূচি চালু থাকার কথা রয়েছে।